লিভার বা যকৃত আমাদের শরীরের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি অঙ্গ। তবে আমরা সুস্থ থাকতে এই অঙ্গের খেয়াল কখনোই রাখি না। উল্টো বেশি চিন্তিত হয়ে পড়ি আমাদের ত্বক, চুল ইত্যাদি নিয়ে। কিন্তু শরীরের অন্যান্য অঙ্গের মতোই লিভারের গুরুত্ব আমাদের শরীরের জন্য কোনো অংশেই কম নয়। কারণ এটি মানুষের শরীরে যতো ক্ষতিকারক টক্সিন জমে, তা বের করে দিয়ে শরীরকে সুস্থ ও সবল রাখতে সাহায্য করে। তাই নিজেদের সুস্থ রাখতে লিভারের যত্ন নেওয়া খুবই প্রয়োজন। জেনে নিন লিভারকে ভালো রাখতে সাহায্য করে কোন কোন খাবার।
রসুন
লিভার থেকে এক ধরনের এনজাইম উৎপাদনে সাহায্য করে রসুন, যা শরীর থেকে টক্সিনকে সহজে বের করে দেয়। এ ছাড়াও রসুনে থাকে উচ্চ মানের অ্যান্টিবায়োটিক, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং অ্যান্টিফাঙ্গাল জাতীয় উপাদান, যা লিভারকে সুস্থ রাখার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার
লিভারকে সুস্থ রাখতে ডায়েটে ফাইবার যুক্ত খাবার অন্তর্ভুক্ত করা প্রয়োজন। ফাইবার যকৃতে জমা হওয়া চিনির স্তরকে কমাতে সাহায্য করে। ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার যেমন, বার্লি, ওটমিল, বিভিন্ন শাকসবজি, পালংশাক, ব্রোকোলি, লেটুস, বিটরুট, গাজর ইত্যাদি খাবার শরীর থেকে ক্ষতিকারক টক্সিন বের করতে সহায়তা করতে পারে।
লেবু জাতীয় ফল
কমলালেবু, পাতিলেবু বা মুসম্বি ফলের মধ্যে এনজাইম থাকে, যা লিভার থেকে টক্সিন বের করতে সাহায্য করে। এগুলোকে জুস হিসেবে বা ফ্রুট স্যালাড বানিয়েও খাওয়া যেতে পারে।
আঙ্গুর ও আপেল
আপেলের মধ্যে থাকে পেকটিন নামক একটি উপাদান, যা শরীর থেকে টক্সিন দূর করে এবং হজম ক্ষমতাকে উন্নত করতে সাহায্য করে। আবার একটি গবেষণায় দেখা গেছে, আঙ্গুরের রস এবং আঙ্গুর বীজ অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ। তাই এটি প্রদাহ হ্রাস এবং লিভারের ক্ষতি রোধ করে লিভারকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে।
গ্রিন টি
বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে যে, গ্রিন টি আমাদের শরীরের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এটি প্রতিদিন পান করলে অনেকগুলো স্বাস্থ্য সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায় সহজেই। তবে গ্রিন টি লিভার থেকে ফ্যাট নির্মূল করতেও সহায়তা করে। এটি অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে সমৃদ্ধ, যা লিভারে জমে থাকা ফ্যাট কমাতে সাহায্য করে এবং লিভারের কার্যকারিতাও উন্নত করে।
আখরোট
আখরোট ওমেগা -৩ ফ্যাটি অ্যাসিড এবং অ্যামিনো অ্যাসিড সমৃদ্ধ, যা লিভারকে টক্সসিন মুক্ত করে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে।
হলুদ
যকৃতের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে হলুদের জুড়ি মেলা ভার। তবে এ ক্ষেত্রে গুঁড়ো হলুদের থেকে কাঁচা হলুদ বেশি উপকারী। হলুদে থাকা কারকুমিন টক্সিনগুলো বের করতে সহায়তা করে। এটি লিভারের কোষগুলোকে ভালো রাখতে এবং লিভারের কোষগুলোকে পুনরায় জন্মাতে সাহায্য করে। তাই প্রতিদিন সকালে খালি পেটে এক টুকরো কাঁচা হলুদ চিবিয়ে খান।
জলপাই তেল
অত্যধিক চর্বি যুক্ত খাবার খাওয়া লিভারের পক্ষে অত্যন্ত ক্ষতিকারক। তবে কিছু চর্বি রয়েছে যা শরীরের জন্য উপকারী। একটি সমীক্ষা থেকে জানা গেছে, জলপাইয়ের তেল অক্সিডেটিভ স্ট্রেস হ্রাস করতে এবং লিভারের কার্যকারিতাকে উন্নত করতে সহায়তা করে। তাই খাবারের তালিকায় এটি যুক্ত করা প্রয়োজন।
সূত্র: বোল্ড স্কাই।