ক্যারিয়ার জুড়ে নানা বিতর্কে জড়িয়েছেন। সমালোচনা হয়েছে। সেখান থেকে শক্তি নিয়ে মাঠে পারফর্ম করে জবাব দিয়েছেন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান। ২০০৬ সালে জাতীয় দলের হয়ে ক্রিকেট শুরুর পর জন্ম দিয়েছেন অনেক রেকর্ডের। ১৯৮৭ সালে আজকের দিনে মাগুরা জেলায় জন্মগ্রহণ করেন এই মহাতারকা ক্রিকেটার। আজ বুধবার (২৪ মার্চ) ৩৪ বছরে পা দিলেন বাংলাদেশ ক্রিকেটের এই পোস্টারবয়।
মাগুরার ফায়সাল, ড্রেসিংরুমের ময়না আর বাংলাদেশের সাকিব। ক্রিকেটার হিসেবে যে যাত্রা শুরুই হত না নাম্বার সেভেন্টি ফাইভের। সাকিবের পছন্দ ছিল ফুটবল। খেলতেনও তা। পাড়ায় একদিন ক্রিকেট খেলতে গিয়ে একজন আম্পায়ারের চোখে পড়েন। সেখান থেকে বিকেএসপি-বয়সভিত্তিক হয়ে জাতীয় দলে ডাক পান ২০০৬ সালে।
ওই যে শুরু। সাকিব ছুটেছেন নিজস্ব গতিতে। তার নেতৃত্বে দেশের বাইরে প্রথম টেস্ট সিরিজ জিতে টাইগাররা। দেশের মাটিতে বিশ্বকাপ খেলে বাংলাদেশ। ওয়ানডে, টেস্ট ও টি-টোয়েন্টি– তিন ফরম্যাটেই বিশ্বসেরা ক্রিকেটার হন তিনি।
এশিয়া কাপের ফাইনালে তার কান্না। অস্ট্রেলিয়াকে ব্যাটে-বলে একাই হারিয়ে দেয়া। ইংল্যান্ড বিশ্বকাপে একাকী লড়ে যাওয়া কিংবা ইংল্যান্ডকে দেশের মাটিতে টেস্টে হারানোর পর তার স্যালুট। সবকিছুই যে বলে দেয় মাথা নোয়াবার নয়। ওয়ানম্যান আর্মি হয়ে দেশকে জিতিয়েছেন বহুবার। ৫ ফুট নয় ইঞ্চির মানুষটা যে তখনো দমে যাননি। তার স্বপ্ন যে আকাশ ছোঁয়া।
দেশের হয়ে রেকর্ডবুকের কোন পাতায় নেই সাকিব তা খুঁজে পাওয়াই যেন দুষ্কর। বেস্ট বোলিং ফিগার, সর্বোচ্চ রান, সর্বোচ্চ উইকেট- সব বিভাগেই প্রথম তিন জনের একজন সাকিব। সারা বিশ্বের প্রায় সব ফ্রাঞ্চাইজি লিগ খেলা একমাত্র বাংলাদেশী। তবে সাকিব আলাদা ভাবে আলোচনায় ক্যারিয়ার জুড়ে নানা বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে। নিষিদ্ধ হয়েছেন। তবে সমালোচকদের মুখে কুলুপ এঁটেছেন মাঠের পারফরম্যান্স দিয়ে।
বিজ্ঞাপন নির্মাতাদের হটকেক সাকিব। বিভিন্ন দাতব্য সংস্থায়ও কাজ করেছেন। জাতিসংঘের শুভেচ্ছা দূত হয়েছে। আর্ত মানবতার সেবায় নিজ নামে খুলেছেন সাকিব আল হাসান ফাউন্ডেশন। এখন তার নয়া প্রজেক্ট মাসকো-সাকিব ক্রিকেট একাডেমীতে ভবিষ্যতের ক্রিকেটার গড়ে তোলা।
সাকিবের ক্যারিয়ার
টেস্ট ক্রিকেটে ম্যাচ খেলেছেন ৫৭ টি, ব্যাট করেছেন ১০৬ ইনিংস, রান ৩৯৩০, গড় ৩৯.৭০, শতক ৫ টি, অর্ধশতক ২৫ টি, উইকেট ২১০ টি, ইনিংসে ৫ উইকেট ১৮ বার, ক্যাচ ২৪ টি। টেস্ট ক্রিকেটে ব্যাট হাতে দলের ১৩.৯০% ও বল হাতে ২৭.২৪ উইকেট একাই নিয়েছেন সাকিব।
ওডিআই ক্রিকেট ম্যাচ খেলেছেন ২০৯ টি, ইনিংস ১৯৭ টি, রান ৬৪৩৬, গড় ৩৮.০৮, স্ট্রাইক রেট ৮২.৩৪, শতক ৯ টি, অর্ধশতক ৪৮ টি, উইকেট ২৬৬ টি, বোলিং গড় ২৯.৭৩, ইনিংসে ৫ উইকেট ২ বার, ক্যাচ ২৪ টি।
ওডিআই ক্রিকেটে ব্যাট হাতে দলের ১৪.৫১% রান ও বল হাতে দলের ১৭.৬২% রান একাই করেছেন সাকিব আল হাসান।
টি-২০ ক্রিকেটে ৭৫ ইনিংসে রান ১৫৬৭, উইকেট ৯২ টি, ইনিংসে ৫ উইকেট ১ বার, ক্যাচ ১৯ টি!
ব্যক্তিগত জীবন
২০১২ সালের ১২ ডিসেম্বর সাকিব আল হাসান যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী উম্মে আহমেদ শিশিরের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। বর্তমানে তিনি দুইটি কন্যা সন্তান এবং একটি পুত্র সন্তানের জনক। তার বড় মেয়ের নাম আলাইনা হাসান অব্রি এবং ছোট মেয়ের নাম ইররাম। ২০২১ সালের ১৬ মার্চ (বাংলাদেশ সময়) তৃতীয় সন্তানের বাবা হন সাকিব আল হাসান।