মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ, গণহত্যা ও যুদ্ধাপরাধ বন্ধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানালেন জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা। আজ জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে ‘আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তা রক্ষার্থে জাতিসংঘ সনদকে সমুন্নত রাখা’ শীর্ষক এক উন্মুক্ত আলোচনায় বক্তব্য প্রদানকালে এ আহ্বান জানান তিনি। 

স্থায়ী প্রতিনিধি জাতিসংঘের প্রতি বাংলাদেশের অটল প্রতিশ্রুতির পুনর্ব্যক্ত করেন। তিনি জাতিসংঘে দেওয়া জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রথম ভাষণ থেকে উদ্ধৃত করে বলেন ‘জাতিসংঘ সনদে যে মহান আদর্শের কথা বলা হয়েছে তা আমাদের জনগণের আদর্শ এবং এ আদর্শের জন্য তারা চরম ত্যাগ স্বীকার করেছেন’। 

রাষ্ট্রদূত আরো বলেন, জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে বাংলাদেশ যে নেতৃস্থানীয় ভূমিকা পালন করে চলেছে তা এসেছে জাতির পিতার উদ্ধৃতি ওই আদর্শ থেকেই। এক মিলিয়নেরও বেশি বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের আশ্রয়দানের ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে মানবিকতা ও সাহসী নেতৃত্ব প্রদর্শন করেছেন তা তুলে ধরেন স্থায়ী প্রতিনিধি। 

তিনি বলেন, রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়ার ফলে এই অঞ্চল একটি অস্থিতিশীলতা থেকে রক্ষা পেয়েছে আর এই আশ্রয়দান জাতিসংঘ সনদের প্রতি আমাদের প্রতিশ্রুতিরই বহিঃপ্রকাশ।

অরাষ্ট্রীয় অপশক্তি দ্বারা সৃষ্ট অসম নিরাপত্তা হুমকি, সাইবার জগতে নতুন চ্যালেঞ্জসহ জলবায়ু পরিবর্তন, দারিদ্র্যতা, অসমতা, সন্ত্রাসবাদ, সহিংস উগ্রবাদ ও মানব বাস্তুচ্যুতির মতো উদীয়মান চ্যালেঞ্জগুলোর প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করেন রাষ্ট্রদূত ফাতিমা। বর্তমান ও ভবিষ্যত প্রজন্মের প্রত্যাশা পূরণে এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় তিনি বহুপাক্ষিকতাবাদ ও জাতিসংঘ সনদকে সমুন্নত রাখার ওপর জোর দেন।

জাতিসংঘ সনদের ৭৫তম বর্ষপূর্তিকে সামনে রেখে এটি ছিল নিরাপত্তা পরিষদের এ বছরের প্রথম উন্মুক্ত আলোচনা। ভিয়েতনামের উপ প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ফ্যাম বিন মিন এই উন্মুক্ত আলোচনায় সভাপতিত্ব করেন যাতে একশটিরও বেশি সদস্য রাষ্ট্র বক্তব্য প্রদান করে। জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেজ এবং চেয়ার অব দ্য এলডার্স মিজ্ ম্যারি রবিনসন এর উদ্বোধনীতে বক্তব্য প্রদান করেন।