বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিলের (বিএমডিসি) নিবন্ধিত কোনো চিকিৎসক বিএমডিসির অনুমোদন ছাড়া নাম, পদবি, শিক্ষাগত যোগ্যতা বা উচ্চতর ডিগ্রির বিবরণ ব্যবহার করতে পারবেন না বলে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে অনুমোদনহীন ও মানহীন বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার বন্ধ করতে সংশ্লিষ্টদের ব্যর্থতা কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করা হয়েছে।
বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ সোমবার এ আদেশ দেন। জনস্বার্থে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো. জেআর খান রবিনের করা এক রিট আবেদনে এ আদেশ দেওয়া হয়।
আদালতে তিনি নিজেই শুনানি করেন। সঙ্গে ছিলেন অ্যাডভোকেট শাম্মি আক্তার। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত তালুকদার। স্বাস্থ্য ও স্বরাষ্ট্র সচিব, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, বিএমডিসির প্রেসিডেন্ট, ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, পুলিশ মহাপরিদর্শকসহ ৬ জনকে চার সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
এর আগে এ বিষয়ে গত ৪ ডিসেম্বর স্বাস্থ্য সচিবসহ সংশ্লিষ্ট ৬ জনের প্রতি আইনি নোটিশ পাঠান মো. জে আর খান রবিন। নোটিশের পরও পদক্ষেপ না নেওয়ায় রিট আবেদন করা হয়।
সোমবার আদেশের পর অ্যাডভোকেট জে আর খান রবিন সাংবাদিকদের বলেন, ২০১৬ সালের ২০ জুলাই বাংলাদেশ মেডিক্যাল ও ডেন্টাল কাউন্সিল (বিএমডিসি) সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি জারি করে। এতে বলা হয়, নিবন্ধিত চিকিৎসক বা দন্ত চিকিৎসকরা তাদের সাইনবোর্ডে, প্রেসক্রিপশন প্যাড, ভিজিটিং কার্ড ইত্যাদিতে পিজিটি, বিএইচএস, এফসিপিএস ইত্যাদি ব্যবহার করতে পারবেন না। একইসঙ্গে দেশ বিদেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে প্রদত্ত ফেলোশিপ এবং প্রশিক্ষণসমূহ যথা এফআরসিপি, এফআরএইচএস, এফআইসিএ, এফআইসিএস, এফএএমএস, এফআইএজিপি ইত্যাদি উল্লেখ করা যাবে না।
তিনি বলেন, অনেক চিকিৎসক পোস্ট গ্রাজুয়েশন না করেও ‘বিশেষজ্ঞ’ শব্দ ব্যবহার করেন। যা জনসাধারণের সঙ্গে প্রতারণার শামিল, বিএমডিসির আইনের পরিপন্থী এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ। এ কারণে রিট আবেদন করা হয়।
তিনি বলেন, দি মেডিক্যাল প্রাকটিশনার অ্যান্ড প্রাইভেট ক্লিনিকস অ্যান্ড ল্যাবরেটরিস (রেগুলেশন) অধ্যাদেশ, ১৯৮২ এর ৮ ধারা অনুযায়ী লাইসেন্স ছাড়া কোনো প্রাইভেট ক্লিনিক প্রতিষ্ঠা করা যাবে না। ৯ ধারা অনুযায়ী শর্তাবলী পূরণ না হলে কর্তৃপক্ষ কোনো প্রাইভেট ক্লিনিক প্রতিষ্ঠা করার অনুমতি দিতে পারবে না। এ বিধান থাকা সত্ত্বেও বর্তমানে ব্যাঙের ছাতার মত বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার গড়ে উঠেছে। এসব প্রতিষ্ঠান করার পেছনে সেবা প্রদানের চেয়ে টাকা উপার্জনই মালিকের মূল উদ্দেশ্য থাকে। আর এ টাকা উপার্জনের মানসিকতায় অনেক সাধারণ মানুষ অপচিকিৎসার শিকার হন। এ কারণে এগুলো বন্ধে রিট আবেদন করা হয়েছে।