ফেনীর সোনাগাজীর মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে পুড়িয়ে হত্যা মামলায় ১৬ জনের ফাঁসির রায় দিয়েছেন আদালত। তবে মৃতুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা আগামী সাত কার্যদিবসের মধ্যে আপিল করার সুযোগ পাবেন।

আজ বৃস্পতিবার বেলা ১১টা ১৮ মিনিটে ফেনীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মামুনুর রশিদ নুসরাত হত্যা মামলায় এ ফাঁসির রায় ঘোষণা করেন। রায়ে আপিলের জন্য সাত কার্যদিবস সময় দিয়েছেন আদালত।

রায় ঘোষণার সময় বিচারক বলেন, ‘আগামী সাত কার্যদিবেসের মধ্যে আসামিরা হাইকোর্টের আপিল বিভাগে আপিল করতে পারবেন। ’

আসামিপক্ষের আইনজীবী গিয়াস উদ্দীন নান্নু গণমাধ্যমকে বলেন, এক সপ্তাহের মধ্যে তারা হাইকোর্টের আপিল বিভাগে আবেদন করবেন।

রায়ে দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন, সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল (ডিগ্রি) মাদ্রাসার বরখাস্ত হওয়া অধ্যক্ষ সিরাজ উদদৌলা, সোনাগাজী উপজেলা আওয়ামী লীগের তৎকালীন সভাপতি রুহুল আমিন, সোনাগাজী পৌরসভার কাউন্সিলর মাকসুদুল আলম, মাদ্রাসার শিক্ষক আবদুল কাদের, প্রভাষক আফসার উদ্দিন, মাদ্রাসার ছাত্র নুর উদ্দিন, শাহাদাত হোসেন শামীম, সাইফুর রহমান মোহাম্মদ যোবায়ের, জাবেদ হোসেন ওরফে সাখাওয়াত হোসেন জাবেদ, কামরুন নাহার মনি, উম্মে সুলতানা পপি ওরফে তুহিন, আবদুর রহিম শরিফ, ইফতেখার উদ্দিন রানা, ইমরান হোসেন মামুন, মোহাম্মদ শামীম ও মহি উদ্দিন শাকিল।

গত ২৭ মার্চ সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল (ডিগ্রি) মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদদৌলা নিজ কক্ষে ডেকে নিয়ে নুসরাতের শ্লীলতাহানি করেন। এ ঘটনায় তার মা শিরিনা আক্তার বাদী হয়ে সোনাগাজী থানায় মামলা করলে অধ্যক্ষকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। মামলা তুলে না নেওয়ায় ৬ এপ্রিল মাদ্রাসার প্রশাসনিক ভবনের ছাদে ডেকে নিয়ে নুসরাতের হাত-পা বেঁধে গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেয় বোরকা পরা পাঁচ দুর্বৃত্ত। ১০ এপ্রিল ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় অগ্নিদগ্ধ নুসরাতের মৃত্যু হয়।

এ ঘটনায় নুসরাতের বড় ভাই মাহমুদুল হাসান (নোমান) সোনাগাজী থানায় মামলা করেন। পরে মামলাটি হত্যা মামলায় রূপান্তরিত হয়। গত ২৮ মে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) তদন্ত শেষে মাদ্রাসার অধ্যক্ষসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে আদালতে ৮৬৯ পৃষ্ঠার অভিযোগপত্র দাখিল করে।