অলিম্পিকে স্বর্ণ জয়ের মিশনে দুর্দান্ত খেলছে ব্রাজিলের অনুর্ধ্ব ২৩ দল। কোপা আমেরিকায় চমক দেখানো রিচার্লিসনকে নিয়ে গড়া এই দল সামলাচ্ছেন বিশ্বের অন্যতম রাইটব্যাক দানি আলভেস।
ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে জাপানের কাসিমা স্টেডিয়ামে মঙ্গলবার বিকেল পাঁচটায় শক্তিশালী মেক্সিকোর মুখোমুখি হয়েছে ব্রাজিল।
মেক্সিকো অনুর্ধ্ব ২৩ দল যে কতটা শক্তিশালী তা হাড়ে হাড়েই টের পেয়েছে ব্রাজিল। ৯০ মিনিটেও মেক্সিকোর জালে বল জড়াতে পারেনি ব্রাজিল। তাই খেলা গড়িয়ে অতিরিক্ত ৩০ মিনিটে।
অতিরিক্ত ৩০ মিনিটও জালের দেখা পায়নি দুই দলের কেউ। ফলে খেলা গড়াল টাইব্রেকারে। সেখানেই শেষ হাসি ফুটল ব্রাজিল শিবিরে।
মেক্সিকোকে ৪-১ গোলে হারিয়ে টোকিও অলিম্পিকের ফাইনালে উঠে গেল ব্রাজিল।
টাইব্রেকারে ব্রাজিল অধিনায়ক দানি আলভেসের দুর্দান্ত শট হাতে লাগাতে পারলেও থামাতে পারেননি মেক্সিকো গোলরক্ষক গুইলার্মো ওচোয়া।
কিন্ত মেক্সিকোর এদুয়ার্দো আগুইরের দুর্বল শট রুখে দেন ব্রাজিল গোলরক্ষক সান্তোস। ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে যায় ব্রাজিল।
ব্রাজিলের হয়ে গ্যাব্রিয়েল মার্টিনেলির নেওয়া দ্বিতীয় শটটি মেক্সিকোর জালে প্রবেশ করে। কিন্তু এবারও মিস মেক্সিকো। দ্বিতীয় শট থেকে গোল পেতে ব্যর্থ হন ইয়োহান ভাস্কুয়েজ। বল মারেন পোস্টের বাইরে। ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে যায় ব্রাজিল।
ব্রাজিলের হয়ে তৃতীয় গোলটি করেন ব্রুনো গুইমারেজ। এটাও গোল। ওচোয়া ঝাঁপিয়ে পড়েও ঠেকাতে পারেনননি তার শটটি। এবার মেক্সিকোর হয়ে জালে বল জড়াতে সক্ষম হন কার্লোস রদ্রিগেজ। ব্যবধান দাঁড়ায় ৩-১।
ব্রাজিলের হয়ে চতুর্থ শট নিতে আসেন রেইনার। এই বল জালে জড়ালে মেক্সিকোর আর শট নেওয়ার প্রয়োজন পড়বে না।
সেই কাজটিই করেন রেইনার। মেক্সিকোর গোলরক্ষক গুইলার্মো ওচোয়কে পরাস্ত করলেন রেইনার। সাথে সাথে ফাইনালে ওঠার উল্লাসে মেতে ওঠে ব্রাজিল।
খেলা শুরুর ৭ম মিনিটে ফ্রি-কিক অজর্ন করেন ব্রাজিলের অ্যান্তোনি। গোলের উদ্দেশে মেক্সিকোর বিপজ্জনক অঞ্চলে উড়িয়ে মারেন, তবে হেডের মাধ্যমে বল ক্লিয়ার করেন মেক্সিকোর ডিফেন্ডার মার্টিন। ১১তম মিনিটে দানি আলভেসের দারুণ একটি ক্রস ডি-বক্সে খুঁজে নেয় রিচার্লিসনকে। রিচার্লিসনের থেকে বল পান ক্লাউদিনহো। কিন্তু মনটেসের বাধায় তিনি ব্যর্থ হন।
এভাবে ২১ তম মিনিট পর্যন্ত মাঝমাঠ ব্রাজিলের দখলেই থাকে। ২২ তম মিনিটে গুইমারোসকে বিপজ্জনক অঞ্চলে ফাউল করে মেক্সিকান ডিফেন্ডার। ফলে ফ্রি-কিক পান দানি আলভেস। তবে সে যাত্রায় রক্ষা পেয়ে যায় মেক্সিকো।
২৮ তম মিনিটে ডি-বক্সে ডগলাস লুইস পড়ে গেলে পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি জিওয়রগি কাভাকভ। পরে ভিএআরের মাধ্যমে সিদ্ধান্তে বদল আনেন। সে যাত্রায় রক্ষা পেয়ে যায় মেক্সিকো।
প্রথমার্ধ শেষ হওয়ার আগে সুযোগ হাতছাড়া করে মেক্সিকো। আনতুনা থেকে বল পেয়ে ব্রাজিলের পোস্ট বরাবর দুর্দান্ত শট নেন রোমো। কিন্তু ব্রাজিলিয়ান দেয়াল সান্তোনের দুর্দান্ত এক সেভে বল আর জালে জড়ায়নি।
গোলশূন্য অবস্থায় শেষ হয় প্রথমার্ধ। দ্বিতীয়ার্ধে নেমে লুইস ও ক্লাউদিনহো বেশ কয়েকবার মেক্সিকোর ডি-বক্সে হানা দেয়। কিন্তু ব্যর্থ হন তারা।
৫৯তম মিনিটে মেক্সিকান ফরোয়ার্ডকে ফাউল করেন নিনো। ফ্রি-কিক পায় মেক্সিকো। কিক নেন করডোভা। কিন্তু সেখান থেকে কোনো কিছুই অজর্ন করতে পারেননি করডোভা।
খেলায় ধার আনতে ৬৩তম মিনিটে আনতুনাকে উঠিয়ে দিয়েগো লাইনেজকে নামায় মেক্সিকো কোচ। আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণে খেলা চলে অনেকটা সময়।
৭৪তম মিনিটে ক্লাউদিনহোকে উঠিয়ে রেইনারকে নামায় ব্রাজিল। এক মিনিট পরে হলুদ কার্ড দেখেন লাইনেজ। ৭৮ মিনিটের সময় করডোভাকে উঠিয়ে রিকার্ডো এনগোলাকে নামায় মেক্সিকো।
৮২তম মিনিটে রিচার্লিসনের দারুণ একটি প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়। ৮৫তম মিনিটে ফ্রি-কিক পায় মেক্সিকো। মন্টেসের নেওয়া কিকটি গোলরক্ষক সান্তোসের পাশ কেটে চলে যায়।
নির্ধারিত ৯০ মিনিটের খেলা শেষে ম্যাচ গড়ায় অতিরিক্ত ৩০ মিনিটে। অতিরিক্ত সময় শেষে টাইব্রেকারে ফাইনালের টিকিট নিশ্চিত করে ব্রাজিল।