আজ মঙ্গলবার জাতীয় পাবলিক সার্ভিস দিবস। প্রতিবছর ২৩ জুলাই সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও সংস্থা দিবসটি পালন করে। এবার বাংলাদেশে চতুর্থবারের মতো দিবসটি পালিত হচ্ছে। এ উপলক্ষে আজ জাতীয় পর্যায়ে ১১ ব্যক্তি, জেলা পর্যায়ে ৩৪ ব্যক্তি এবং উভয়পর্যায়ে একটি করে প্রতিষ্ঠানকে এ বছরের জনপ্রশাসন পদক দেওয়া হচ্ছে।

বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলনকেন্দ্রে বেলা ৩টায় রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ জনসেবায় আস্থা অর্জনকারী এসব কমকর্তা ও প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধির হাতে পদক তুলে দেবেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন দোদুল। বিশেষ অতিথি থাকবেন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি আশিকুর রহমান চৌধুরী ও জনপ্রশাসন সচিব ফয়েজ আহাম্মদ।

উল্লেখ্য, ২০১৬ সাল থেকে সরকার এ পদক চালু করেছে। এদিকে আজ পাবলিক সার্ভিস দিবস উপলক্ষে গতকাল বাণী দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

রাষ্ট্রপতি তার বাণীতে বলেন, জনগণের দোরগোড়ায় স্বল্প ব্যয় ও অল্প সময়ে সরকারি সেবা পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে নতুন নতুন উদ্ভাবনী ধারণাকে কাজে লাগিয়ে সেবা সহজীকরণের স্বীকৃতিস্বরূপ ‘জনপ্রশাসন পদক-২০১৯’ প্রদান একটি প্রশংসনীয় উদ্যোগ। এ পদক প্রদান প্রজাতন্ত্রের কর্মে নিয়োজিত সব পর্যায়ের কর্মচারীদের জনগণকে উন্নত সেবা প্রদানে আরও উৎসাহিত করবে বলে আমার বিশ্বাস।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার বাণীতে বলেন, একটি দক্ষ, প্রযুক্তিনির্ভর ও সময়োপযোগী কার্যকর জনপ্রশাসন গড়ে তোলার মাধ্যমেই অর্জন করা সম্ভব টেকসই উন্নয়নের অভীষ্ট লক্ষ্যমাত্রা। সরকারের নির্বাহী অঙ্গের অংশ হিসেবে পাবলিক সার্ভিসে নিয়োজিত কর্মচারীরা জনগণের সেবা ও কল্যাণে তথা দেশের অগ্রযাত্রায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।

এ বছর যেসব ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান জনপ্রশাসন পদক পাচ্ছে- সাধারণ শ্রেণি (জাতীয়) : সাধারণ ক্ষেত্রে ব্যক্তিগত শ্রেণিতে জনপ্রশাসন পদক-২০১৯ পাচ্ছেন বগুড়ার শেরপুরের ভেটেরিনারি সার্জন ডা. রায়হান। একই শ্রেণিতে দলগত পদক পাচ্ছেন নাটোরের সাবেক ডিসি শাহিনা আক্তার, বর্তমান ডিসি শাহরিয়াজসহ গোলাম রাব্বী, ড. মো. রাজ্জাকুল ইসলাম, হাসিনা মমতাজ ও নাজমুল আলম। এ ছাড়া সাধারণ ক্ষেত্রে প্রাতিষ্ঠানিক শ্রেণিতে এবারের জনপ্রশাসন পদক পাচ্ছে কক্সবাজার ডিসি অফিস।

কারিগরি শ্রেণি (জাতীয়) : কারিগরি শ্রেণিতে ব্যক্তিগত ক্ষেত্রে পদক পাচ্ছেন ভোলার তমুজউদ্দিন উপজেলার প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. পলাশ সরকার। কারিগরি ক্ষেত্রে দলগত শ্রেণিতে জনপ্রশাসন পদক ২০১৯ পাচ্ছেন রাজশাহীর বিভাগীয় কমিশনার নুর-উর-রহমান, রাজশাহীর এডিসি (রাজস্ব) আবু হায়াত মো. রহমতুল্লাহ, পবার এসিল্যান্ড নূরুল হাই মোহাম্মদ আনাছ।

সাধারণ শ্রেণি (জেলা) : জেলাপর্যায়ে সাধারণ ক্ষেত্রে ব্যক্তিগত শ্রেণিতে পুরস্কার পাচ্ছেন নরসিংদীর ডিসি সৈয়দা ফারহানা কাওনাইন। সাধারণ ক্ষেত্রে দলগত শ্রেণিতে পুরস্কার পাচ্ছে চারটি দল। চিড়িয়াখানার উন্নয়নের কারণে পুরস্কার পাচ্ছেন চট্টগ্রামের ডিসি ইলিয়াস হোসেন, সাবেক এডিসি মমিনুর রশিদ, হাটহাজারীর ইউএনও রুহুল আমীন, সাবেক এসি তৌহিদুল ইসলাম, চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানার ডেপুটি কিউরেটর শাহাদাত হোসেন শুভ।

দ্বিতীয় দল হিসেবে পুরস্কার পাচ্ছেন মৌলভীবাজারের ডিসি তোফায়েল ইসলাম, সাবেক এডিসি আশরাফুর রহমান, কলগঞ্জের সাবেক ইউএনও মোহাম্মদ মাহমুদুল হক, বর্তমান ইউএনও আশেকুল হক। খুলনা বিভাগে পদক পাচ্ছেন বিভাগীয় কমিশনার লোকমান হোসেন মিয়া, ডিসি হেলাল হোসেন, রূপসার সাবেক ইউএনও ইলিয়াছুর রহমান।

মুন্সীগঞ্জ জেলার সাবেক ডিসি সায়লা ফারজানা, সাবেক এডিসি হারুন অর রশিদ, সদর উপজেলার সাবেক ইউএনও সুরাইয়া জাহান, সাবেক এসিল্যান্ড হ্যাপি দাস, মুন্সীগঞ্জ পৌরসভার সহকারী প্রকৌশলী মোহাম্মদ আলীও পুরস্কার পাচ্ছেন। এ ছাড়া সাধারণ ক্ষেত্রে প্রাতিষ্ঠানিক শ্রেণিতে পুরস্কার পাচ্ছে সাতক্ষীরার দেবহাটা উপজেলা নির্বাহী অফিস।

কারিগরি শ্রেণি (জেলা) : কারিগরি ক্ষেত্রে দলগত শ্রেণিতে মোট চারটি দল পুরস্কার পাচ্ছে। সওজের বগুড়া সার্কেলের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী সাদেকুল ইসলাম, রংপুর সার্কেলের মাহবুবুল আলম খান, গাইবান্ধার নির্বাহী প্রকৌশলী আসাদুজ্জামান, বগুড়ার আশরাফুজ্জামান ও রংপুরের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী ফিরোজ আখতার।

এ ছাড়া চাঁদপুরের সাবেক ডিসি আবদুস সবুর মণ্ডল, বর্তমান ডিসি মাজেদুর রহমান খান, পরিবার-পরিকল্পনার উপপরিচালক মো. ইলিয়াছসহ এমএ গফুর মিঞা ও গোলাম মোস্তফা এবার পদক পাচ্ছেন। কুমিল্লার ডিসি আবুল ফজল মীর, সিভিল সার্জন ড. মজিবুর রহমান, এডিসি মাঈন উদ্দিন এবার পুরস্কার পাচ্ছেন। আরও পুরস্কার পাচ্ছেন খুলনার ডিসি হেলাল হোসেন, এডিসি মাঈনউদ্দিন হাসান ও এডিসি সার্বিক জিয়াউর রহমান।