বাংলাদেশের সব জায়গায় উচ্চ গতির ইন্টারনেট সেবা দেওয়ার লক্ষ্যে কাজ করছে সরকার। বিদ্যমান অপটিক্যাল ফাইবার ক্যাবল নেটওয়ার্ককে রিং টাইপ নেটওয়ার্কে রূপান্তর করে আধুনিক সেবা দেওয়ার লক্ষ্যে ১ হাজার ২৬৫ কোটি টাকার প্রকল্প হাতে নিতে যাচ্ছে বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন্স কোম্পানি লিমিটেড (বিটিসিএল)। আগে এ প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছিল ৩৬৮ কোটি টাকা। এখন ৮৯৭ কোটি টাকা ব্যয় বাড়ানোর প্রস্তাব করেছে বিটিসিএল।
এক বছরের মধ্যেই প্রকল্পের কার্যপরিধি ও ব্যয় এত বেশি বাড়ানোর প্রস্তাব যৌক্তিক নয় বলে জানিয়েছে পরিকল্পনা কমিশন। এ বিষয়ে বিটিসিএলকে আরো আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিতে বলা হয়েছে।
পরিকল্পনা কমিশনে ২০১৮ সালের ৭ অক্টোবর হওয়া প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভায় চীন সরকারের কনসেশনাল লোনের আওতায় বাস্তবায়নাধীন ‘মডার্নাইজেশন অব টেলিকমিউনেকেশন নেটওয়ার্ক (এমওটিএন)’ প্রকল্প এবং আইসিটি বিভাগের কাজের সঙ্গে প্রস্তাবিত কাজের দ্বৈততা আছে কি না তা যথাযথভাবে পর্যালোচনা করা প্রয়োজন বলে জানিয়েছে পরিকল্পনা কমিশন। তবে বিটিসিএল জানিয়েছে, প্রস্তাবিত প্রকল্পের কার্যপরিধির সঙ্গে অন্য প্রকল্পের কার্যাবলির দ্বৈততা নেই।
‘বিটিসিএলের বিদ্যমান অপটিক্যাল ফাইবার ক্যাবল নেটওয়ার্কের উন্নয়ন ও রিং টাইপ নেটওয়ার্কে রূপান্তরকরণ’ প্রকল্পটি চলতি মাস থেকে ২০২৩ সালের জুন মেয়াদে বাস্তবায়ন করা হবে। বিটিসিএলের বিদ্যমান অপটিক্যাল ফাইবার নেটওয়ার্কের মাধ্যমে দেশের প্রায় সব উপজেলা এবং ১ হাজারের বেশি ইউনিয়নকে উচ্চ গতির নেটওয়ার্কের সঙ্গে সংযুক্ত করার লক্ষ্যে বিটিসিএলের চলমান প্রকল্পসমূহের পরিকল্পনা করা হয়। প্রকল্পের আওতায় টেলিযোগাযোগ সরঞ্জাম অর্থাৎ অপটিক্যাল ফাইবার ও ক্যাবল সংশ্লিষ্ট যন্ত্রপাতি স্থাপন করা হবে। বৈদ্যুতিক সরঞ্জামসহ আসবাবপত্র কেনা হবে।
বিটিসিএল জানায়, চলতি মাসের ২৭ তারিখে পরিকল্পনা কমিশনে পিইসি সভা হবে। তখন ব্যয় বৃদ্ধির প্রস্তাব জানানো হবে। প্রথমে ২০১৭ সালের প্রেক্ষাপট বিবেচনা করে প্রকল্পটি পরিকল্পনা কমিশনে প্রস্তাব করা হয়েছিল। কিন্তু ২০১৮ সালে সরকারের নির্বাচনী ইশতেহারে ফাইভ-জি নেটওয়ার্কের কথা বলা হয়। ফলে প্রকল্পের আওতায় ফাইভ-জি নেটওয়ার্ক স্থাপনের কাজ সংযুক্ত করা হয়। প্রকল্পের আওতায় রিং টাইপ নেটওয়ার্ক রূপান্তরকরণ প্রকল্প সংযুক্ত করা হয়। মূলত এসব কারণেই প্রস্তাবিত প্রকল্পের ব্যয় বেশি ধরা হয়েছে বলে জানিয়েছে বিটিসিএল।
বিটিসিএলের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ কে এম হাবিবুর রহমান বলেছেন, ‘সামনে প্রকল্পের ওপর পরিকল্পনা কমিশনে পিইসি সভা হবে। আমরা ২০১৮ সালে এ প্রকল্প নিয়ে একটা পিইসি সভা করেছি। প্রকল্প প্রণয়ন করতে বছরখানেক সময় লাগে। প্রকল্পটির ডিপিপি ২০১৭ সালে তৈরি হয়েছিল। তখন ফাইভ-জি অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। নতুন করে প্রকল্পের আওতায় ফাইভ-জি অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। প্রকল্পের কাজের পরিধি ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পাওয়ায় ব্যয় বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে।’