বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যার দাবিতে আজ শনিবারও আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন বুয়েট শিক্ষার্থীরা। আবরারের হত্যার বিচারসহ ১০ দফা দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে গেলেও শিক্ষার্থীরা গতকাল রাতে জরুরি ভিত্তিতে পাঁচ দফা দাবি বাস্তবায়নের তাগিদ দিয়েছেন। অন্যথায় ভর্তি পরীক্ষা বন্ধ করে দেওয়া হবে বলে ঘোষণা দিয়েছেন তারা।
শিক্ষার্থীরা শনিবার দুপুর পৌনে ১২ টার দিকে বুয়েটের শহীদ মিনার চত্বরে সমবেত হয়ে বিক্ষোভ শুরু করে।
পাঁচ দফা দাবি বাস্তবায়ন হলে ১৪ অক্টোবর ভর্তি পরীক্ষা আয়োজন করা সম্ভব হবে বলে ঘোষণা দিয়েছেন আন্দোলনকারীরা। শুক্রবার রাতে বুয়েট ভিসির সঙ্গে বৈঠকের পর শিক্ষার্থীরা এ ঘোষণা দেন।
আন্দোলনকারীরা বলেন, ১০ দফা দাবিতে আন্দোলন চলবে। তবে, ভিসি স্যারের অনুরোধ ও সারা দেশের ভর্তিচ্ছুদের কথা চিন্তা করে পাঁচ দফা দাবি বাস্তবায়নের শর্ত দেয়া হয়েছে।
শিক্ষার্থীদের জরুরি পাঁচ দফা-
১. আবরার ফাহাদ হত্যাকাণ্ডে জড়িত সবাইকে এখনই সাময়িক বহিষ্কার করতে হবে। যাদের বিরুদ্ধে চার্জশিট হবে, তাদের স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হবে মর্মে বুয়েট প্রশাসন থেকে নোটিশ জারি করতে হবে।
২. আবরার হত্যা মামলার সব খরচ বুয়েট প্রশাসন বহন করবে এবং তার পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দিতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বাধ্য থাকবে, সেটাও নোটিশে লেখা থাকবে।
৩. বুয়েটে সাংগঠনিক রাজনীতি নিষিদ্ধ করে সকল হল থেকে অবৈধ ছাত্র উৎখাত করতে হবে। অবৈধভাবে হলের সিট দখলকারীদের উৎখাত করতে হবে। সাংগঠনিক ছাত্র সংগঠনগুলোর অফিস রুম সিলগালা করতে হবে। সাংগঠনিক ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধের পর ভবিষ্যতে কেউ যদি এ রকম সাংগঠনিক কার্যক্রমে জড়িত হয় কিংবা কোনো রকম ছাত্র নির্যাতনে জড়িত হয়, তাহলে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কী ব্যবস্থা নেবে- তা বিস্তারিত জানিয়ে নোটিশ জারি করতে হবে। পরবর্তীতে এটি যে অর্ডিন্যান্সে অন্তর্ভুক্ত থাকবে, তা নোটিশে উল্লেখ থাকতে হবে। পাশাপাশি, এ ধরনের কার্যক্রম তদারকির জন্য একটি কমিটি করতে হবে এবং কমিটি গঠনের বিষয়টিও নোটিশে উল্লেখ করতে হবে।
৪. বুয়েটে পূর্বে ঘটে যাওয়া সকল ছাত্র নির্যাতন, হয়রানি, র্যাগিংয়ের ঘটনা এবং ভবিষ্যতে এরকম ঘটনা প্রকাশের জন্য বিআইআইএস অ্যাকাউন্টে একটি কমন প্ল্যাটফর্ম থাকতে হবে। বিষয়টি মনিটরিংয়ের মাধ্যমে শাস্তি বিধানের জন্য একটি কমিটি থাকতে হবে। বিষয়টি নোটিশের মাধ্যমে নিশ্চিত করতে হবে।
৫. প্রত্যেক হলের সকল ফ্লোরের দুই পাশে সিসি ক্যামেরা যুক্ত করতে হবে এবং এই সিসিটিভি ফুটেজ সার্বক্ষণিক মনিটরিংয়ের ব্যবস্থা করা হবে- এই মর্মে নোটিস আসতে হবে।
আন্দোলনকারীরা বলেন, এসব দাবি পূরণ না হলে বোঝা যাবে বুয়েটে নতুন করে ভর্তি পরীক্ষার আয়োজনের পরিবেশ হয়নি। তবে আমাদের ১০ দফা দাবিতে আন্দোলন চলবে। শুধুমাত্র ভর্তি পরীক্ষার কথা বিবেচনা করে পাঁচ দফা বাস্তবায়নের দাবি জানানো হয়েছে। এসব দাবি পূরণ না হলে ভর্তি পরীক্ষা স্থগিত থাকবে।