বাঘাইছড়ি প্রতিনিধিঃ রাঙ্গামাটি জেলার বাঘাইছড়ি উপজেলার “রিসোর্ট সেন্টার ইসলামি ফাউন্ডেশনের” সাধারণ কেয়ারটেকার মোঃ আনোয়ার হোসেন ও মডেল কেয়ারটেকার মোঃ বোরহান উদ্দীনের বিরুদ্ধে ৩জন প্রাক প্রাথমিক শিক্ষক ঘুষ ও দুর্নীতির অভিযোগ তুলেছেন। গত ৩/৪/২১ ইং তারিখে ৩৩নং মারিশ্যা ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ড এর বেপারী পাড়া কেন্দ্রের (৪১) প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষিকা আছমা আক্তার (স্বামী: মোঃ মামুন) সাধারণ কেয়ারটেকার মোঃ আনোয়ার হোসেন ও মডেল কেয়ারটেকার মোঃ বোরহান উদ্দীন কে ঘুষ ও দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত করে ইসলামিক ফাউণ্ডেশনের মহাপরিচালক ও দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যান বরাবর লিখিত আকারে অভিযোগ করেন। অভিযোগ পত্রে আছমা আক্তার বলেন, ২০১৭সালে নিয়োগপ্রাপ্ত হয়ে ২০সাল পর্যন্ত ৪০হাজার টাকা ঘুষ দেওয়ার বিনিময়ে চাকরি করে আসছি, আনোয়ার হোসেন ও বোরহান উদ্দিন আমাকে বলেন এই টাকা ডিডি স্যার ও জেলা অফিস বাবদ প্রতি বৎসর দিতে হয়। ২১সালের নিয়োগ চলাকালীন সময়ে আমার কাছ পুনঃরায় টাকা দাবী করে, টাকা না দেওয়ায় আমাকে চাকুরীচ্যুত করে। অভিযুক্ত দুই ব্যক্তি প্রতি বছর ডিসেম্বর জানুয়ারি মাসে প্রতি কেন্দ্র থেকে; কেন্দ্র বহালের নামে ৫০০০/- টাকা চাঁদা দাবী করে, চাঁদা দিলে চাকরি বহাল থাকে নয়তো ৩০ হাজার টাকার বিনিময়ে নতুন কাউকে কেন্দ্র দেওয়া হয়। তিনি আরও বলেন_ নিয়োগপ্রাপ্তা শিক্ষিকা বিবাহ সূত্রে/পড়ালেখা সূত্রে উপজেলার বাহিরে থাকা সত্যেও কেন্দ্রে পাঠদান করার অন্যজন দিয়ে, যাহার কোনো প্রকার নিয়ম নেই ইসলামিক ফাউণ্ডেশনে। অভিযোগকারী আছমা আক্তার আপত্তি তুলেন মডেল কেয়ারটেকারের সার্টিফিকেট নিয়ে, তিনি বলেন মডেল কেয়ারটেকার নকল সার্টিফিকেট দিয়ে চাকরি করছেন, প্রশাসন জেনো বিয়টি খতিয়ে দেখেন। এবং অফিসে খাট সহ আরও আসবাবপত্র বসিয়েছেন মডেল কেয়ারটেকার। আমি আমার সম্পুর্ণ টাকা ফেরত চাই। এদিকে বাঘাইছড়ি পৌরসভার ১নং ওয়ার্ড এর নতুন পাড়ার প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষিকা নুর জাহান, সাধারণ কেয়ারটেকার মোঃ আনোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে ঘুষ ও দুর্নীতির অভিযোগ করেন ইসলামিক ফাউণ্ডেশনের মহাপরিচালক বরাবর। অভিযোগ পত্রে বলেন, ২০১৯সালে আমি (নুর জাহান) নিয়োগপত্র হলেও দুঃখের বিষয় হলো, জেলা অফিস ও ডিডি স্যারের(উপ পরিচালক) চা খরচ বাবদ আমার কাছ থেকে ৩০হাজার টাকা দাবী করে আনোয়ার হোসেন। আমি স্বর্ণ বন্ধক দিয়ে আনোয়ার কে প্রথম ১৮হাজার টাকা দেই,পরে ১২হাজার। ২০সালে এসে চাকরি বহালের জন্য আবারও ৬হাজার টাকা নেয়, কিন্তু চাকরি বহাল না থেকে কেন্দ্র বাতিল হয়ে যায়। পরবর্তীতে ডিডি স্যার কে জানালে ৩৬হাজার টাকা থেকে ২০হাজার টাকা ফেতর দেয় আনোয়ার। আমার বাকী টাকা ফেরত চাই। এছাড়াও পশ্চিম মাস্টার পাড়া কেন্দ্রের প্রাক প্রাথমিক শিক্ষিকা জান্নাতুল নাহার, আনোয়ার হোসেন এর বিরুদ্ধে ঘুষ ও দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন। অভিযোগ পত্রে বলেন, ২০১৮সালে আমি (জান্নাতুল নাহার) প্রাক প্রাথমিক শিক্ষিকা হিসেবে নিয়োগপ্রাপ্ত হই,২০১৯ সালে চাকরি পুনোর্বহালের নামে ৫০০০টাকা, ২০২০সালে একই দাবীতে প্রথমে ৩হাজার পরে ৫হাজার টাকা চাঁদা নেয়। ২০২১সালে এসে আবার চাঁদা চাইলে, আমি দিতে অপারগতা দেখাই, ফলে আমার কেন্দ্রটি বাতিল হয়ে যায়। আমি আমার সকল টাকা ফেরত চাই। এমনকি শাহাদাৎ নামে একজন চাকরি প্রত্যাশী থেকে, চাকরি দেওয়ার নামে ২৫হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়, ইয়াসমিন নামে এক শিক্ষিকা থেকে ২৪হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়। সকল ধরনের অভিযোগের ভিত্তিতে সাধারণ কেয়ারটেকার আনোয়ার হোসেনের কাছে জানতে চাইলে , তিনি বলেন বিষয়টি সম্পর্কে কিছুই জানি না, এসব মিথ্যা ও বানোয়াট। মডেল কেয়ারটেকার বোরহান উদ্দিনের কাছে সাধারণ কেয়ারটেকার আনোয়ার হোসেনের চাঁদা সংগ্রহের বিষয়টি আপনি অবগত কিনা? এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, রাঙ্গামাটি অফিসে যখন অভিযোগ গেলো, সেটা আমার আলোচনা পর্যালচনায় বোধগম্য হলো যে, আনোয়ার জড়িত এবং শাহাদাৎ থেকে টাকা নেওয়ার বিষয়টিও আমি অবগত। এ বিষয়ে ডিডি(উপ পরিচালক)মোঃ ইকবাল বাহার থেকে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সাধারণ কেয়ারটেকারের বিরুদ্ধে আমরা দশটি অভিযোগ পেয়েছি, তদন্তের পেক্ষিতে আমরা আইনানুগ ব্যবস্থা নিব।