মাহফুজ বাবু, কুমিল্লা

কুমিল্লা সদর জেনারেল হাসপাতাল থেকে ৪দিনের এক কন্যা নবজাতক চুরি। নারী ছেড়া ধন ফুটফুটে কন্য নবজাতকে হারিয়ে কিছুতেই কান্না থামছে না মায়ের। কুমিল্লা সদর হাসপাতালে গাইনী ওয়ার্ডে বেডে শুয়ে অনবরত কেঁদে চলেছেন ২৮বছর বয়সী মা আয়শা আক্তার। ঔরষজাত সন্তানকে ফিরে পেতে এখানে সেখানে ছুটছেন পিতা জসিম উদ্দিন (৪৫)। তিনি নগরীর বারপাড়া এলাকার বাসিন্দা। ঘটনার পর হাসপাতাল কর্মকর্তাদের সহায়তায় কোতয়ালী মডেল থানা পুলিশ সদস্যরা হাসপাতালের সিসিটিভি ফুটেজ দেখে অপরাধীকে সনাক্ত ও চুরি হওয়া নবজাতকে উদ্ধারের চেষ্টা করছেন ঘটনার পর থেকেই।
রবিবার ১৩ আগষ্ট সকাল আনুমানিক ১০টায় জেলার সদর জেনারেল হাসপাতালের জরুরী বিভাগের টিকিট কাউন্টারের সামনে থেকে বোরখা পরিহিত আনুমানিক ৩০ বছর বয়সী এক নারী নবজাতকে তার নানী নুরজাহান বেগমের কাছ থেকে কৌশলে চুরি করে নিয়ে পালিয়ে যায়। এরপর থেকে এখনো এ রিপোর্ট লেখার সৃয় রবিবার রাত ৮ পর্যন্ত উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি চুরি হওয়া নবজাতকে। কোতোয়ালি মডেল থানাধীন কান্দিরপাড় ফাঁড়ি পুলিশ হাসপাতাল ও আশেপাশের বিভিন্ন ভবনের সিসিটিভি ফুটেজ দেখে অপরাধীকে সনাক্ত করার চেষ্টা করছেন।
গত ১০ আগষ্ট সিজারের মাধ্যমে পৃথিবীর আলো দেখে আয়শা আক্তারের কন্যা নবজাতক। কিছুটা অসুস্থ থাকায় হাসপাতালের জরুরী বিভাগের সামনে নিয়ে টিকিট কেটে ডাক্তার দেখানোর কথা বলে নানীর কোল থেকে নবজাতককে নিয়ে সটকে পড়ে বোরখা পড়া এক মহিলা।
নবজাতকের নানী নূরজাহান বেগম জানায় “টিকিট কাউন্টারের কাছে নিয়ে বাচ্চাটিকে ঐ নারী তার কাছে দিয়ে টিকিট আনতে বলে কোন দিয়ে যে পালিয়ে যায় তা দেখতে পাইনি। বহু খোজাখুজি করেও ঐ মহিলাকে আর পাওয়া যায়নি।

নবজাতকের ফুফু লিপি আক্তার বলেন, “ফোন পেয়ে হাসপাতালে আসি। এখন পর্যন্ত কোন সন্ধান মেলেনি। ভাই জসিম উদ্দিন ইপিজেডে চাকরি করে। খবর পেয়ে হাসপাতালে আসে। পরে কোতোয়ালি মডেল থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন। পুলিশ সিসি টিভি ফুটেজ চেক করতেছে। বাচ্চার মা ভীষণ কান্না করতেছে। আমরা সন্তানকে যে কোন ভাবেই হোক ফেরত চাই ”

থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন জানিয়ে ভুক্তভোগী নবজাতকের পিতা জসিম উদ্দিন বলেন, “আমার শাশুড়ী মুরুব্বি মানুষ। তাকে এটা সেটা বুঝিয়ে এক অপরিচিত মহিলা টিকিট কাউন্টারের সামনে নিয়ে যায়। পরে সেখান থেকে বাচ্চাকে চুরি করে নিয়ে পালিয়ে যায়। সিসি টিভি ফুটেজ দেখে ঐ মহিলাকে সনাক্ত করতে কাজ করছে পুলিশ।
তবে এবিষয়ে ক্যামেরার সামনে কথা বলতে রাজি নয় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কেউ। ঘটনার পরে গাইনী ওয়ার্ডের সামনে অতিরিক্ত একজন আনসার সদস্যকে দেখা যায়।
নিজ নাড়ি ছেড়া ধন আপন সন্তানকে ফিরে পেতে অনবরত কেঁদে চলেছেন মা আয়শা আক্তার। এদিকে নবজাতকের সন্ধানে স্বজনদের সাথে আলোচনা করে সিসি টিভি ফুটেজ দেখে উদ্ধার অভিযান পরিচালনা করবেন বলে জানিয়েছে কান্দিরপাড় ফাঁড়ি ইনচার্জ।