বিশ্বকাপ বাছাই খেলতে ইউরোপ থেকে পাড়ি দিতে হয়েছিল লাতিন আমেরিকায়। ব্রাজিলের জার্সিতে দুর্দান্ত সময় কাটিয়ে আবারো ফিরেছেন প্যারিসে। তবে দীর্ঘ ভ্রমণে ক্লান্ত নেইমারকে মাঠে নামিয়ে ঝুঁকি নিতে চাননি প্যারিস সেন্ত জার্মেই কোচ টমাস টুখেল। তবে ব্রাজিল ফরোয়ার্ড না থাকলে কী, পিএসজির কিলিয়ান এমবাপ্পে আছেন না! ফরাসি ফরোয়ার্ডের জোড়া গোলে ফরাসি লিগ ওয়ানে বড় জয় পেয়েছে চ্যাম্পিয়নরা।

শুক্রবার রাতে ফ্রেঞ্চ লিগ ওয়ানের ম্যাচ নিমসের বিপক্ষে ৪-০ গোলে জিতেছে পিএসজি। দলের নিয়মিত খেলোয়াড়দের অনেকে না থাকলেও, তরুণ তারকা কিলিয়ান এমবাপ্পের জোড়া গোলে এসেছে এই সহজ জয়। এছাড়া অন্য দুই গোল করেছেন আলেসান্দ্রো ফ্লোরেঞ্জি ও পাওলো সারাবিয়া।

নেইমার ছাড়াও ম্যাচটিতে ছিলেন না আনহেল ডি মারিয়া ও মাউরো ইকার্দি। পিএসজির কোচের পরিষ্কার হিসাব, ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের বিপক্ষে চ্যাম্পিয়নস লিগ ম্যাচের আগে তাদের বিশ্রামে রেখে সতেজভাবে পাওয়া। দলের গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়দের অনুপস্থিতিতে পিএসজির জার্সিতে অভিষেক হয়ে গেছে বার্সেলোনা থেকে পার্ক ডু প্রিন্সেসে আসা রাফিনিয়া আলকান্তারার।

প্রতিপক্ষের মাঠে খেলতে গিয়ে পুরো ম্যাচটা নিজেদেরই করে নিয়েছিল পিএসজি। ম্যাচশেষে স্কোরলাইন ৪-০ হলেও, গোলের সংখ্যা হতে পারতো আরো অনেক বেশি। পুরো ম্যাচে অন্তত ৩০ বার আক্রমণে উঠেছে পিএসজি। যেখানে ঠিক লক্ষ্য বরাবর তারা শট নিয়েছে ১১ বার। কিন্তু এর মধ্যে গোল পেয়েছে শুধু চারবার।

অবশ্য ম্যাচের শুরুতেই পিএসজির কাজ খানিকটা সহজ হয়ে যায় লাল কার্ডের কল্যাণে। ম্যাচের ১২ মিনিটের সময় পিএসজি মিডফিল্ডার রাফিনিয়াকে গুরুতর ফাউল করে সরাসরি লালকার্ড দেখেন নিমস ডিফেন্ডার লইক লান্দ্রে। ফলে ম্যাচের বাকি সময়টা একজন কম নিয়েই খেলতে হয়ে নিমসকে।

সেই সুযোগটাও বারবার কাজে লাগিয়েছেন পিএসজির ফরোয়ার্ড ভাগের খেলোয়াড়রা। একটু পরপরই তারা হানা দিয়েছেন প্রতিপক্ষের রক্ষণে। তবু গোলের দেখা পেতে অপেক্ষা করতে হয়েছে ৩২ মিনিট পর্যন্ত। রাফিনিয়ার এগিয়ে দেয়া বল ধরে বাম পায়ের কোনাকুনি শটে ম্যাচের প্রথম গোলটি করেন এমবাপ্পে।

এরপর শুধু চলতে থাকে পিএসজির আক্রমণ আর আক্রমণ; যার সবগুলোই ছিলো নিষ্ফলা। একজন কম নিয়ে খেলেও পিএসজিকে আটকে রাখার কাজটা দুর্দান্ত করছিল নিমস। গোলরক্ষক বাতিস্ত রেনেত ঠেকিয়ে দেন একের পর এক প্রচেষ্টা, সঙ্গে পান ভাগ্যের ছোঁয়াও। কিন্তু শেষের ১৫ মিনিটে আর পারেননি দলকে বাঁচাতে।

ম্যাচের ৭৭ মিনিটের সময় দলের দ্বিতীয় গোলটি করেন ফ্লোরেঞ্জি, এর মিনিট ছয়েক পর আবার স্কোরশিটে নাম তোলেন এমবাপ্পে। আর ৮৮ মিনিটের মাথায় নিমসের জালে বল জড়িয়ে হালিপূরণ করেন সারাবিয়া। সহজ জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে পিএসজি।

এ জয়ের পর ৭ ম্যাচে ১৫ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের শীর্ষে অবস্থান করছে লিগ ওয়ানের হ্যাটট্রিক চ্যাম্পিয়নরা। দুই নম্বরে থাকা রেনের সংগ্রহ ৭ ম্যাচে ১৩ পয়েন্ট। পিএসজির কাছে হালি হজম করা নিমসের সংগ্রহ ৭ ম্যাচে ৮ পয়েন্ট।