রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুত কেন্দ্রে আবাসন প্রকল্পে প্রায় সাড়ে ৩৬ কোটি টাকার দুর্নীতির সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে তা জানতে চেয়েছে  হাইকোর্ট। এ জন্য সরকারকে ২০ অক্টোবর পর্যন্ত সময় দিয়েছেন আদালত। আগামী ২০ অক্টোবর পরবর্তী আদেশের জন্য দিন ধার্য করা হয়েছে। রাষ্ট্রপক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলমের সময় আবেদনে এ আদেশ দেন আদালত।

বিচারপতি তারিক উল হাকিম ও বিচারপতি মো. সোহরাওয়ার্দীর হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ রবিবার এ আদেশ দেন। আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে আইনজীবী ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আমাতুল করিম। রিট আবেদনকারী ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন নিজেই শুনানি করেন।

হাজার পৃষ্ঠার ওই প্রতিবেদন বিদ্যুৎ প্রকল্প এলাকায় কর্মকর্তা-কর্মচারীদের থাকার জন্য বিছানা, বালিশ ও আসবাবপত্র অস্বাভাবিক মূল্যে ক্রয় দেখানোর অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে।

হিসাবে মালামালের প্রকৃত মূল্যের চেয়ে ৩৬ কোটি ৪০ লাখ টাকা বেশি দেখানো হয়েছে। এ টাকা সরকারের কোষাগারে ফিরিয়ে নেয়ার সুপারিশ করেছে তদন্ত কমিটি।

গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ে গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ৪টি ভবনে আসবাবপত্র ও ইলেকট্রনিক সরঞ্জাম সরবরাহ কাজের চুক্তি মূল্য ১১৩ কোটি ৬২ লাখ ৯৪ হাজার টাকা। অথচ মালামাল সরবরাহ করা হয়েছে ৭৭ কোটি ২২ লাখ ৮৫ হাজার টাকা। অর্থাৎ চুক্তি মূল্য সরবরাহ করা মালামালের প্রকৃত মৃল্যের চেয়ে ৩৬ কোটি ৪০ লাখ ৯ হাজার টাকা বেশি।

এই বাড়তি পরিশোধিত অর্থ সরকারি কোষাগারে ফেরত আনার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার সুপারিশ করা হয়েছে প্রতিবেদনে। বালিশকাণ্ডের মূলহোতা প্রকৌশলী মাসুদ আলমসহ প্রায় ৫০ জনের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণেরও সুপারিশ করা হয়েছে।

গত ১৯ মে পাবনার রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্প এলাকায় কর্মকর্তা কর্মচারীদের থাকার জন্য গ্রীনসিটি আবাসন পল্লীর বিছানা, বালিশ, আসবাবপত্র অস্বাভাবিক মূল্যে কেনা ও তা ভবনে তোলার ঘটনায় বিচার বিভাগীয় তদন্ত চেয়ে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়।

সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন জনস্বার্থে এই রিট আবেদনটি করেন। রিট শুনানির এক পর্যায়ে হাইকোর্ট রুল জারি করেন এবং একই সঙ্গে এ ঘটনায় গঠিত গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের প্রতিবেদন আদালতে দাখিলের নির্দেশ দেন।