যশোরের বাঘারপাড়া ইউপি নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন পেয়েও স্বস্তিতে নেই আওয়ামী লীগের (নৌকা) চেয়ারম্যান প্রার্থীরা। বিদ্রোহী প্রার্থী থাকায় দুশ্চিন্তার যেন শেষ নেই তাদের। মনোনয়নবঞ্চিত এসব বিদ্রোহী প্রার্থীরা নৌকা প্রতীকের প্রার্থীদের অস্বস্তিতে রেখেছেন।

একাধিকবার দলীয় মনোনয়নবঞ্চিত বিদ্রোহীদের সঙ্গে কথা বলেও সমঝোতায় আনতে ব্যর্থ হয়েছেন দলের উপজেলার দায়িত্বশীল নেতারা। যে কারণে নৌকার বিপক্ষে ভোটযুদ্ধে নামা ১৪ বিদ্রোহী প্রার্থীর বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা (বহিষ্কার) গ্রহণের প্রস্তুতি চলছে বলে জানান উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা হাসান আলী। 

১নম্বর জহুরপুর ইউনিয়নে নৌকা প্রতীক পেয়েছেন ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি মো. আসাদুজ্জামান মিন্টু। এখানে বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে মোটরসাইকেল প্রতীক নিয়ে মাঠে নেমেছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহ সভাপতি ও ওই ইউনিয়নের নব্বই দশকের চেয়ারম্যান বদর উদ্দিন মোল্যা। এ ছাড়া উপজেলা বঙ্গবন্ধু সৈনিকলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক আলমগীর হোসেন বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে ঘোড়া প্রতীক নিয়ে মাঠে রয়েছেন।

২নম্বর বন্দবিলা ইউনিয়নে যুবলীগ নেতা সনজীত বিশ্বাস নৌকা প্রতীক পেয়েছেন। এ ইউনিয়নের ৪নম্বর খাজুরা ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জিয়াউর রহমান জয় বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে ঢোল প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। একই সাথে আওয়ামী লীগ নেতা মাসুম রেজা ঘোড়া প্রতীক নিয়ে ভোটযুদ্ধে নেমেছেন।

৩নম্বর রায়পুরে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বিল্লাল হোসেন নৌকা প্রতীক পেয়েছেন। তাকে চ্যালেঞ্জ করে আনারস প্রতীক নিয়ে বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে মাঠে নেমেছেন আওয়ামী লীগ নেতা এ ইউনিয়নের একাধিকবার নির্বাচিত চেয়ারম্যান মঞ্জুর রশিদ স্বপন।

৪নম্বর নারিকেলবাড়িয়া ইউনিয়নে নৌকার প্রার্থী  ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি বাবলু কুমার সাহা। এখানে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়ে আনারস প্রতীক নিয়ে লড়ছেন বর্তমান চেয়ারম্যান উপজেলা তাঁতী লীগের সভাপতি আবু তাহের সরদার।

৫নম্বর ধলগ্রাম ইউনিয়নে নৌকা প্রতীক পেয়েছেন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রবিউল ইসলাম। এ ইউনিয়নে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সিনিয়র সহসভাপতি আতিয়ার রহমান সরদার। তার প্রতীক আনারস।

৬নম্বর দোহাকুলা ইউনিয়নে একাধিকবার নির্বাচিত চেয়ারম্যান ওয়াহিদুর রহমান, আবু মোতালেব নৌকা প্রতীক পেয়েছেন। এখানে তাকে চ্যালেঞ্জ করে বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে আনারস প্রতীক নিয়ে মাঠে নেমেছেন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি অরুণ কুমার অধিকারী।

৭নম্বর দরাজহাট ইউনিয়নে নৌকা প্রতীক পেয়েছেন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহসভাপতি জাকির হোসেন। তার বিরুদ্ধে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন যথাক্রমে ঘোড়া প্রতীক নিয়ে ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদ সদস্য ইকবাল হোসেন, আনারস প্রতীক নিয়ে ইউনিয়ন কৃষকলীগের সভাপতি মহম্মদ আলী, মোটরসাইকেল প্রতীক নিয়ে ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি বর্তমান চেয়ারম্যান আয়ুব হোসেন বাবলু এবং টেবিল ফ্যান প্রতীক নিয়ে ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম ইলিয়াস।

৮নম্বর বাসুয়াড়ী ইউনিয়নে গতবারের মতো এবারও নৌকা প্রতীক পেয়েছেন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আমিনুর রহমান সরদার। তার বিরুদ্ধে আনারস প্রতীক নিয়ে বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে মাঠে নেমেছেন বর্তমান চেয়ারম্যান যুবলীগ নেতা আবু সাঈদ সরদার ও মোটরসাইকেল প্রতীক নিয়ে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ নেতা মিজানুর রহমান।

৯নম্বর জামদিয়া ইউনিয়নে তিনজন মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নেওয়ায় এখানে আওয়ামী লীগের কোনো বিদ্রোহী প্রার্থী নেই।

এদিকে ৭নম্বর দরাজহাট ইউনিয়নের নৌকার প্রার্থী জাকির হোসেন অভিযোগ করে বলেন, ‘ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নৌকার পক্ষে ভোট করছেন। তবে স্থানীয় আওয়ামী লীগের অধিকাংশ নেতা নৌকার পক্ষে ভোট করছেন না।

এ বিষয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা হাসান আলী বলেন, বিভিন্ন ইউনিয়নের ১৪ জন বিদ্রোহী প্রার্থীর বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণের প্রস্তুতি চলছে। আওয়ামী লীগ করে শেখ হাসিনার নির্দেশ অমান্য করা যাবে না। যারা নৌকার বিপক্ষে অবস্থান নেবে তাদের বিরুদ্ধেও সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।