সরাসরি রাজনীতিতে না এসেও দেশের তরুণদের স্বপ্নের প্রতীক হয়ে উঠেছেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দৌহিত্র, আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয়। বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হার্ভাড বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়া করা জয় ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়তে অভাবনীয় ভূমিকা রেখেছেন। তাঁকে নিয়ে আগামীর স্বপ্ন দেখেন দেশের লাখ লাখ শিক্ষিত তরুণ-তরুণী।
আওয়ামী লীগের জাতীয় কাউন্সিল হচ্ছে আগামী ২০-২১ ডিসেম্বর। এর এক মাস আগে গত ১১ নভেম্বর রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলা শাখা কমিটিতে তাকে প্রাথমিক সদস্য করা হয়েছে। উপজেলা কমিটিতে সদস্য করার পর সজীব ওয়াজেদ জয়কে নিয়ে সর্বত্রই আলোচনা তিনি কী রাজনীতিতে নামছেন? এবার কাউন্সিলে কি দলের গুরুত্বপূর্ণ কোনো পদ আসছেন? আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কেন্দ্র থেকে শুরু করে তৃণমূল পর্যায়ের নেতারা চাচ্ছেন সজীব ওয়াজেদ রাজনীতিতে আসুক। দলটির অঙ্গ সংগঠন যুবলীগ, ছাত্রলীগ, যুব মহিলা লীগের নেতাকর্মীরা অনেক দিন থেকে জয়ের নেতৃত্বেই আগামীর স্বপ্ন দেখছেন। কিন্তু সজীব ওয়াজেদ জয় রাজনীতিতে না এসেও প্রধানমন্ত্রীর তথ্য-প্রযুক্তি উপদেষ্টার দায়িত্ব পালন করছেন। আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতারা এ নিয়ে প্রকাশ্যে কথা বলতে না চাইলেও তারা বলছেন, জয় রাজনীতিতে এলে আওয়ামী লীগের আগামীর নেতৃত্বের সঙ্কট কেটে যাবে। দুর্নীতিবিরোধী শুদ্ধি অভিযানের পর দলকে পরিচ্ছন্ন এবং ক্লিন ইমেজের নেতাদের সমন্বয়ে এগিয়ে নেয়া সহজ হবে। দেশে বর্তমানে রাজনীতির দুটি ধারা দৃশ্যমান হলেও প্রকৃতপক্ষে বাংলাদেশে যে গণতান্ত্রিক ধারা বহমান তা বঙ্গবন্ধুর পরিবারকে কেন্দ্র করেই আবর্তিত। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং তাঁরই যোগ্য উত্তরসুরি হিসেবে সজীব ওয়াজেদ জয়; এই তৃতীয় প্রজন্মের নতুন নেতৃত্বের প্রতি নেতাকর্মীদের আকর্ষণ এখন কেন্দ্রীভূত।
’৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে নির্মমভাবে হত্যার পর আওয়ামী লীগ এবং বাংলাদেশে নেতৃত্বের বিরাট শূন্যতার সৃষ্টি হয়েছিল। এ সময় দলটিতে নানা ধারা উপধারার সৃষ্টি হয়। ’৮১ সালে দেশে ফিরে এসে শেখ হাসিনা দলের হাল ধরে আওয়ামী লীগকে পুনর্গঠন করেন। ২১ বছর পর ’৯৬ সালে দলকে তিনি আবার ক্ষমতায় নিয়ে আসেন। শেখ হাসিনার দূরদৃষ্টি সম্পন্ন সুযোগ্য নেতৃত্বের কারণে এটা সম্ভব হয়েছে। সজীব ওয়াজেদ জয়ের মধ্যেও নানা এবং মায়ের ছায়া আর্বতৃত হচ্ছে। আগামীতে সজীব ওয়াজেদ জয়ের মধ্যেও সেই সম্ভাবনা দেখছেন আওয়ামী লীগের সর্বস্তরের নেতাকর্মী। সরাসরি রাজনীতি না করেও দেশের বিপুল সংখ্যক তরুণ-তরুণীর নেতা হিসেবে ইতোমধ্যে আবির্ভূত হয়ে জয় গোটা বিশ্বকে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন।
আওয়ামী লীগের নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে তারা প্রত্যাশা করছেন প্রধানমন্ত্রীর তথ্য-প্রযুক্তি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় আওয়ামী লীগের আসন্ন ২১তম জাতীয় সম্মেলনের মাধ্যমে দলের নেতৃত্বে আসুক। শেখ হাসিনা সভাপতি এবং জয় দলের যে কোনো গুরুত্বপূর্ণ পদে আসুক এটাই সবার প্রত্যাশা। এ নিয়ে দল ও দলের বাইরে বেশ আলোচনা চলছে। বিগত ২০১৬ সালে দলের ২০তম জাতীয় সম্মেলনের সময়ও সজীব ওয়াজেদ জয়ের রাজনীতিতে নামা নিয়ে ব্যাপক আলোচনা ছিল।
সজীব ওয়াজেদ জয়কে রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য করা হয়েছে। উপমহাদেশের রাজনৈতিক পরিবারের ইতিহাস থেকে জানা যায়, ভারতের কংগ্রেসের সাবেক সভাপতি রাহুল গান্ধী সরাসরি কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক হয়েছিলেন। এর আগে রাহুল গান্ধীর বাবা রাজীব গান্ধীও সরাসরি কংগ্রেসের সভাপতি হয়েছিলেন। এছাড়া পাকিস্তানে ‘পাকিস্তান পিপলস পার্টির’ সভাপতি বিলাওয়াল ভুট্টোও ২০০৭ সালে মা বেনজির ভুট্টোর মারা যাওয়ার পর সরাসরি দলের সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন। এদিকে বাংলাদেশেও তারেক রহমান প্রথমে বিএনপির বগুড়া জেলার গাবতলী উপজেলার সদস্য, তারপর কেন্দ্রীয় কমিটির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব, পরে ভাইস চেয়ারম্যান থেকে এখন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করছেন।
রাজনৈতিক পরিবারের ইতিহাস ও ঐতিহ্য অনুসারে সজীব ওয়াজেদ জয়ও আওয়ামী লীগের শীর্ষ পদে আসবেন বলেই দলের নেতাকর্মীদের প্রত্যাশা। এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সময়োপযোগী ও যথাযত সিদ্ধান্ত নেবেন এবং তার সিদ্ধান্ত দলের সবাই স্বাগত জানাবেন।
আওয়ামী লীগ নেতাদের মতে, উপমহাদেশের অন্যান্য রাজনৈতিক পরিবার ও তাদের উত্তরসূরীদের চাইতে সজীব ওয়াজেদ জয়ের অবস্থান সম্পূর্ণ ভিন্ন। রাহুল গান্ধী বা বিলাওয়াল ভুট্টো দুইজনই পারিবারিক উত্তরসূরী হিসেবে দলের পদ পেয়েছেন কিন্তু সজীব ওয়াজেদ জয় পারিবারিক উত্তরসূরী হলেও নিজ গুণে তিনি গুণান্বিত। জয় যেভাবে নিজের যোগ্যতার প্রমাণ দিয়েছেন এবং দিচ্ছেন তা অন্যদের মাঝে দেখা যায়নি। ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্নদ্রষ্টা তিনি। তার নিজের প্রচেষ্টায় দেশের আইটি সেক্টর যেভাবে এগিয়েছে তা অতুলনীয় এবং অভাবনীয়। বাংলাদেশ এখন স্যাটেলাইটের মালিক। এর পুরো অবদান সজীব ওয়াজেদ জয়ের।
উৎস:ইনকিলাব