উচ্চকণ্ঠ ডেস্ক নিউজ

আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকের পদ হারালেও এখনও পদটি ফিরে পাওয়ার আশায় আছেন গোলাম রাব্বানী। তার দাবি, ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েই তিনি পদ হারিয়েছেন। এজন্য জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘটনাটির তদন্ত দাবি করেছেন তিনি। আর প্রধানমন্ত্রী যদি ওই ঘটনা বুঝতে পারেন, তাহলে আবার পদে পুনর্বহাল হবেন বলে আশা রাখছেন তিনি। আজ সোমবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বাংলা ট্রিবিউনকে এ কথা বলেছেন তিনি।

গোলাম রাব্বানীর অভিযোগ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. ফারজানা ইসলাম তাদের বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করেছেন। সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভনসহ তিনি ষড়যন্ত্রের শিকার হয়ে ছাত্রলীগের পদ হারিয়েছেন।

রাব্বানী বলেন, ‘আমাদের বিরুদ্ধে একটি ষড়যন্ত্র হয়েছে। যত দিন যাচ্ছে তা খোলাসা হচ্ছে। আমরা আমাদের জায়গায় ক্লিয়ার, ইতোমধ্যে তা ক্লিয়ারও করেছি। আর যে আর্থিক লেনদেনের কথা বলা হচ্ছে, সে বিষয়ে ভিসি ম্যাম (জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি) বলে দিয়েছেন যে, টাকা নিয়ে আমাদের সঙ্গে কোনও কথা হয়নি। মূল যে ঘটনা, তা হলো তিনি তার পরিবারকে বাঁচানোর জন্যই ছাত্রলীগকে দোষারোপ করেছেন, তা ইতোমধ্যে অডিও ক্লিপে ক্লিয়ার হচ্ছে। তাই যে ষড়যন্ত্র সেই ষড়যন্ত্রের জাল ছিন্ন হয়ে যাবে।

আপনাদের বিরুদ্ধে কারা ষড়যন্ত্র করছে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমাদের বিরুদ্ধে কারা ষড়যন্ত্র করছে তা তো স্পষ্ট। আমি শ্রদ্ধা রেখে বলতে চাই, ম্যাডাম (জাবি উপাচার্য) আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করেছেন। তিনি নিজের পরিবারের সদস্যদের বাঁচানোর জন্যই মিথ্যার আশ্রয় নিয়েছেন।’

নিজেকে আইনের ছাত্র উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমি চাই এ ঘটনা নিয়ে একটি সুষ্ঠু তদন্ত হোক। তাহলে সব বের হয়ে আসবে। তাতে যদি আমি অপরাধী হই, তাহলে আমার শাস্তি হোক।’

প্রধানমন্ত্রীকে ভুল বোঝানো হয়েছে দাবি করে তিনি বলেন, ‘ আমাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে নেত্রীকে ভুল বোঝানো হয়েছে। আমাদের সঙ্গে অন্যায় হয়েছে। আর নেত্রীর মনে কষ্ট দিয়ে আমরা ছাত্রলীগ করবো না। তাই নিজেই পদত্যাগপত্র নেত্রীর কাছে জমা দিয়েছি।’

ছাত্রলীগে তার পদ হারানোর এ ঘটনাকে নিজেদের ঘরের বিষয় উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ‘ছাত্রলীগ তো আমাদের ঘর। এই ঘরের বিষয় নিয়ে বাম-ডান, ওপর-নিচ কারও তো মাথা ঘামানোর কোনও প্রয়োজন নেই।’

শোভনের পদত্যাগের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘সে পদত্যাগ করেছে এটা তার বিষয়। আমাদের নেত্রী, যিনি আমাদের আস্থার শেষ ঠিকানা। তিনি হয়তো কষ্ট পেয়েছেন। আমরাও বলেছি যে নেত্রীর মনে কষ্ট দিয়ে আমরা ছাত্রলীগ করতে চাই না। তাই আমরা পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছি। এতে যদি নেত্রীর ভুলের জায়গাটা আবার ক্লিয়ার হয়, তখন আবার পদত্যাগপত্র উইথড্রো করে নিতে পারেন। কারণ, তিনি আমাদের সংগঠন থেকে বহিষ্কার করেননি।’

এসময় নিজেদের পক্ষ থেকে তথ্য-প্রমাণ সংরক্ষণের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে বলে জানান তিনি।

উল্লেখ্য, গত শনিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) গণভবনে আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকে ছাত্রলীগের শীর্ষ নেতৃত্বের কর্মকাণ্ড নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন ক্ষমতাসীন দলটির সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এসময় ভ্রাতৃপ্রতীম এই সংগঠনের শীর্ষ দুই পদ থেকে রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন এবং গোলাম রাব্বানীকে বাদ দেওয়ার নির্দেশ দেন তিনি। তার এই নির্দেশ সঙ্গে সঙ্গে কার্যকর করা হয়। পদত্যাগপত্র জমা দেন এই দুই নেতা। আর আওয়ামী লীগ সভাপতির নির্দেশে ও সংগঠনটির গঠনতন্ত্র অনুযায়ী ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্ব দেওয়া হয় প্রথম সহ-সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয়কে। একইসঙ্গে ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পান প্রথম যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য।