ঘটনাস্থলে ভিসির তাৎক্ষণিক যাওয়া উচিত ছিল
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ ঘটনায় কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘এই ধরনের মর্মান্তিক ঘটনা যারা ঘটিয়েছে, তাদের কাউকেই ছাড় দেওয়া হবে না, শাস্তি পেতেই হবে। সবার সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করার নির্দেশ দিয়েছি।’
আবরার হত্যার এক দিন পর বুয়েট উপাচার্য অধ্যাপক সাইফুল ইসলামের ক্যাম্পাসে উপস্থিতি নিয়েও উষ্মা প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘উনি কেমন ভিসি? একটা ছাত্র মারা গেল আর এতটা সময় তিনি ক্যাম্পাসের বাইরে ছিলেন।’ উপাচার্যের তাত্ক্ষণিক ঘটনাস্থলে যাওয়া উচিত ছিল বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।
গতকাল মঙ্গলবার রাতে প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে আওয়ামী লীগের নেতাদের সঙ্গে এক অনানুষ্ঠানিক বৈঠকে শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন।
বৈঠকে উপস্থিত একাধিক নেতা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তাঁদের ভাষ্য অনুযায়ী, পুরো বৈঠকে আবেগঘন পরিবেশ ছিল।
আওয়ামী লীগের ওই নেতারা বলেন যে বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ফেসবুকে একটা স্ট্যাটাস দেওয়াকে কেন্দ্র করে একটি ছেলেকে এভাবে পিটিয়ে মেরে ফেলা হবে, সেটা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। এই ঘটনায় দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া হবে।
বৈঠক সূত্রে জানা যায়, আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচাযকে বুয়েটে চলমান আন্দোলন নিয়ে ব্রিফ করেন। ছাত্রলীগকে উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। আজ সকাল ১১টায় মধুর ক্যান্টিনে সংবাদ সম্মেলন করবেন বলে জানিয়েছেন ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য।
শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘এ বিষয়ে আমরা কঠোর। ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের দ্রুততম সময়ের মধ্যেই গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মামলা দায়ের করা হয়েছে। যারা জড়িত ছিল তাদের ছাত্রলীগ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। এ রকম তাত্ক্ষণিক ব্যবস্থা কোনো সরকারের সময় নেওয়া হয়নি। আইন অনুযায়ী এই ঘটনার বিচার হবে।’
বুয়েটে চলমান আন্দোলনকে যাতে কেউ রাজনৈতিক রং দিতে না পারে সে ব্যাপারে ছাত্রলীগকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেছেন, আবরার হত্যার ঘটনায় সরকারের পক্ষ থেকে যা যা করণীয় তা তা করা হয়েছে। অস্ত্রবাজরা এখন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নেই। এসব যাদের ভালো লাগছে না তারা ক্যাম্পাসকে উত্তপ্ত করার চেষ্টা করতে পারে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ধরেছি যখন সবাইকে ধরব। কাউকে ছাড় দেব না।’
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ, জাহাঙ্গীর কবির নানক, মো. আব্দুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক বি এম মোজাম্মেল হক, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, এ কে এম এনামুল হক শামীম, খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয়, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য।