যৌতুকের দাবিতে নির্যাতনের অভিযোগে দ্বিতীয় স্ত্রী’র করা মামলায় বরগুনা সদর ইউনিয়নের সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান গোলাম আহাদ সোহাগকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। রবিবার দুপুরে শহরের ফার্মেসি পট্টি থেকে বরগুনা সদর থানা পুলিশ তাকে আটক করে। একই দিন দুপুরে বরগুনা সদর থানায় স্ত্রী আয়েশা আক্তার সাথী তার স্বামী গোলাম আহাদ সোহাগ ও ননদ মোসাঃ মলি ইসলামের বিরুদ্ধে নারী শিশু নির্যাতন দমন আইনে সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় আটক দেখিয়ে বিকেলে আদালতে হাজির করা হলে বিচারক মোঃ হাফিজুর রহমান তাকে জেল হাজতে পাঠানো নির্দেশ দেন।

বরগুনা সদর উপজেলার বাঁশবুনিয়া গ্রামের বাসিন্দা গোলাম আহাদ সোহাগ সদর উপজেলার ৮নং বরগুনা সদর ইউনিয়নের সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান। একইসাথে তিনি পৌর যুবলীগের সভাপতি।

থানায় করা মামলা সূত্রে জানা যায়, মামলার বাদি আয়েশা আক্তার সাথি গোলাম আহাদ সোহাগের দ্বিতীয় স্ত্রী। ২০১১ সালে সদরের ঢলুয়া ইউনিয়নের আবদুর রবের মেয়ে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক আয়েশা আক্তার সাথিকে বিয়ে করেন সোহাগ। বিয়ের পর কয়েক বছর ভালো কাটলেও সম্প্রতি যৌতুকের দাবিতে স্ত্রী সাথির উপর চাপ সৃষ্টি করে সোহাগ। এ বছর ফ্রেব্রুয়ারি মাসের ৫ তারিখ সোহাগের দাবিকৃত একলাখ টাকা পরিশোধও করেন তিনি। কিন্ত তিনি আরো একলাখ টাকা দাবি করলে স্ত্রী সাথি দিতে অপরাগতা প্রকাশ করেন। এ নিয়ে উভয়ের মধ্যে বিবাদ চলতে থাকে এবং গত ৯ মার্চ সাথিকে মারধর করে বাসা থেকে চলে যায় স্বামী সোহাগ। সেই থেকে ভরণপোষণ ও খোঁজ খবর রাখা বন্ধ করে দেন। একইসাথে সোহাগ তার ফেসবুক একাউন্ট ব্যবহার করে স্ত্রী সাথিকে নিয়ে নানা আজেবাজে মন্তব্য করে পোস্ট করতে থাকেন। এ ঘটনায় বরগুনা গত ৮ জুলাই ২০২১ তারিখে সদর থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন সাথি। ডায়েরির তদন্তে গত ২২ আগস্ট বরগুনা জেলা গোয়েন্দা পুলিশ অপরাধ সংগঠনে ব্যবহৃত ল্যাপটপ জব্দ করে প্রাথমিক প্রমান পাওয়ার পর ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য ঢাকা সিআইডি ল্যাবে পাঠায়।

স্ত্রী সাথির করা মামলায় রবিবার দুপুরে বরগুনা পৌরশহরের ফার্মেসি পট্টি থেকে সোহাগকে গ্রেপ্তার করে বরগুনা থানা পুলিশ। পরে বিকেলে বরগুনা নারী শিশু নির্যাতন দমন বিশেষ আদালতের হাজির করা হলে আদালত তাঁকে জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

মামলার বিষয়ে গোলাম আহাদ সোহাগের স্ত্রী আয়েশা আক্তার সাথী জানান, সোহাগ যৌতুকের দাবিতে তাকে নির্যাতনের পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে মানহানিকর মন্তব্য প্রচার করেছে। স্কুলশিক্ষক হিসেবে আমি লজ্জিত। আমি এর ন্যায় বিচার চাই।

বরগুনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কেএম তারিকুল ইসলাম মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, তার (সোহাগের) বিরুদ্ধে যৌতুকের দাবিতে নির্যাতনের অভিযোগে এনে স্ত্রী আয়েশা আক্তার সাথীর মামলায় গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে। আদালত সাবেক এই ইউপি চেয়ারম্যানকে জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন।