রোকন উদ্দিন

শরীয়তপুর প্রতিনিধি:

শরীয়তপুর সদর উপজেলা প্রাথমকি শিক্ষা অফিসের অফিস সয়ায়ক রোকনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন দুর্নীতি ও অনয়িমের গত ২৮ অক্টোবর ২০২০ তারিখে উপজেলা শিক্ষা অফিসার বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন ১০৮নং সুবচনী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালর সহকারী শিক্ষক হালিমা খাতুন পুতুল। তাৎক্ষণিকভাবে বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে অন্যান্য ভুক্তভোগী শিক্ষকগণ অফিস সহায়ক রোকনের বিচার দাবিতে  জোরালো আওয়াজ  তোলেন।

গত ০১ নভেম্বর ২০২০ তারিখে উপজেলার কয়েকশত শিক্ষক এ বিষয়ে উপজেলা  শিক্ষা অফিসে হাজির হন এবং জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারের সাথেও সাক্ষাৎ করেন। শিক্ষক নেতৃবৃন্দসহ সাধারণ শিক্ষকমন্ডলী  জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার এবং উপজেলা শিক্ষা অফিসারের নিকট অফিস সহায়ক  রোকনের বিভিন্ন কুকীর্তির কথা জানান। উপজেলা শিক্ষা অফিসার তাজুল ইসলাম দুর্নীতিবাজের বিরুদ্ধে নিজের অবস্থান  মৌখিকভাবে ঘোষণা করেন।


নাম না প্রকাশ করার শর্তে কয়েকজন জানান, ‘বর্তমান ডিপিইও-এর আমলেই ২০১৮সালে নড়িয়া উপজেলার তৎকালীন উপজেলা শিক্ষা অফিসারকে দুর্নীতির অভিযোগে দিনে দুপুরে মারধর করা হয় এবং তাৎক্ষণিকভাবে শরীয়তপুর পিটিআইতে অবস্থানরত কতিপয় শিক্ষকের নামে মিথ্যা অভিযোগও দায়ের করা হয়েছিলো। তার নিউজও প্রথম আলোতে প্রকাশিত হয়েছিলো। কোনো এক অজ্ঞাত কারনে ঘটনা ও অভিযোগের পাঁচ দিন পেরিয়ে  গেলেও ডিপিইও ঘটানা তদন্তের কোনো ব্যবস্থা নেননি।

শিক্ষকদেরকে ভয় দেখিয়ে ঘটনা ধামাচাপা দিয়ে  রোকনকে বাঁচাতে চেয়েছিলেন। রোষানলের মুখে এডিপিইও জনাব এম. এম. মাহবুবুর রহমানকে রোকনের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয়। এই তদন্ত কমিটি গঠনের চিঠিতে ০১ নভেম্বর ২০২০ তারিখ উল্লেখ করা হলেও চিঠিটি ইস্যু করা হয় মূলত তার পরদিন অর্থাৎ ২ নভেম্বর ২০২০ তারিখে।

এর আগেরদিন ১ তারিখে উল্লিখিত দিনে প্রশিক্ষণে থাকা গোসাইরহটের এটিইও জনাব মোঃ কুদ্দস হাওলাদারকে সংযুক্ত করে তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগ দেওয়া হয়, যেনো অফিসার প্রশিক্ষণে থাকায় তদন্ত বিলম্বিত হতে পারে। তদন্ত কাজ সম্পন্ন হওয়ার আগ পর্যন্ত প্রক্রিয়া চলাকালীন অভিযুক্ত রোকনকে তখন তদন্তকারী কর্মকর্তার অফিসে ডেপুটেশনে এনে রাখা হয়। ডিপিইর এ আচরণ তখন প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছিলো।

পরর্ব্তী ০৪ নভেম্বর ২০২০ তারিখে উপজেলা শিক্ষা অফিসে তদন্ত করে রোকনের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের সত্যতা পান। তখন বর্তমান ডিপিইও আবুল কালাম আজাদ অফিস সহায়ক রোকনকে শরীয়তপুর পিটিআইতে অথবা একই জেলার অন্য কেনো উপজেলায় বদলি করতে চাইলে উপস্থিত বিভিন্ন উপজেলার শিক্ষকগণ তাদের উপজেলায় রোকনের মতো দুর্নীতিবাজকে দেখতে চান না বলে জোর দাবি তোলেন। ডিপিইও  রোকনকে নিজ জেলায় রাখতে চেয়েও শিক্ষকদের চাপের মুখে রাখতে পারেননি। ফলে দুই সপ্তাহ সময় গড়িমসি করে অবশেষে ১৬ নভেম্বর ২০২০ তারিখের ঢাকা বিভাগীয় উপপরিচালকের স্বাক্ষরিত অফিস আদেশে অফিস সহায়ক রোকনকে শরীয়তপুর সদর উপজেলা শিক্ষা অফিস থেকে মাদারীপুর জেলার শিবচর উপজেলা শিক্ষা অফিসে বদলি করা হয়।


শিক্ষকদের মনের ক্ষোভ কাটতে না কাটতেই শাস্তিমূলক বদলির ৪ মাসের ব্যবধানে গত ২৯ মার্চ ২০২১ তারিখে অফিস সহায়ক রোকনকে আবারও ফিরিয়ে আনা হয়েছে শরীয়তপুর জেলার নড়িয়া উপজেলায়।


এ ব্যাপারে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আবুল কালাম আজাদ মুঠোফোনে জানান, উনি সম্ভবত ডিডি অফিসে বদলীর জন্য আবেদন করেছেন, তারই প্রেক্ষিতে নড়িয়ায় এসেছেন।


এ ব্যাপারে জানতে চেয়ে অফিস সহায়ক রোকনকে তার মুঠোফোনে একাধিকবার কল দিলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

সূত্র …………..!