মোঃ জিল্লুর রহমান
নওগাঁর ধামইরহাট উপজেলার জাহানপুর ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মামুনুর রশীদ পবনের বিরুদ্ধে ভিক্ষুক লখাই মন্ডলের ঘর ভেঙে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। বর্তমানে তিনি পরিবার নিয়ে খোলা আকাশের নিচে বসবাস করছেন। ভুক্তভোগী পরিবারের পক্ষ থেকে সুষ্ঠু বিচারের দাবিতে থানায় অভিযোগ করা হয়েছে। রোববার (৮ মার্চ) রাতে উপজেলার ধামইরহাট ইউনিয়নের রূপনারায়ণপুর (শল্পী) গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, রূপনারায়ণপুর গ্রামে প্রায় ৩৫ বছর ধরে ভিক্ষুক লখাই মন্ডল পরিবার নিয়ে বসবাস করছেন। রোববার রাতে প্রতিদিনের মতো খাওয়া শেষে পরিবারের লোকজন ঘুমিয়ে পড়ে। রাত সাড়ে ১১টার দিকে কোকিল গ্রামের জিল্লুর রহমানের ছেলে এবং জাহানপুর ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মামুনুর রশীদ পবন ওই বাড়ির জমি নিজের দাবি করে লোকজন নিয়ে হামলা চালান। তারা ভিক্ষুক লখাই মন্ডলের মাটির ঘর ও প্রাচীর ভেঙে দেন। এছাড়া ঘরে রক্ষিত চালের ড্রাম, থালা-বাসন, কাপড়, ঘরের ঢেউটিন, টিউবওয়েল এবং নগদ প্রায় ৪৫ হাজার টাকা লুট করে নিয়ে যান। ঘটনার সময় হামলাকারীরা প্রতিবেশীদের বাড়ির দরজা শিকল দিয়ে বাহির থেকে বন্ধ করে দেন। ফলে প্রতিবেশীরা বাড়িঘর ভাঙচুর করার সময় এগিয়ে আসতে পারেননি।
প্রতিবেশী ফাতেমা বেগম ও মোশারফ হোসেন বলেন, লখাই মন্ডল সারাদিন ভিক্ষা করে সংসার চালান। অনেক কষ্ট করে মাটির দুটি ঘর নির্মাণ করেছিলেন। বর্তমানে তিনি পরিবার নিয়ে খোলা আকাশের নিচে বসবাস করছেন।
লখাই মন্ডলের ছেলে গোলাপজল হোসেন বলেন, নানির কাছ থেকে আমার মা কিছু জমি পেয়েছে। সেই জমিতে আমরা ঘর তুলে প্রায় ৩৫ বছর ধরে বসবাস করছি। কোকিল গ্রামের জিল্লুর রহমানের ছেলে মামুনুর রশীদ পবন দীর্ঘদিন ধরে জমিটি দখলে নেয়ার চেষ্টা করছেন। তার নেতৃত্বে গত রাতে ২৫-৩০ জন মুখোশধারী বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও লুটপাট করেছে। তিনি এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবি করেন।
অভিযুক্ত ইউপি সদস্য মামুনুর রশীদ পবন অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ২০১৬ সালের ২৮ ডিসেম্বর শল্পী বাজারের জগদীশ রবিদাসের কাছ থেকে ১ একর ৭৪ শতাংশ জমি কিনি। ধামইরহাট সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে দলিল নিবন্ধন হয়। যার দলিল নিবন্ধন নং-৫২৬৪। বর্তমানে লখাই মন্ডল ৫-৬ শতাংশ জমিতে ঘর তুলে বসবাস করছে। বাকি অংশটুকু আমার ভোগদখলে। আমিও বিষয়টির সুষ্ঠু সমাধান চাই।
ধামইরহাট থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শামীম হাসান সরদার বলেন, পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। এ ব্যাপারে লখাই মন্ডলের ছেলে গোলাপজল হোসেন বাদী হয়ে থানায় একটি অভিযোগ করেন। বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।