রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল রয়েছে। ১০ সদস্যের মেডিকেল টিম বৈঠক করে বুধবার খালেদা জিয়ার ফুসফুসের পানি বের করার জন্য বুকে বসানো দুটি পাইপের মধ্যে বাম পাশেরটা খুলে ফেলেছে। আগামী ২৪ ঘণ্টা ফুসফুস পর্যবেক্ষণ করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবেন তারা। মেডিকেল বোর্ডের একজন চিকিৎসক যুগান্তরকে এ তথ্য জানিয়েছেন।
১১ এপ্রিল করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে গুলশানের বাসা ‘ফিরোজা’য় ব্যক্তিগত চিকিৎসক টিমের অধীনে চিকিৎসাধীন থাকার পর তাদের পরামর্শে ২৭ এপ্রিল থেকে এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন খালেদা জিয়া। ৩ মে হঠাৎ শ্বাসকষ্ট অনুভব করলে চিকিৎসকরা তাকে সিসিইউতে স্থানান্তর করেন। করোনা পরবর্তী জটিলতাসহ খালেদা জিয়া আর্থারাইটিস, ডায়াবেটিকের পাশাপাশি হৃদযন্ত্র ও কিডনি সমস্যায় ভুগছেন।
এভারকেয়ার হাসপাতালের হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে ১০ সদস্যের একটি মেডিকেল বোর্ডের তত্ত্বাবধানে তার চিকিৎসা চলছে।
ওই চিকিৎসক আরও জানান, খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা খুব ধীরে উন্নতি ঘটছে। তবে তার বয়স ও অন্যান্য জটিল রোগের কারণে শঙ্কা এখনো কাটেনি। তার ফুসফুস ও হৃদযন্ত্রের সমস্যা নিয়ে তারা চিন্তিত। শরীরে প্রোটিনের অভাব এবং অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিসের কারণে চিকিৎসায় ধীরে এগোতে হচ্ছে।
তিনি জানান, ফুসফুসে জমা পানি বের করার জন্য খালেদা জিয়ার বুকের দুই পাশে দুটি পাইপ বসানো হয়েছিল। ফুসফুসে পানি জমাটা অনেকটা নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম হওয়ায় তারা আপাতত বাম পাশের পাইপটি খুলে নিয়েছেন। এখন তারা পর্যবেক্ষণ করবেন আদৌ আর পানি জমা হয় কিনা। এটার ওপর নির্ভর করে অপর পাইপটিও তারা খুলে ফেলবেন।
তিনি জানান, ২৩ দিন ধরে খালেদা জিয়া হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এতে স্বাভাবিকভাবেই তাদের মধ্যে চিন্তার ছাপ পড়েছে। খুব ধীরে সুস্থ হওয়ার কারণে তাদের মধ্যে এক ধরনের ভীতি চলে আসছিল। কিন্তু এখন অনেকটা আশঙ্কামুক্ত মনে হলেও পুরোপুরি হওয়া যাচ্ছে না। খালেদা জিয়ার হার্টের সমস্যা দূর করা নিয়ে চ্যালেঞ্জ রয়েছে। এছাড়া ইনসুলিন দিয়ে তার ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করা হচ্ছে। দীর্ঘ এক মাসের বেশি সময় ধরে কোভিডসংক্রান্ত জটিলতার পাশাপাশি তার পুরোনো রোগে কাবু হয়ে পড়ছেন খালেদা জিয়া। তার শরীরে প্রোটিনের ঘাটতি দেখা দিচ্ছে। তাকে সামান্য কিছু তরল খাবার যেমন স্যুপ, পেপের জুস ও জাউ খেতে পারলেও অন্যান্য খাবার দিতে পারছেন না।
খালেদা জিয়ার চিকিৎসক ও বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসনের শারীরিক অবস্থার সামান্য উন্নতি ঘটছে। তিনি দেশবাসীর কাছে খালেদা জিয়ার সুস্থতার জন্য দোয়া চেয়েছেন।