মানুষের জীবন-জীবিকার কথা বিবেচনায় নিয়ে চলমান লকডাউনের মধ্যেই দোকানপাট, শপিং মল খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। আগামীকাল রবিবার থেকে দোকানপাট ও শপিং মল খোলা রাখা যাবে। সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত দোকানপাট ও শপিং মল খোলা রাখার বিষয়ে গতকাল শুক্রবার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে এক আদেশ জারি করা হয়েছে। এর জন্য অবশ্যই সরকার নির্দেশিত স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে। দোকানপাট ও শপিং মল খোলার সঙ্গে গণপরিবহন যুক্ত। তবে মন্ত্রিপরিষদের আদেশে এই বিষয়ে কিছু উল্লেখ করা হয়নি।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের উপসচিব রেজাউল ইসলাম স্বাক্ষরিত আদেশে বলা হয়েছে, ব্যাপকসংখ্যক মানুষের জীবন-জীবিকার বিষয় বিবেচনা করে নতুন এই নির্দেশনা জারি করা হয়েছে। স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালনের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট বাজার বা সংস্থার ব্যবস্থাপনা কমিটি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধে গত ১৪ এপ্রিল থেকে আট দিনের কঠোর লকডাউন শুরু হয়। লকডাউনের মধ্যে দোকানপাট, শপিং মল বন্ধ রাখাসহ ১৩টি নির্দেশনা দেয় সরকার। ওই মেয়াদ শেষ হয় গত বুধবার। এরপর লকডাউনের মেয়াদ আগামী ২৮ এপ্রিল মধ্যরাত পর্যন্ত বাড়ানো হয়। এর আগে থেকেই বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির পক্ষ থেকে দোকানপাট ও শপিং মল খুলে দেওয়ার দাবি জানানো হচ্ছিল। এ বিষয়ে তারা সরকারের উচ্চ পর্যায়ে তাদের দাবি তুলে ধরে। দোকানপাট ও শপিং মলে প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যবিধি মানার বিষয়ে সরকারের পক্ষ থেকে দোকান মালিক সমিতির নেতাদের কঠোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তার সঙ্গে গণপরিবহনের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান, এ বিষয়ে তাঁরা এখনো কোনো নির্দেশনা পাননি।
গণপরিবহন চালুর দাবি বাস মালিকদের : দ্বিতীয় দফা লকডাউনের আগে বিপুলসংখ্যক মানুষ ঢাকা ছেড়ে গ্রামে গেছে। গতকাল তারা ঢাকায় ফিরতে শুরু করেছে। যানবাহন না থাকায় পথে পথে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে তাদের। ফিরতে হচ্ছে অতিমাত্রায় স্বাস্থ্যঝুঁকি নিয়ে। রবিবার থেকে দোকানপাট খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্তের পর বাস মালিকরাও এখন গণপরিবহন চালুর দাবি জানিয়েছেন।
গ্রামে ফিরে যাওয়া বেশির ভাগ মানুষ ফুটপাতের দোকানি, ছোট ব্যবসায়ী এবং বিভিন্ন দোকানের কর্মচারী। গতকাল রাজধানীর আব্দুল্লাহপুর এবং গাবতলীর আমিনবাজারে গিয়ে দেখা গেছে, সিএনজিচালিত অটোরিকশা, মোটরসাইকেল, প্রাইভেট কার ও মাইক্রোবাসে ঢাকায় ফিরছে এসব মানুষ। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শিবচরের বাংলাবাজার এবং গোয়ালন্দের দৌলতদিয়া ঘাটে বিপুলসংখ্যক মানুষ ঢাকায় ফিরতে জড়ো হয়েছে। এসব মানুষের কেউ ফেরিতে, কেউ বা ফেরি না পেয়ে নৌকায় পদ্মা পাড়ি দিচ্ছে।
গণপরিবহন চালুর দাবি জানিয়ে ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক খন্দকার এনায়েতউল্লাহ কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘সব দোকানপাট, বিপণিবিতান খুলে দেওয়া হচ্ছে। পরিবহন চালু না থাকলে তো বিপণিবিতানে যাওয়া লোকেরাও বিপদে পড়বে। আর গ্রামে যাওয়া মানুষেরা অতিরিক্ত অর্থ ব্যয় এবং স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষা করে ঢাকায় ফিরছে। সে জন্য আমাদের দাবি, গণপরিবহন চালুর অনুমতি দেওয়া হোক।’