স্প্যানিশ সুপার কোপা
ফুটবলপ্রেমীদের সামনে ছিল এল ক্লাসিকো দেখার সম্ভাবনা। তবে এখন তাদের দেখতে হবে মাদ্রিদ ডার্বি। স্প্যানিশ সুপার কোপার সেমি ফাইনালে বার্সেলোনাকে বিদায় জানিয়ে ফাইনালে উঠেছে অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ। ফাইনালে সিমিওনের শিষ্যরা মুখোমুখি হবে নগর প্রতিদ্বন্দ্বী রিয়াল মাদ্রিদের।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে সৌদি আরবের কিং আব্দুল্লাহ স্পোর্টস সিটি স্টেডিয়ামে স্প্যানিশ সুপার কোপার সেমিফাইনালে মুখোমুখি হয় বার্সেলোনা ও অ্যাতলেটিকো মাদ্রিদ। শ্বাসরুদ্ধকর এ ম্যাচে ৩-২ গোলের জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ।
তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ এ ম্যাচের প্রথমার্ধ গোল শূন্য থাকে। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই কোকের গোলে লিড নেয় অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ। ম্যাচে সমতায় ফিরতে বেশি সময় নেয়নি বার্সেলোনা। পাঁচ মিনিট পরেই ম্যাচের ৫১ মিনিটে দলটির হয়ে গোল করেন লিওনেল মেসি। ৫৯ মিনিটে মেসি আরেকটি বল জালে জড়ালেও হ্যান্ডবলের কারণে গোল বাতিল হয়ে যায়।
ম্যাচের ৬২ মিনিটে গোল করে বার্সাকে এগিয়ে নিয়ে যান এক সময়ের অ্যাটলেটিকো তারকা আতোয়ান গ্রিজম্যান। ম্যাচের ৭৫ মিনিটে জেরার্ড পিকের গোল অফসাইডের কারণে বাতিল হওয়ার পর আর গোলের মুখ দেখেনি তারা।
অন্যদিকে, ম্যাচের ৮১ মিনিটে গোল করে অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদকে সমতায় ফেরান আলবারো মোরাতা। এর ছয় মিনিট পর অ্যাটলেটিকোর হয়ে গোল করেন অ্যানহেল কোরেয়া। এ গোলেই ফাইনাল নিশ্চিত হয় ডিয়েগো সিমিওনের শিষ্যদের।
আগামী ১২ জানুয়ারি স্প্যানিশ সুপার কোপার ফাইনাল অনুষ্ঠিত হবে। প্রথম সেমি ফাইনাইলে রিয়াল মাদ্রিদ সেভিয়াকে ১-০ গোলে হারিয়ে ফাইনালে ওঠে।
অ্যাথলেটিকোর সাবেক তারকা অ্যান্তোনিও গ্রিজম্যানের গোলে সেই মঞ্চও তৈরি করে ফেলেছিল বার্সা। কিন্তু শেষ দেখে নেওয়ার মনোভাব নিয়ে নামা অ্যাথলেটিকো মাদ্রিদ শেষ সময়ে বদলে দেয় ম্যাচের রঙ।
৮০ মিনিট পর্যন্ত ২-১ গোলে পিছিয়ে ছিল তারা। কিন্তু পাঁচ মিনিটের ঝলকে ৩-২ ব্যবধানে জিতে ডিয়াগো সিমিওনের দল উঠে গেছে স্প্যানিশ সুপার কোপার ফাইনালে। সৌদিতে তাই ১২ জানুয়ারি রাতে সুপার ক্লাসিকো নয়। দেখা যাবে মাদ্রিদ ডার্বি।
অথচ মাদ্রিদের দুই দলের সুপার কোপার ফাইনালই খেলার কথা ছিল না। পুরনো নিয়ম অনুযায়ী, বার্সেলোনা এবং ভ্যালেন্সিয়ার ফাইনালে মুখোমুখি হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু নতুন নিয়মে চার দল নিয়ে সেমিফাইনালসহ নতুন ফরম্যাটে হচ্ছে সুপার কোপার আসর। তাতেই ২০১৪ সালের পর সুপার কোপার ফাইনালে উঠল অ্যাথলেটিকো। আর রিয়ালকে ফাইনালে হারাতে পারলে তৃতীয় সুপার কোপার শিরোপা ঘরে তুলবে ডিয়াগো সিমিওনের দল।
ম্যাচের প্রথমার্ধে ৭৫ ভাগ বল পায়ে নিয়েও গোল করতে পারেনি বার্সা। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে কোকের গোলে এগিয়ে যায় অ্যাথলেটিকো। কিন্তু মেসি তাদের লিড ধরে রাখতে দেয়নি। ৫১ মিনিটে গোল করে সমতায় ফেরান দলকে। এরপর একের পর এক আক্রমণ তুলে অ্যাথলেটিকোকে কোনঠাসা করে ফেলে বার্সা। ম্যাচের ৬২ মিনিটে গ্রিজম্যানের গোল তারই ফল।
গ্রিজুর গোলেই জয় দেখছিল বার্সা। রিয়ালের বিপক্ষে ফাইনালের স্বপ্ন আঁকছিল হয়তো। ঘরের মাঠে এল ক্লাসিকোয় রিয়ালকে হারাতে পারেনি বার্সা। চোট জর্জরিট রিয়ালকে সুপার ক্লাসিকোয় হারানোর চিন্তায় হয়তো ভালভার্দে এবং তার দল শেষ সময়ে মগ্ন ছিল। তাই তো ম্যাচের ৮১ মিনিটে পিকের হ্যান্ডবল থেকে পেনাল্টি পেয়ে গোল করে দলকে সমতায় ফেরান মোরাতা।
অ্যাথলেটিকোর সমতায় ফেরা পর্যন্ত ঠিক ছিল। কিন্তু ৮৬ মিনিটে কোরেইতার গোলের অজুহাত দাঁড় করানো কঠিন হবে বার্সা কোচ কিংবা ফুটবলারদের। শেষ সময়ে রক্ষণ ছেড়ে কিছুটা উপরে চলে যান ডিফেন্ডাররা। কোরেইরা দারুণ এক বল টান দিয়ে ঢুকে যায় বার্সা শিবিরে। তার নেওয়া শট বার্সা গোলরক্ষক নেতোর হাতে লেগে গোলে চলে যায়। রাকিটিচ গোললাইন থেকে ফেরানোর চেষ্টা করলেও শেষ রক্ষা হয়নি বার্সার এড়াতে পারেনি হার।