প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন বলেছেন, আইন পেশা একটি সেবামূলক পেশা। আইনজীবীদের অন্তত শতকরা ১০ ভাগ মামলা বিনামূল্যে করে দেওয়া উচিত। তিনি বলেন, আইনজীবীরা এক সময় টাকাও চাইতেন না। গাউনের পিছনে পকেট থাকতো। সেখানে ফি দিতো। কে কি দিলো তা আইনজীবী দেখতেন না। কিন্তু এখন আইনপেশা ব্যবসা হয়ে গেছে।
মঙ্গলবার আপিল বিভাগে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের মামলার শুনানিকালে আসামিপক্ষে যুক্ত থাকা জ্যেষ্ঠ আইনজীবী অ্যাডভোকেট মুনসুরুল হক চৌধুরীকে উদ্দেশ্য করে এ মন্তব্য করেন প্রধান বিচারপতি। মামলায় নিয়োজিত অ্যাডভোকেট অনরেকর্ড (এওআর) সময়মতো আদালতে ভার্চুয়ালি যুক্ত না থাকায় মামলা শুনানি করা যাচ্ছিল না- এমন প্রেক্ষাপটে এ মন্তব্য করেন প্রধান বিচারপতি।
আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি মোহাম্মদ ইমান আলী বলেন, ‘পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে প্রতি বছর আইনজীবীদের সনদ নতুন করে নবায়ন করতে হয়। এই সনদ নবায়নের সময় দেখাতে হয় তিনি কতটি মামলা প্র-বোনো করেছেন। এটা দেকাতে না পারলে সিনিয়র আইনজীবীদেরও লাইসেন্স নবায়ন করা হয় না।’ তখন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মুনসুরুল হক চৌধুরী বলেন, ‘এটা আমাদের এখানে হলে ভালোই হতো। আমরাও এটা করতে চাই। আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি, এটা করা যায়।’
এসময় আরেকজন আইনজীবী বলেন, ‘মাই লর্ড, এখন এরকম হলে পিছনে বসে গাউনের পকেট থেকে তুলে নিয়ে যাবে।’ আরেকজন আইনজীবী বলেন, ‘ফি নিতো না ঠিক। তখনতো গোল্ড কয়েন (স্বর্ণের মুদ্রা) দিতো। এর তো অনেক দাম।’ তখন আদালতে যুক্ত হন সংশ্লিষ্ট মামলার অ্যাডভোকেট অনরেকর্ড (এওআর) নুরুল ইসলাম চৌধুরী। তিনি বার বার আদালতের কাছে ক্ষমা চান সময়মতো যুক্ত হতে না পেরে।
আদালত যেসব মামলায় আসামিপক্ষ আইনজীবী নিয়োগ দিতে পারেন না সেরকম কিছু মামলায় আসামিপক্ষে শুনানি করতে অ্যাডভোকেট এবিএম বায়েজীদকে অনুরোধ জানান। অ্যাডভোকটে এবিএম বায়েজীদ তাতে রাজি হন। এসময় রাষ্ট্র নিযুক্ত (যারা আইনজীবী রাখতে পারে না, তাদের জন্য নিয়োগ দেওয়া হয়) আইনজীবীদের সম্মানী বাড়ানো উচিত বলেও মন্তব্য করেন প্রধান বিচারপতি।