লেখক তাহসিন বাহার সূচনা
বাবার মুখে শুনেছি মুক্তিযুদ্ধের সময় মানুষ আলু পোড়া , আলু সিদ্ধ, শুধু লবন দিয়ে ভাত খেয়েছে দিনের পর দিন। কিন্তু সেই অবস্থায় থেকেও তারা নিজের খাবার ভাগাভাগী করে খেয়েছে । মুক্তিযোদ্ধারা যখন বিভিন্ন গ্রামে যেতো ,যে যে বাড়িতে যতটুকুই খাবার আছে সেগুলো একসাথে করে তাদের খেতে দিতো । এই দেশপ্রেম ,আত্মত্যাগ,মমত্ববোধ আর সহিষ্ণুতার বিনিময়ে আমাদের স্বাধীনতা !
আমি খুব অবাক হই যখন দেখি কোন বাসার গৃহকর্মী বা দারোয়ান, ডাক্তার বা উকিলের চেম্বারের সাহায্যকারীরা অন্যের কাছে সাহায্য চাইছে অথবা ত্রানের লাইনে দাঁড়াচ্ছে ।বছরের পর বছর যারা আপনাদের জন্য নিজের শরীরের ঘাম ঝড়িয়েছে এই বিপদের সময় ক্ষমতা থাকার পরও আপনি তার দায়িত্ব না নিয়ে অন্যের কাছে ঠেলে দিলেন ? এইটুকু মানবিক মূল্যবোধ ছাড়া কি আসলেই মানুষ হওয়া যায় ?
খুব কষ্ট হয় যখন দেখি ঘরে খাবার থাকা অবস্থায় মানুষ আবারো খাবার মজুত করছে ! অথচ যিনি এই কাজটা করছেন তিনি জানেন একটা প্যাকেট খাবার বেশি নিলে তার মতই একজন মানুষ পরের বেলা না খেয়ে থাকবে । এই ভয়াবহ দূর্যোগেও কিভাবে এতটা আত্মকেন্দ্রীক চিন্তা করা যায় ?
আমাদের সবার মনে রাখতে হবে , করোনার এই দূর্যোগে প্রত্যেক শ্রেনী পেশার মানুষ কোন না কোন ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত ! এই অবস্থায় যারা সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিচ্ছে এর অর্থ এই না তাদের অঢেল আছে বা দেশ লকডাউন হলেও তাদের সব আগের মতই চলছে ! মানুষ হিসেবে মানুষের প্রতি দায়িত্ববোধ এবং মমত্ববোধ থেকেই তারা এগেয়ে আসছে ! তাই ,এই সময় যারা নিজের সমস্যাকে উপেক্ষা করে , অন্যের পাশে সাহায্যের হাত বাড়িতে দিয়েছে ,সম্ভব হলে নিজেদের পাশের মানুষ গুলোর দায়িত্ব নিয়ে তাদের কিছুটা চাপ কমিয়ে দিন । নাহয় অন্তত সঠিক তথ্যদিয়ে তাদের সাহায্য করুন । এটা আমাদের নৈতিক দায়িত্বের মধ্যেই পরে !
পবিত্র রমজানের বরকতময় মাসে আল্লাহ যেন আমাদের সবার নেক আমল কবুল করে আমাদের ক্ষমা করেন , সেই সাথে এই ভয়াবহ দূর্যোগ কাটিয়ে উঠার তৌফিক দান করেন ।
আমিন!
লেখক
তাহসিন বাহার সূচনা
জাগ্রত মানবিকতা
সাধারণ সম্পাদক