বয়স মাত্র ১৫, এরই মধ্যে অভিষেক হয়ে গেছে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে। নিজের প্রথম ম্যাচে রানের খাতা খুলতে ব্যর্থ হলেও, দ্বিতীয় ম্যাচেই রেখেছেন দলের জয়ে বড় অবদান। তার খেলা ৪৬ রানের ইনিংসে ভর করেই দক্ষিণ আফ্রিকা নারী ক্রিকেট দলকে ৫১ রানের বড় ব্যবধানে হারিয়েছে ভারতীয় নারীরা।
ইনিংসের সূচনা করতে নেমে মাত্র ৩৩ বলে ৫ চার ও ২ ছয়ের মারে ৪৬ রানের ইনিংস খেলে সাড়া ফেলেছেন শেফালি ভার্মা। তার খেলার ধরন মুগ্ধ করেছে সবাইকে। প্রত্যেকের আশা ভারতীয় নারী দলের হয়ে দীর্ঘ সময় খেলবেন ১৫ বছর বয়সী শেফালি।
অথচ ক্রিকেট শুরুর সময়টা বেশ চমকপ্রদ ছিলো তার জন্য। একজন মেয়ে হয়ে ছেলেদের ক্রিকেট খেলার আগ্রহ প্রকাশ করায় কখনোই সমর্থন পাননি বাইরের কারোর। তবে বাবা সঞ্জয় ভার্মার সমান আগ্রহ থাকার কারণেই এতদূর আসতে পেরেছেন শেফালি।
এ যাত্রায় ছেলেদের সঙ্গে অনুশীলন করার জন্য শৈশবেই নিজের বড় চুলগুলো কেটে ছোট করে ফেলতে হয়েছে শেফালিকে। যার ফলে কেউ বুঝতে পারেননি শেফালি ছেলে নাকি মেয়ে এবং খেলতে দিয়েছে তাদের সঙ্গে। এ গল্প জানা গিয়েছে শেফালির বাবা সঞ্জয়ের মুখ থেকেই।
যিনি বলেন, ‘যখন ওর বয়স ৮-৯ হবেম তখন আমি প্রতি রোববার ওকে পাড়ার মাঠে খেলতে নিয়ে যেতাম। কিন্তু বেশিরভাগই শেফালিকে নিতে চাইতো না। ওরা বলতো যে শেফালি ব্যথা পাবে। অথচ আমি ওর বাবা হয়েও বলতাম যে ব্যথা পেলে পাক, খেলায় নাও। তবু কাজ হতো না। এরপর ওর চুল কেটে বয়কাট দেয়া হলো। তখন কেউই বুঝতো শেফালি ছেলে নাকি মেয়ে। এরপর থেকেই প্রতি সপ্তাহে খেলতে পারতো সে।’
পাড়ার ক্রিকেটে খেলার সমস্যা সমাধান হলেও, হরিয়ানার বেশিরভাগ পেশাদার ক্রিকেট ক্লাবেই ছিলো না মেয়েদের অনুশীলনের সুযোগ। অনেক খোঁজাখুঁজির পর বাড়ি থেকে বেশ দূরে একটি কম্বাইন্ড ক্রিকেট ক্লাবের খোঁজ পান সঞ্জয়। যেখানে ভর্তি করিয়ে দেন নিজের মেয়েকে।
সেসব স্মৃতি মনে করে সঞ্জয় বলে, ‘শহরের বেশিরভাগ ক্লাবেই মেয়েদের নিত না। অনেক খুঁজে আমি একটা ক্লাব পাই, যেখানে ছেলে-মেয়েরা একসঙ্গে খেলতে। সেটা আমাদের বাড়ি থেকে প্রায় ৮ কিমি দূরে ছিলো। প্রতিদিন নিজে সাইকেল চালিয়ে অনুশীলনে যেত সে।’