আন্তর্জাতিক কন্যাশিশু দিবস আজ ১১ অক্টোবর সোমবার। পৃথিবীজুড়ে লিঙ্গবৈষম্য দূর করতে ২০১২ সালের ১১ অক্টোবর থেকে জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্রগুলো প্রতিবছর এ দিবসটি পালন করে থাকে। সরকারের পাশাপাশি বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থা দিবসটি উপলক্ষে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।

নারীদের শিক্ষার অধিকার, আইনি সহায়তা ও ন্যায় অধিকার, চিকিত্সা সুবিধা, বৈষম্য থেকে সুরক্ষা, নারীর বিরুদ্ধে হিংসা ও বাল্যবিয়ে বন্ধে কার্যকর ভূমিকা পালনের উদ্দেশ্যে এ দিবসের যাত্রা শুরু। প্রথম আন্তর্জাতিক কন্যাশিশু দিবসের প্রতিপাদ্য ছিল ‘বাল্যবিবাহ বন্ধ করা’। এবারের প্রতিপাদ্য ‘ডিজিটাল প্রজন্ম আমাদের প্রজন্ম’।

সমাজ কল্যাণ ও উন্নয়ন সংস্থার (স্কাস) চেয়ারম্যান জেসমিন প্রেমা বলেন, বেশির ভাগ পরিবারে কন্যাশিশুরা খাওয়াদাওয়া, পোশাক-পরিচ্ছদ এমনকি সামাজিক মর্যাদার ক্ষেত্রেও অবহেলা ও বঞ্চনার শিকার হতে দেখা যায়। দেশে শিশু সুরক্ষার জন্য শিশু অধিকার আইন ও নীতিমালা থাকা সত্ত্বেও অঞ্চলভেদে বৈষম্য রয়েছে। করোনা মহামারিসহ প্রাকৃতিক দুর্যোগের প্রভাবে কন্যাশিশুদের বাল্যবিয়েসহ নানামুখী সংকট বেড়েছে।

এ বিষয়ে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সভাপতি মেহের আফরোজ চুমকি কালের কণ্ঠকে বলেন, কন্যাশিশুকে সুনাগরিক করে গড়ে তুলতে হবে। তাহলে তারা দেশ ও সমাজের জন্য কাজ করতে পারবে। কন্যাশিশুদের শিক্ষার পাশাপাশি ক্ষমতায়নের বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে। বাল্যবিয়ে বন্ধ করতে হবে। সরকার এ বিষয়ে কাজ শুরু করেছে। কিন্তু সরকারের এককভাবে এই কাজটি করা অসম্ভব। এ বিষয়ে সম্মিলিতভাবে কাজ করার আহ্বান জানান তিনি।

প্রসঙ্গত, আন্তর্জাতিক কন্যাশিশু দিবস প্ল্যান ইন্টারন্যাশনালের ‘কারণ আমি একজন মেয়ে’ নামক আন্দোলনের ফসল।

এ আন্দোলনের মূল কর্মসূচি হলো ‘বিশ্বজুড়ে কন্যাশিশুর পরিপুষ্টি সম্পর্কে জনসচেতনতা সৃষ্টি করা’। এ সংস্থার কানাডার কর্মচারীরা এ আন্দোলনকে বিশ্বদরবারে প্রতিষ্ঠিত করতে কানাডা সরকারের সহায়তা নেয়। কানাডাই প্রথম জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে আন্তর্জাতিক কন্যাশিশু দিবস পালনের প্রস্তাব দেয়।

পরে ২০১১ সালের ১৯ ডিসেম্বর তারিখে জাতিসংঘের সাধারণ সভায় এ প্রস্তাব গৃহীত হয়। এরপর ২০১২ সালের ১১ অক্টোবর প্রথম আন্তর্জাতিক কন্যাশিশু দিবস পালন করা হয়। বাংলাদেশ সরকার এই দিবসটি পালনের পাশাপাশি একই লক্ষ্য নিয়ে ৩০ সেপ্টেম্বর জাতীয় কন্যাশিশু দিবস পালন করে থাকে।