মাহফুজ বাবু
কুমিল্লার চান্দিনায় মহাসড়কে নৈশপ্রহরী ও দোকানির ছিন্নভিন্ন মরদেহ উদ্ধারের ঘটনার পাঁচ দিন পর অবশেষে হত্যাকাণ্ডের ক্লু খুজে পেয়েছে পুলিশ। হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত সন্দেহে তিনজনকে আটকের পর তাদের মধ্য থেকেই প্রকৃত হত্যাকারীকে শনাক্ত করত সক্ষম হয় পুলিশ।
কুমিল্লা জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) একটি বিশেষ টিম কয়েক দিনের প্রচেষ্টায় হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটনে সক্ষম হয় বলে জানান। ঘটনার তদন্ত ও আসামি গ্রেপ্তারের স্বার্থে বিস্তারিত প্রকাশে অনিচ্ছুক পুলিশ।
তবে আজ শনিবারের (১৮ জানুয়ারি) মধ্যে ঘটনার সঙ্গে জাড়িতদের গ্রেপ্তারসহ রহস্য উন্মোচন করতে পারবে বলে জানান কুমিল্লা জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)।
হত্যাকাণ্ডের এক দিন পর টাকার জন্য নাছিরকে হত্যা করা হয়েছে বলে এলাকায় গুঞ্জন সৃষ্টি হয়। তবে পুলিশের একাধিক সূত্রে জানা যায়, দোকানি নাছির উদ্দিনকে অর্থের জন্য নয়, হত্যাকারীদের নারী ঘটিত বিষয়কে কেন্দ্র করে নিরাপরাধ নাছিরকে কোপানো হয়। হত্যাকারীদের হাত থেকে বাঁচতে শত চেষ্টা করেও শেষ রক্ষা হয়নি তার। গাড়ির চাকায় পিষ্ট হয়ে অবশেষে নাছিরের মরদেহ ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকে মহাসড়কের দেড় কিলোমিটার এলাকা জুড়ে।
পুলিশ জানান, ঘটনার পর রহস্য উদঘাটনে পুলিশের তিনটি ইউনিট মাঠে নামে। জেলা গোয়েন্দা পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তিনজনকে আটক করে। তারা হলেন- চান্দিনার নাওতলা গ্রামের মাদুল মিয়ার ছেলে মোয়াজ্জেম হোসেন, একই গ্রামের বাদশা মিয়ার ছেলে আল-আমিন ও মজিব মিয়ার ছেলে সোহাগ। তাদের মধ্যে একজনের তথ্যে হত্যার ক্লু খুঁজে পায় পুলিশ।
কুমিল্লা জেলা গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) পুলিশের অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আনোয়ারুল আজিম জানান, আমরা হত্যাকাণ্ডের ক্লু খুঁজে পেয়ে রহস্য উদঘাটনের খুব কাছাকাছি চলে এসেছি। তদন্তের স্বার্থে বিস্তারিত জানানো যাচ্ছে না।
শনিবার (১৮ জানুয়ারি) মিডিয়ার কাছে বিস্তারিত প্রকাশ করবেন জেলা পুলিশ সুপার।
প্রসঙ্গত, রবিবার (১২ জানুয়ারি) রাতে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের নাওতলা আলিম মাদরাসা সংলগ্ন একটি মার্কেটে নৈশপ্রহরীর কাজ করত নাওতলা গ্রামের রবিউল্লাহ। ওই মার্কেটে চা দোকানের ব্যবসা করত রবিউল্লাহর ছেলে নাছির উদ্দিন। রবিবার রাতে রবিউল্লাহ শারীরিক অসুস্থতার কারণে নৈশপ্রহরীর দায়িত্ব পালন করে ছেলে নাছির উদ্দিন। রাতের কোনো এক সময়ে হত্যাকারীরা তাকে কুপিয়ে হত্যা করে মরদেহ মহাসড়কে ফেলে দেয়। রাতে গাড়ির চাকায় পিষ্ট হয়ে মহাসড়কের দেড় কিলোমিটার জুড়ে মরদেহের বিচ্ছিন্ন অংশ পড়ে থাকে। সকালে দেহের অংশ বিশেষ উদ্ধার করে পুলিশ।