চাকরি মানেই একসময় অসবরে যাওয়া। তাঁরও সময় আসে অবসরের। তবে চাকরির শেষ দিনে পেলেন তিনি বিরল সম্মান; বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর লেফটেন্যান্ট কর্নেল থেকে কর্নেল হলেন। অথচ এই পদোন্নতি উদযাপনের মতো অবস্থায় নেই তিনি। সাত বছর ধরে গভীর কোমায় আচ্ছন্ন। তাঁর পরিবার ‘প্রত্যাশার চেয়ে অনেক বড় এ অর্জনে’ যারপরনাই আনন্দিত, গর্বিত।
সেনাবাহিনীর ইতিহাসে প্রথমবারের মতো এমন সম্মানসূচক পদোন্নতি দেওয়া হলো গত ১২ অক্টোবর। বিরল এ সম্মান পেলেন দেওয়ান মোহাম্মদ তাছাওয়ার রাজা। তিনি মরমি কবি হাছন রাজার নাতি। ২০১৩ সালের ১১ মার্চ হার্ট অ্যাটাকের পর কোমায় চলে যান তিনি।
ঢাকা সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) পরিবারের সদস্যদের উপস্থিতিতে তাছাওয়ার রাজাকে কর্নেল পদমর্যাদায় ভূষিত করেন সেনাপ্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ।
সেনাবাহিনীর অনন্য এ মানবিক দৃষ্টান্তে আপ্লুত তাছাওয়ার রাজার স্ত্রী মোসলেহা মনিরা রাজা। তিনি সেনাপ্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, ‘এ সম্মানে আমরা গর্বিত। বিদায়বেলায় প্রত্যাশার চেয়ে এটি অনেক বড় এক অর্জন। তাঁর (তাছাওয়ার রাজা) এ বিদায় আমাদের জন্য সুখকর।’ একদিন তাঁর স্বামী সুস্থ হয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরবেন বলে আশা করেন তিনি।
পরিবার ও সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ১৯৮৯ সালের ২৩ জুন দেওয়ান মোহাম্মদ তাছাওয়ার রাজা সেনাবাহিনীতে কমিশন লাভ করেন। ১৯৯৬ সালে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনের অধীনে ইরাক-কুয়েত ও ২০০৭ সালে সুদানে শান্তিরক্ষা মিশনে যান।
চাকরি জীবনের ব্যস্ততার মাঝেও লেখালেখি করেন তাছাওয়ার রাজা। হাছন রাজার জীবন ও কর্ম নিয়ে ‘হাছন রাজা সমগ্র’, মেজর জেনারেল এম এ জি ওসমানীকে নিয়ে ‘ও জেনারেল মাই জেনারেল’, ‘সেনাবাহিনীর ইতিহাস’সহ কয়েকটি বই লিখেছেন তিনি।
সিএমএইচের আইসিইউ প্রধান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মাসুদ মজুমদার জানান, তাছাওয়ার রাজার এ অসুস্থতাকে চিকিৎসার ভাষায় বলা হয় হাইপোস্কিক স্মিমিক ইনজুরি টু ব্রেইন ইফেক্টস।