থমে তুলা উত্তোলন, তুলা থেকে সুতা, সুতা থেকে কোমর তাঁতের মাধ্যমে রাতভর বুনানো হয় কাপড়। সেই কাপড় সেলাই করে দান করা হয় কঠিন চীবরটি। এ লক্ষ্যে বুদ্ধ মূর্তি ও সংঘ দান, অষ্ট পরিষ্কার, কল্পতরুসহ নানা সামগ্রী দান করা হয়।
এ সময় বিহার প্রাঙ্গণে চলে ঊষা বন্দনা, পঞ্চশীল প্রার্থনা, প্রদীপ পূজাসহ বিভিন্ন ধর্মীয় আচার। এ ছাড়া ভান্তে কর্তৃক প্রবজ্জা গ্রহণ, পরজন্মে জ্ঞানলাভের উদ্দেশ্যে পিদিমা বা কল্পতরুতে বিভিন্ন উপহার দেন ধর্মপ্রাণ বৌদ্ধধর্মাবলম্বীরা। সন্ধ্যায় প্রদীপ প্রজ্বালন ও উড়ানো হয় অসংখ্য ফানুস।
গতকাল শুক্রবার এভাবেই শান্তিপুর অরণ্য কুটিরে উদযাপন করা হয় কঠিন চীবর দানোৎসব।পাহাড়ের বিহারে বিহারে বৌদ্ধধর্মাবলম্বীদের কঠিন চীবরদান অনুষ্ঠানটি চলছে মাসব্যাপী। গতকাল জেলারপানছড়ি শান্তিপুর অরণ্য কুটিরে
১৩তম অনুষ্ঠিত হয় কঠিন চীবর দান। এ লক্ষ্যে গত বৃহস্পতিবার বিকাল ৫টায় পানছড়ি শান্তিপুর অরণ্য কুটিরের অধ্যক্ষ শ্রীমৎ শাসন রক্ষিত মহাস্থবির ‘বেইন বুনা’ শুভ উদ্বোধন করেন।
গতকালও গৌতম বুদ্ধের অমৃতময় বাণী ও স্বধর্ম দেশনা দেন শাসন রক্ষিত মহাস্থবির, রাঙামাটি রাজবন বিহারের বৌদ্ধভিক্ষু দেবানন্দ মহাস্থবির, খাগড়াছড়ির ক্ষান্তিপুর বনকুটির থেকে আসা আর্যমিত্র মহাস্থবির প্রমুখ।
এ ছাড়াও বক্তব্য দেন তিন পার্বত্য জেলার সংরক্ষিত মহিলা আসনের সাংসদ বাসন্তি চাকমা, সাবেক উপমন্ত্রী মুনি স্বপন দেওয়ান, শান্তিপুর অরণ্য কুটির উন্নয়ন কমিটির সভাপতি অধ্যক্ষ সমীর দত্ত চাকমা প্রমুখ।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন খাগড়াছড়ির আর্মি রিজিয়নের প্রতিনিধি ক্যাপ্টেন মো. মাহমুদ ও ক্যাপ্টেন আরিফুল রহমান, পানছড়ি উপজেলা পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান চন্দ্র দেব চাকমা, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান মনিতা ত্রিপুরা প্রমুখ।
ধর্মসভা ও পঞ্চশীল গ্রহণের পর ‘বুদ্ধের অহিংসা বাণী ছড়িয়ে যাক মানুষের মাঝে এবং পুণ্যে ও জ্ঞানের মাধ্যমে সামনের দিনগুলোতে শান্তি ফিরে আসুক সবার মাঝে’ এমন প্রার্থনার মধ্য দিয়ে শেষ হয় চীবর দান উৎসব।