মো: মোর্শেদুর রহমান একজন স্কাউটার। ডাক নাম মিলন নামেও বেশ পরিচিত। পেশায় গনপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রনালয় এর অধীনে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমিতে সিনিয়র নৃত্যশিল্পী হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। ঢাকায় মিরপুর ১৩ নম্বরের স্থায়ী বাসিন্দা।
খুব ছোট বেলা থেকেই পড়ালেখাতে অত্যন্ত মেধাসম্পন্ন ছিলেন। তিনি প্রাণীবিদ্যায় মাস্টার্সে ১ম শ্রেনীতে উত্তীর্ণ হন এবং একই সাথে ব্যবস্থাপনায় (হিউম্যান রির্সোস ম্যানেজমেন্ট) মাস্টার্স সম্পন্ন করেন যাতে খুবই প্রশংসনীয় ফলাফল করেন। ছোট বেলা থেকেই পড়ালেখার পাশাপাশি শখের বসে সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডে, স্কাউটিং এবং সংগ্রহের নেশায় আসক্ত হয়ে পরেন। এসব কর্মকান্ডের সাথে সম্পৃক্ত থাকায় স্কুল, কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের চোখের মনি হয়ে উঠেছিলেন।
স্কাউটিং কে ভালোবাসেন বলেই স্কাউটের আইন, প্রতিজ্ঞা ও মটো মনে ধারন করে বর্তমান অবধি এই আন্দোলনের সাথে সম্পৃক্ত আছেন। তিনি নিজে একটি স্কাউটিং গ্রুপ প্রতিষ্ঠা করেন যার নাম “মিরপুর ঢাকা ওপেন স্কাউট গ্রুপ” এবং তিনি এই গ্রুপের সম্পাদক হিসেবেও কাজ করছেন। যেহেতু তিনি খুব ছোট বেলা থেকেই সাংস্কৃতিক ও স্কাউটিং কর্মকান্ডে সম্পৃক্ত ছিলেন তাই বিভিন্ন সময়ে তাকে দেশে বিদেশে বিভিন্ন প্রতিযোগীতায়, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে এবং স্কাউট ক্যাম্পে অংশগ্রহন করতে হয়েছিল এবং যার মাধ্যমে ছিনিয়ে এনেছেন পুরস্কার, সুনাম ও নানা অর্জন। এগুলোই তার সংগ্রহের উপাদান হিসেবে তার সংগ্রহশালায় জায়গা করে নিতে থাকে। স্কাউটিং এর সাথে সম্পৃক্ত ক্যাম্প ব্যাজ, পিন ব্যাজ, স্কার্ফ, ওয়াগেল, ডাকটিকেট, এফ. ডি. সি, ম্যাচবক্স, লটারী টিকেট, স্মারক ব্যাংকনোট ও কয়েন, বাকেল, স্কাউট পোশাক, ক্যাপ, স্যুভেনির, অটোগ্রাফ, মেডেল, কলম, চাবির রিং, ফোন কার্ড, ডকুমেন্টস্ এককথায় স্কাউট এর সবই তার সংগ্রহের প্রধান উপাদান। এছাড়াও ব্রিটিশ ডকুমেন্টস্, টোকেন, তেলের কূপি বাতি, ব্লেড কভার, ফ্রিজ ম্যাগনেট, রাবার, টি ব্যাগ, প্লেইং কার্ড, জোকার কার্ড, পতাকা পোস্ট কার্ড, পকেট ক্যালেন্ডার, ফিল্ম পোষ্টার, পুরাতন টেলিফোন সেট, দৈনিক পত্রিকা, হ্যান্ডি ক্রাফট্, “মসজিদ, মারলিন মনরো, বিশ্বকাপ ফুটবল ও নৃত্য বিষয়ক ডাকটিকেট” ও তিনি সংগ্রহ করে থাকেন।
শখের বসে হলেও কালক্রমে বর্তমানে তার বাসা যেন পরিনত হয়েছে এক বিশাল সংগহশালায় যা বলে শেষ করা যাবেনা। তার সংগ্রহশালায় রয়েছে বেশ অনেক দূর্লভ উপাদান যা দেখলে যে কেউ অভিভূত হয়ে যাবে। বাসার ৪টি শোকেসে চোখ ধাধাঁনো ও পরিপূর্ন সারিবদ্ধভাবে সাজানো রয়েছে তার অর্জিত পুরস্কার এবং সম্মাননা । বাসার যেদিকে তাকাবেন সেখানেই তার শখের ছোয়া পাবেন। তিনি নৃত্যশিল্পী হিসেবে ২০০৩ সালে জাতীয় শিশু পুরস্কার প্রতিযোগীতায় ঢাকা বিভাগ হতে প্রথম স্থান অর্জন করেছিলেন। এছাড়াও নৃত্যশিল্পী হিসেবে তার ঝুলিতে রয়েছে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক অসংখ্য অর্জন।
স্কাউটিং এর ক্ষেত্রেও তার অর্জন ব্যাপক। তিনি ঢাকা কলেজ রোভার স্কাউট গ্রুপের প্রাক্তন সিনিয়র রোভার মেট ছিলেন। রোভারিং এর সময়কালে উক্ত গ্রুপ থেকে শ্রেষ্ঠ রোভার, শ্রেষ্ঠ সহকারী রোভার মেট এবং শ্রেষ্ঠ রোভার মেট সম্মাননা অর্জন করেন। সেবা মূলক কর্মকান্ডে ব্যাপক অবদান রাখার দরূন ২০১১ সালে বাংলাদেশ স্কাউটস তাকে ন্যাশনাল সার্ভিস অ্যাওয়ার্ড প্রদান করে। ২০১৩ সালে তিনি বাংলাদেশ স্কাউটস এর জাতীয় পর্যায়ে প্রেসিডেন্টেস রোভার স্কাউট অ্যাওয়ার্ড মূল্যায়ন পরীক্ষায় অংশগ্রহন করেন। এরপর রোভার লিডার হিসেবে স্কাউট আন্দোলনের সার্বিক উন্নয়ন ও সম্প্রসারণে প্রশংসনীয় অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ ২০১৯ সালে বাংলাদেশ স্কাউটস তাকে ন্যাশনাল সার্টিফিকেট সম্মাননা প্রদান করে। বিভিন্ন প্রতিযোগীতায়, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে এবং স্কাউট ক্যাম্পে অংশগ্রহনের জন্য বুলগেরিয়া, চীন, জাপান, মালেশিয়া, সিঙ্গাপুর, ইন্দোনেশিয়া, থাইল্যান্ড, ভূটান, নেপাল, ভারত দেশ ভ্রমন করেছিলেন।