নিউজ ডেস্ক
রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আনীত ধন্যবাদ প্রস্তাব নিয়ে সাধারণ আলোচনায় মন্ত্রী-এমপিরা বলেছেন, বাংলাদেশ এখন বিশ্বের অন্যতম উদীয়মান অর্থনৈতিক শক্তি। কিন্তু বিএনপি-জামায়াতসহ সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী দেশের বিরুদ্ধে নানা ষড়যন্ত্র করছে। উন্নয়ন ও অগ্রগতির ধারাবাহিকতা রক্ষায় ওই অপশক্তিকে ঐক্যবদ্ধভাবে রূখে দিতে হবে।
আজ সোমবার রাতে সংসদ অধিবেশনে ওই আলোচনায় প্রথমে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী ও পরে ডেপুটি স্পিকার অ্যাডভোকেট মো. ফজলে রাব্বি মিয়া সভাপতিত্ব করেন। আলোচনায় অংশ নেন আওয়ামী লীগের প্রবীণ নেতা তোফায়েল আহমেদ, গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী অ্যাডভোকেট শ ম রেজাউল করিম, বিমান ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী, ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান, সরকারি দলের আবদুল আজিজ, শহিদুল ইসলাম বকুল, মীর মোস্তাক আহমেদ রবি, মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরী এবং বিরোধী দল জাতীয় পার্টির গোলাম কিবরিয়া টিপু প্রমুখ।
বিএনপি-জামায়াত জোটের দুঃশাসনের কথা তুলে ধরে সাবেক মন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেন, খালেদা জিয়া যুদ্ধাপরাধীদের মন্ত্রী বানায়, আর আমাদের কারাগারে বন্দি করে নির্যাতন করে। আমাদের হাতে হাতকড়া, আর তখন যুদ্ধাপরাধীদের গাড়িতে রক্তস্নাত জাতীয় পতাকা। স্বাধীনতার পর অনেকে বলেছিল, বাংলাদেশ হবে দরিদ্র্যতার মডেল। কিন্তু আজ বিশ্বের সামনে বাংলাদেশ উন্নয়নের রোল মডেল। বঙ্গবন্ধু দেশকে স্বাধীনতা দিয়ে গেছেন, আর তাঁর কন্যা শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণ করছেন।
শহীদ আসাদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে সাবেক ছাত্রনেতা তোফায়েল বলেন, ১৯৬৯ সালের ২০ জানুয়ারি শহীদ আসাদের রক্তের ওপর দাঁড়িয়ে গণঅভ্যুত্থান সৃষ্টি করে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে আমরা কারাগার থেকে মুক্তি করেছিলাম। কিন্তু দিনটি ইতিহাসের পাতায় স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকলেও আমরা যথাযথভাবে পালন করি না। পৃথিবীতে অনেক নেতা আসবেন, যাবেন, কিন্তু জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর মতো বিচক্ষণ নেতা বিরল।
মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম বলেন, উন্নয়নের অগ্রযাত্রায় অপ্রতিরোধ্য গতিতে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও দারিদ্র্যের দেশ হিসেবে পরিচিত বাংলাদেশ বিশ্বের সামনে আজ উন্নয়নের রোল মডেল। এক সময়ের শাসন ক্ষমতায় থাকা সরকার প্রধানকে (খালেদা জিয়া) বলা হতো আকণ্ঠ দুর্নীতিতে নিমজ্জিত। এখন সেই দেশের প্রধানমন্ত্রী (শেখ হাসিনা) বিশ্বের অন্যতম সৎ, সাহসী, পরিশ্রমী প্রধানমন্ত্রীর স্বীকৃতি পেয়েছে।
তিনি বলেন, রাষ্ট্রের কর্মচারী ও সেনাবাহিনীর শপথ ভঙ্গ করে তৎকালীন ব্রিগেডিয়ার জিয়াউর রহমান বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনিরাও তা স্বীকার করেছে। এই জিয়াই কুখ্যাত ইনডেমনিটি বিলকে আইনে পরিণত করে বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের বিচারের পথ রুদ্ধ করে। কারা সাম্প্রদায়িক রাজনীতি চালু, জঙ্গিবাদ এবং অগ্নিসন্ত্রাস করেছে তা দেশবাসী জানে। তিনি মন্ত্রণালয়ের সবার জবাবদিহিতা নিশ্চিত ও অনিয়ম-দুর্নীতি দূর করতে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণের কথা তুলে ধরেন।
জাতীয় পার্টির গোলাম কিবরিয়া টিপু বলেন, বঙ্গবন্ধু দেশকে স্বাধীন করে দিয়ে গেছেন। কিন্তু স্বাধীন দেশে বঙ্গবন্ধুকে যাদের নিরাপত্তা প্রদানের কথা ছিল, তারা করেননি। মুজিববর্ষে এই ব্যর্থতার কথাও বলতে হবে। ক্ষমতাবানরা ক্ষমতার অপব্যবহার করলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। সরকার ও বিরোধী দলের এলাকায় সমভিত্তিকহারে উন্নয়ন বরাদ্দের দাবি জানান তিনি।
প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী বলেন, বিমান এক সময় ধ্বংসের পথে ছিল। আজ বিমান ঘুরে দাঁড়িয়েছে। বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত কক্সবাজার এবং সুন্দরবনে পর্যটকদের আকৃষ্ট করতে বিদেশিদের জন্য সেইফজোনসহ নানা পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।
ডা. এনামুর রহমান বলেন, বিএনপি-জামায়াত আমলে হাওয়া ভবন ছিল দুর্নীতির আখড়া। খালেদা জিয়াসহ তাঁর দুই পুত্র হাজার হাজার কোটি টাকা লুণ্ঠন করে বিদেশে পাচার করেছে। অগ্নিসন্ত্রাস ও নাশকতা করে শত শত মানুষকে পুড়িয়ে হত্যা করেছে তারা। এসব কারণে দেশের জনগণ তাদের ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করেছে।
সূত্র কালের কণ্ঠ