করোনাকাল পেরিয়ে ঘরের মাঠে টেস্ট ক্রিকেটে ফেরা বাংলাদেশ ধবল ধোলাইয়ের স্বাদ পেল। চট্টগ্রামের পর মিরপুরের হোম অব ক্রিকেটেও হেরে গেছে মুমিনুল হকের দল। কথিত ‘দ্বিতীয় সারির দল’ নিয়ে আসা উইন্ডিজ আজকের ১৭ রানের জয়ে ২-০ ব্যবধানে সিরিজ পকেটে পুড়েছে। বাংলাদেশ ‘প্যাকেট’ হয়েছে ২১৩ রানে। তাদের মাঝে আর যাই হোক, টেস্ট খেলার কোনো মানসিকতা দেখা যায়নি। এর আগে আরও খর্বশক্তির দল নিয়ে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে বাংলাদেশের কাছে ধোলাই হয়েছিল উইন্ডিজ।

ম্যাচের চতুর্থ দিনে আজ ঢাকা টেস্ট জয়ের জন্য প্রয়োজন ছিল একটু মনযোগ, ধৈর্য্য আর টেস্ট মানসিকতার। কিন্তু বাংলাদেশি ব্যাটসম্যানরা এসবের ধার ধারেন না। নিয়মিত বিরতিতে পড়তে থাকে উইকেট। এর আগে ক্যারিবীয়দের দ্বিতীয় ইনিংসে মাত্র ১১৭ রানে গুটিয়ে দিয়েছিল বাংলাদেশ। এর আগে তারা প্রথম ইনিংসে ৪০৯ রান করার সুবাদে এসেছিল ১১৩ রানের লিড। বল হাতে কাজটা সেরে দেন তাইজুল ইসলাম (৪ উইকেট) আর নাঈম হাসান (৩ উইকেট)।

জয়ের জন্য ২৩১ রানের টার্গেটে ব্যাটিংয়ে নেমে দ্বিতীয় ইনিংসে যথারীতি খেই হারিয়ে ফেলে স্বাগতিকরা। ৫৯ রানের ওপেনিং জুটি গড়েছিলেন সৌম্য সরকার আর তামিম ইকবাল। দলে নিজের অস্তিত্ব সংকটে ভোগা সৌম্য (১৩) আজও ব্যর্থ। ব্রাফেটের বলে কাট করতে গিয়ে ক্যাচ দেন কর্নওয়ালের হাতে। ক্যারিয়ারের ২৮তম টেস্ট ফিফটি তুলে আর এগোতে পারেননি তামিম। পুরো ট্যুরে ব্যর্থতার পরিচয় দেওয়া নাজমুল হোসেন শান্ত (১১) আজও ‘ধারাবাহিকতা’ ধরে রেখেছেন।

দলীয় রান ১০১ ছুঁতেই ওয়ারিক্যানের শিকার হন মুশফিক (১৪)। প্রথম ইনিংসে ধৈর্যের পরিচয় দেওয়া মোহাম্মদ মিঠুন (১০) আজ আর ধৈর্য্য ধরে রাখতে পারেননি। ১১৫ রানে ৫ উইকেট পতনের পর লিটন দাস এবং অধিনায়ক মুমিনুল হক দলের হাল ধরার চেষ্টা করেন। কিন্তু ওই যে, সমস্যা হলো মানসিকতায়। অধিনায়কের যে দায়িত্ব নিয়ে খেলা উচিত ছিল, তিনি সেটা করেননি। দলীয় ১৪৭ রানে ওয়ারিক্যানের বলে কর্নওয়ালের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরলেন ২৬ রানে।

প্রথম ইনিংসে ভালো খেলেছিলেন লিটন দাস। আজ পারেননি। ৩৫ বলে ২২ রান করে শিকার হন কর্নওয়ালের। ১৫৩ রানে ৭ম উইকেট হারায় বাংলাদেশ। পরাজয় তখন সময়ের ব্যাপার হয়ে দাঁড়ায়। জয় থেকে মাত্র ৬৮ রান দূরে থাকতে লেগ বিফোর উইকেটের ফাঁদে পড়েন তাইজুল ইসলাম (৮)। শিকারী সেই কর্নওয়াল। দলীয় ১৮৮ রানে ব্রাফেটের তৃতীয় শিকারে পরিণত হন নাঈম হাসান (১০। একাই লড়ছিলেন মিরাজ। তবে তার সঙ্গী ছিল না।

উইকেটে আসেন আবু জায়েদ। তাকে সঙ্গী করে কয়েকটা বড় শটে জয়ের আশা জাগান মিরাজ। তবে সেই ওয়ারিক্যানের বলে মেহেদি মিরাজ (৩১) রাকিম কর্নওয়ালের তালুবন্দি হলে বাংলাদেশ থামে ২১৩ রানে। ১৭ রানের দুর্দান্ত জয় তুলে নেয় উইন্ডিজ। ২ ইনিংসে ৯ উইকেট নিয়ে ম্যাচসেরা রাকিম কর্নওয়াল। সিরিজসেরা হয়েছেন এনক্রুমা বোনার।