বৈশ্বিক উষ্ণায়নের প্রভাবে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বাড়ছে দিন দিন। আর সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা যতই বাড়বে, ততই বিভিন্ন দেশের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হবে। পানিতে তলিয়ে নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে সমুদ্র তীরবর্তী অঞ্চলগুলো।
এই ঝুঁকিতে প্রায় শীর্ষে রয়েছে বিশ্বের বৃহত্তম ব-দ্বীপ বাংলাদেশ। ভারত, চীন এবং জাপানের নামও রয়েছে ঝুঁকিপূর্ণ দেশের তালিকায়।
সোমবার থাইল্যান্ডের ব্যাংককে আয়োজিত ৩৫তম আসিয়ান সম্মেলনে এমন তথ্য তুলে ধরেন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতিয়েরেস।
তিনি বলেন, ২০৫০ সালের মধ্যে অন্তত ৩০ কোটি মানুষ অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুহারা হবেন শুধু জলবায়ু বিপর্যয়ের কারণে। এর দায় কেউ এড়াতে পারে না বলে মন্তব্য করেন মহাসচিব। এসময় সম্ভাব্য ক্ষতিগ্রস্তদের একটি তালিকাও তিনি উপস্থাপন করেন।
এতে বলা হয়, ক্ষতিগ্রস্তদের সিংহভাগ হবে চীনের। যার সংখ্যা অন্তত নয় কোটি ৩০ লাখ। বাংলাদেশে চার কোটি ২০ লাখ মানুষের ক্ষতি হবে। ভারতে তিন কোটি ৬০ লাখ, ইন্দোনেশিয়ায় দুই কোটি ৩০ লাখ মানুষের ক্ষতি হতে পারে। এছাড়া বাকিরা জাপানসহ এশিয়ারই বিভিন্ন দেশের মানুষ। তবে জনসংখ্যা হিসেবে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকির মুখে বাংলাদেশই।
গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে গুতিয়েরেস বলেন, এটি সত্যি যে, বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধির সবচেয়ে ক্ষতিকর প্রভাবের শিকার হবে দক্ষিণ এশিয়া। তুলনামূলকভাবে নিচু এলাকাগুলো এই মহাদেশেই পড়েছে। এসব দেশের অন্তত ১০ শতাংশ মানুষ আগামী ৩০ বছরে চরম ক্ষতির সম্মুখীন হতে যাচ্ছেন।
সম্প্রতি বিজ্ঞান বিষয়ক কিছু সাময়িকীতে প্রকাশিত প্রতিবেদনের উদাহরণ টেনে জাতিসংঘ মহাসচিব বলেন, এই শতাব্দীতে কার্বণ নিঃসরণের হার কমিয়ে না নিয়ে আসলে বৈশ্বিক তাপমাত্রা এক দশমিক পাঁচ ডিগ্রি বৃদ্ধি পাবে। এছাড়া আগামী ১০ বছরে এই হার ৪৫ শতাংশ না কমালে বিপর্যয় অবধারিত। এ নিয়ে আসিয়ান সম্মেলনে যোগ দেওয়া নেতাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করার চেষ্টা করেন তিনি।
কয়লার ওপর নির্ভর না করে প্রযুক্তির উন্নয়নে ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে সব কাজে জৈব-পদ্ধতি ব্যবহারের পরামর্শ দেন গুতিয়েরেস।