জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৭৪তম অধিবেশনে যোগ দিতে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইর্য়কে পৌঁছেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এসময় জন এফ কেনেডি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে প্রধানমন্ত্রীকে বিপুল সংবর্ধনা জানান প্রবাসীরা।
৮ দিনের সরকারি সফরে প্রধানমন্ত্রী নিউইর্য়কের স্থানীয় সময় রবিবার বিকাল সাড়ে ৪ টা ২৩ মিনিটে জন এফ কেনেডি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছানোর পর তাকে স্বাগত জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন, যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন এবং জাতিসংঘে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ও স্থায়ী প্রতিনিধি মাসুদ বিন মোমেন এবং স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতারা।এর আগে সংযুক্ত আরব আমিরাতের রাজধানী আবুধাবীতে একদিনের যাত্রা বিরতির পরে ইত্তেহাদ এয়ার ওয়েজের ইওয়াই ১০১ ফ্লাইটে নিউইর্য়কের পথে যাত্রা করেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী আগামী ২৭ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘে ভাষণ দেবেন। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ২৪ সেপ্টেম্বর ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির দ্বিপাক্ষিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। ২৮ সেপ্টেম্বর তিনি জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের সঙ্গে বৈঠক করবেন।
২৩ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্পেনের প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সানচেজের সঙ্গে কো-চেয়ার হিসেবে জাতিসংঘ ইকোনমিক এ্যান্ড সোসাল কাউন্সিলে (ইসিওএসওসি) একই সঙ্গে ইউনিভার্সাল হেলথ কভারেজ বিষয়ে উচ্চ পর্যায়ের বহুপাক্ষিক প্যানেল বৈঠক পরিচালনা করবেন।
এছাড়া প্রধানমন্ত্রী অছি পরিষদে ইউনিভার্সাল হেলথ কভারেজ বিষয়ে উচ্চ পর্যয়ের বৈঠকের পূর্ণাঙ্গ অধিবেশনে বাংলাদেশের অবস্থান তুলে ধরবেন বলে আশা করা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ হলে ক্লাইমেট এ্যাকশন সামিটে বক্তব্য রাখবেন এবং “রিকগনাইজিং পলিটিক্যাল লিডারশিপ ফর ইম্যুনাইজেশন ইন বাংলাদেশ” বিষয়ক অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন।
২৪ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ প্রধানমন্ত্রী লোটে নিউইয়র্ক প্যালেস হোটেলের কেনেডি রুমে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সাথে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করবেন। শেখ হাসিনা জাতিসংঘ মহাসচিবের স্পেশাল এ্যাডভোকেট ফর ইনক্লুসিভ ফিন্যান্স ফর ডেভেলপমেন্ট কুইন মেক্সিমার সাথে বৈঠক করবেন। তিনি গ্লোবাল কমিশন অন অ্যাডাপ্টেশন আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানে অংশ নেবেন। তিনি নর্থ ডেলিগেট’স লাউঞ্জে জাতিসংঘ মহাসচিব আয়োজিত স্টেট লাঞ্চনেরও অংশ নেবেন।
প্রধানমন্ত্রী ইউএনএইচকি এ কনফারেন্স রুমে বাংলাদেশের স্থায়ী মিশন ও ওআইসি সচিবালয় আয়োজিত মিয়ানামারে রোহিঙ্গা সংখ্যালঘুদের অবস্থার ওপর একটি উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকেও যোগ দিবেন। এছাড়াও তিনি ইউএনএইচকিউ এর ইসিওএসওসি চেম্বারে ‘লিডারশিপ ম্যাটার্স-রিলেভ্যান্স অব মহাত্মা গান্ধী ইন দ্য কন্টেম্পোরারি ওয়ার্ল্ড’ শীর্ষক এক অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন। তিনি লোটে নিউইয়র্ক প্যালেস হোটেলে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আয়োজিত একটি অভ্যর্থনা অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন।
২৫ সেপ্টেম্বর, ট্রাস্টিশিপ কাউন্সিলে টেকসই উন্নয়নের (এসডিজি সম্মেলন) উপর উচ্চ পর্যায়ের রাজনৈতিক ফোরামে ‘লোকালাইজিং দ্য এসডিজিস’ এ প্রধানমন্ত্রী কো-মডারেটরের দায়িত্ব পালন করবেন। প্রধনামন্ত্রী কাউন্সিল অন ফরেন রিলেশনস এ ‘এ কনভারসেশন উইথ অনারেবল প্রাইম মিনিস্টার শেখ হাসিনা’ শীর্ষ একটি অনুষ্ঠানেও অংশ নেবেন।
একই দিনে লোটে নিউইয়র্ক প্যালেস হোটেলে বাইলেটারেল মিটিং রুমে তিনি অস্ট্রেলিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী এবং সকলের জন্য স্যানিটেশন ও পানির সভাপতি কেভিন রাডের সঙ্গে বৈঠক করবেন। এছাড়াও তিনি বাংলাদেশ হাউসে একটি নৈশভোজে অংশগ্রহণ করবেন।
২৬ সেপ্টেম্বর লোটে নিউইয়র্ক প্যালেস হোটেলের বাইটারেল মিটিং রুমে বাংলাদেশ প্রধানমন্ত্রী ইক্সোনমোবাইল এলএনজি মার্কেট ডেভেলপমেন্ট ইনক এর চেয়ারম্যান এলেক্স ভি. ভলকোভ, ইউনেস্কোর সাবেক মহাপরিচালক ইরিনা বোকোভা, বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশনের কো-চেয়ার বিল গেটস এবং আইসিসি প্রোসিকিউটর ফাতোউ বেনসোউদার সাথে বৈঠক করবেন।
শেখ হাসিনা একই দিনে লোটে নিউইয়র্ক প্যালেসের হোলমেসে ইউএস চেম্বার অব কমার্স আয়োজিত মধ্যাহ্ন ভোজে অংশ নেবেন। এছাড়াও তিনি ইউনিসেফ হাউসের লাবৌউইসে হলে ইউনিসেফ আয়োজিত ‘এক ইভেনিং উইথ প্রাইম মিনিস্টার শেখ হাসিনা’ অনুষ্ঠানে অংশ নেবেন।
২৭ সেপ্টেম্বর ইউএনএইচকিউ এর কনফারেন্স রুম ১ এ শেখ হাসিনা বাংলাদেশের স্থায়ী মিশন আয়োজিত ‘সাইটেইনেবেল ইউনিভার্সেল হেল্থ কভারেজ : কমপ্রেভেনসিভ প্রাইমারি কেয়ার ইনক্লুসিভ অব মেন্টাল হেল্থ অ্যান্ড ডিজেবিলিটিজ’ শীর্ষক একটি উচ্চ পর্যায়ের অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন। প্রধানমন্ত্রী একই দিন জাতিসংঘ সাধারণ সম্মেলনের ৭৪তম বার্ষিক সাধারণ বিতর্কে বক্তৃতা দিবেন।
২৮ সেপ্টেম্বর শেখ হাসিনা নিউইয়র্কে বাংলাদেশের স্থায়ী মিশনে প্রেস ব্রিফিং করবেন এবং এছাড়াও তিনি নিউইয়র্কের হোটেল ম্যারিয়ট মারকুইসে বাংলাদেশি কমিউনিটি আয়োজিত একটি অভ্যর্থনা অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন।
জাতিসংঘ সচিবালয়ে বাংলাদেশ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের সাথে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে বসবেন। এছাড়াও প্রধানমন্ত্রী ভয়েস অব আমেরিকা, ওয়াশিংটন পোস্ট ও ওয়াল স্ট্রিট জার্নালসহ আন্তর্জাতিক সুপরিচিত গণমাধ্যমকে সাক্ষাৎকার দেবেন।
২৯ সেপ্টেম্বর স্থানীয় সময় রাত ৯টায় বাংলাদেশ প্রধানমন্ত্রী ইত্তেহাদ এয়ারওয়েজের একটি ফ্লাইটে করে নিউইয়র্ক থেকে ঢাকার উদ্দেশে রওয়ানা দেবেন। তিনি আবুধাবি হয়ে ঢাকায় পৌঁছাবেন।
৩০ সেপ্টেম্বর স্থানীয় সময় রাত ৮টায় শেখ হাসিনা আবুধাবি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করবেন। প্রধানমন্ত্রী আবুধাবি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে স্থানীয় সময় রাত ১০টা ৪৫ মিনিটে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ভিভিআইপি বিমানযোগে ঢাকার উদ্দেশে রওয়ানা দেবেন।
১ অক্টোবর ভোরে ফ্লাইটটি হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করবে।