ভারত সফরে দল সাজাতে ‘গলদ্ঘর্ম’ নির্বাচকরা। প্রথমে সাঈফউদ্দিনের ইনজুরি, পরে তামিম ইকবালের পারিবারিক কারণে নিজ থেকে সরে দাঁড়ানো- দু’য়ে মিলে ক্রিকেটার নির্বাচনে খানিক বেকায়দায় মিনহাজুল আবেদিন-হাবিবুল বাশাররা।

টি-টোয়েন্টিতে তামিমের বিকল্প হিসেবে ইমরুল কায়েসকে নেয়া হলেও, পেস বোলিং অলরাউন্ডার সাঈফউদ্দিনের জায়গায় এখনও নেয়া হয়নি কাউকে। সাঈফের বদলে কে ঢুকবেন দলে? টেস্টে তামিম ইকবালের বিকল্প হিসেবে কাকে বিবেচনায় আনা হবে?- এ নিয়ে জল্পনা কল্পনার শেষ নেই।

এর মধ্যে গতকাল (রোববার) হয়ে গেছে প্রথম টি-টোয়েন্টি প্রস্তুতি ম্যাচ। সে উপলক্ষে জাতীয় লিগ চলাকালীন দশ ক্রিকেটারকে উড়িয়ে আনা হয়েছে রাজধানীতে এবং তারা প্রথমদিন খেলেছেনও। সেই দশজনের একজন হলেন বাঁহাতি পেস বোলিং অলরাউন্ডার আবু হায়দার রনি।

এদিকে নির্বাচকরা মুখে কুলুপ এঁটে বসে আছেন। সম্ভাব্য বিকল্প নিয়ে আকার ইঙ্গিতেও কোনো কথা বলছেন না মিনহাজুল আবেদিন-হাবিবুল বাশারের কেউ। তবে তাদের ঘনিষ্ঠ সূত্র নিশ্চিত করেছে একদম নতুন কারো অন্তর্ভুক্তির সম্ভাবনা খুব কম। প্রতিপক্ষ ভারত, প্রচণ্ড শক্তিশালী আবার খেলাও তাদেরই মাটিতে।

তাই একদম আনকোরা নবীন কাউকে সুযোগ দিতে গিয়ে খানিক দ্বিধায় নির্বাচকরা। সে কারণেই ঘুরে ফিরে পুরনো ও পরীক্ষিতদের মধ্য থেকেই কাউকে নেয়ার পক্ষে তারা। আর তাই ভাবা হচ্ছে, পেস বোলিং অলরাউন্ডার সাঈফউদ্দিনের জায়গায় বাঁহাতি পেসার কাম লেট অর্ডার ব্যাটসম্যান আবু হায়দার রনির কথা।

সম্ভবত তাকেই, দলে দেখা যাবে। রোববারের প্রস্তুতি ম্যাচে স্পিনারদের সাফল্যের মাঝে একমাত্র পেসার হিসেবে সমীহ জাগানো বোলিং করেছেন রনি। সবুজ দলের বিপক্ষে ২৯ রানে নিয়েছেন ৩ উইকেট। জানান দিয়েছেন, জাতীয় দলের ডাক এলে তিনি প্রস্তুত আছেন।

ওদিকে টেস্ট সিরিজে তামিমের বিকল্প হিসেবে ধারণা করা হচ্ছিল তরুণ ওপেনার সাঈফ হাসানের কথা। এইচপি, ‘এ’ দল এবং ইমার্জিং দলের হয়ে নিজেকে মেলে ধরা সাঈফ জাতীয় লিগেও দুর্দান্ত পারফর্ম করছেন। ঢাকা বিভাগের হয়ে দ্বিতীয় রাউন্ডের ম্যাচে খেলেছেন ক্যারিয়ার সর্বোচ্চ ২২০ রানের ইনিংস। তৃতীয় রাউন্ডেও প্রথম ইনিংসে তার ব্যাট থেকে এসেছে ৭২ রানের ঝকঝকে ইনিংস।

ফর্মের বিবেচনায় সাঈফই হতে তামিমের সম্ভাব্য বিকল্প। কিন্তু শেষপর্যন্ত সাঈফকে নেয়া হবে কি না তা নিয়ে রয়েছে সংশয়। ভারতের মাটিতে উমেশ যাদব, ইশান্ত শর্মা, মোহাম্মদ শামি, রবিচন্দ্রন অশ্বিন, কুলদ্বীপ যাদব ও রবিন্দ্র জাদেজার মতো বিশ্বমানের বোলারদের বিপক্ষে সাঈফের মতো অনভিজ্ঞ তরুণকে সুযোগ দেয়া নিয়ে রীতিমতো দ্বিধা-দ্বন্দ্বে ভুগছেন নির্বাচকরা।

তাই শেষপর্যন্ত সাঈফকে রেখে পুরনো কাউকে সুযোগ দেয়ার কথাই ভাবা হচ্ছে বেশি। সেই পুরনো তালিকায় ইমরুল কায়েসের নাম আছে। এবারের জাতীয় লিগে এ অভিজ্ঞ বাঁহাতি ওপেনারও এরই মধ্যে হাঁকিয়েছেন একটি ডাবল সেঞ্চুরি। অন্য আরেক ইনিংসে করেছেন ৯৩ রান। পাশাপাশি আরেক টপঅর্ডার এনামুল হক বিজয়ও সেঞ্চুরি করেছেন।

তবে তার ব্যাপারে নির্বাচকদের উৎসাহ খুব কম। তাই বিজয়ের দলে ঢোকার সম্ভাবনা শূন্যের কোঠায়। বরং ইমরুল এগিয়ে আছেন। হয়তো তামিমের বিকল্প হিসেবে লিটন দাস-সাদমান ইসলামের পাশাপাশি ইমরুলকে দেখা যেতে পারে। বিকল্প হিসেবে সৌম্য সরকারের সম্ভাবনাও আছে। তার কথা উড়িয়ে দেয়া যায় না।