মাহাফুজ বাবু; কুমিল্লা
জমিতে হালচাষকে কেন্দ্র করে উভয় পক্ষের ২জন নিহত! ছুরিকাঘাতে গুরুতর আহত ৫। আহতদের মাঝে ৩জনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢামেকে প্রেরন করা হয়েছে। শুক্রবার ১ সেপ্টেম্বর জুম্মার নামাজের আগে কুমিল্লা বরুড়া উপজেলার জালগাও দরবেশ বাড়ি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত ও আহতদের বাড়িতে শোকের মাতম চলছে।
জানা যায়, বিরোধপূর্ণ জমিতে সকাল আনুমানিক সারে দশটায় ট্রাক্টর নিয়ে ধান রোপনের জন্য হালচাষ করতে যায় মৃত হাসন আলীর ছেলে সত্তার, তার স্বজন মোস্তফা সহ তাদের লোকজন৷ এসময় জমিতে চাষ করতে নিষেধ করেন মোরশেদ, খোরশেদ, জহির ও তদের পিতা জামাল গাজী। এ নিয়ে বাকবিতন্ডা হয় উভয় পক্ষের মাঝে। পরে জমি বাড়িতে ফেরার পথে মেম্বার বাড়ির সামনে এলে পথরোধ করে খোরশেদ, জয়নাল, জহির, মোরশেদ ও জামাল গাজির ওপর ছুরি দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা চালায় সত্তার, মোস্তফাসহ তাদের সহযোগীরা। এসময় সত্তারের এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাতে আহত হয় খোরশেদ জহির জয়নাল সহ ৪জন। গরুতর আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নেয় এলাকাবাসী। হাসপাতালে নেয়ার পথেই মৃত্যু হয় খোরশেদের। এদিকে এ ঘটনায় ক্ষিপ্ত এলাকাবাসী ধাওয়া করে সত্তারকে একটি জমিতে ফেলে গণধোলাই দেয়। পরে হাসপাতালে নেয়ার পর সত্তারের মৃত্যু হয় । ছুরিকাঘাতে গুরুতর আহতদের মাঝে জহিরসহ তিনজনকে ঢাকায় নেয়া হয়েছে বলে জানা যায় স্বজনদের বরাত দিয়ে। আহতদের মাঝে জহিরের অবস্থা আশংকাজন বলেও জানায় স্বজনরা।
নিহত খোরশেদ আলমের বাবা জামাল গাজী, মা, স্ত্রী ও স্বজনরা জানান, জমি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে মামলা চলমান। আদালত ৪বার তাদের পক্ষে রায় দিলেও সত্তারের প্রভাবের কারনে জমিতে যেতে পারেন না। ঘটনার আগে হালচাষ করতে বাঁধা দেয়ায় বাড়িতে ফেরার পথে ছুরিকাঘাত করে খোরশেদ সহ ৪ জনকে আহত করে সত্তার, মোস্তফা সহ তাদের লোকজন। এতে খোরশেদ নিহত হয়। নিহত খোরশেদ ২সন্তানের জনক।
নিহত সত্তারের কন্যা তাসলিমা আক্তার বলেন,” জমি নিয়ে মারামারি হয়। আমার আব্বা কয়জনকে মেরে ফেলছে এটা বলাবলি করে এলাকার রায় এক দেরশ লোক মিলে বাবাকে পিটিয়ে মেরে ফেলে। কোন মানুষের সহযোগী চেয়ে পাইনি।
বরুড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ফিরোজ হোসেন জানান, চাষের জমি ও সম্পত্তি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে দুই পক্ষের বিরোধ ও মামলা রয়েছে। আজ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে উভয় পক্ষের ২জন নিহত এবং কয়েকজন আহত হয়েছে। খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে ফোর্স নিয়ে হাজির হই। তদন্ত চলছে পরে বিস্তারিত বলা যাবে। ঘটনার সাথে জড়িতদের সকলকে সনাক্ত ও গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
ভবানীপুর ইউপি চেয়ারম্যান খলিলুর রহমান বলেন , জমি বিরোধ নিয়ে বেশ কয়েকবার শালিস বিচার হয়েছে। আদালতে মামলা চলমান রয়েছে দুপক্ষের। শৃঙ্খলা বজায় রাখতে আগে থেকেই তাদের বারবার হলা হয়েছে। নির্দেশ অমান্য করে আজকে সংঘর্ষ ঘটায় দু’পক্ষ। যার করনেই অনাকাঙ্ক্ষিত এমন ঘটনা ঘটেছে।
এঘটনায় অনাকাঙ্খিত পরিস্থিতি এড়াতে ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ অবস্থান করছে। পুরে গ্রামে থমথমে পরিস্থিতি বিজার করছে।