স্টাফ রিপোর্টারঃ
সরকার দেশের অর্থনীতিকে ধ্বংস করেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
গত সোমবার একজন রাইড শেয়ারের চালকের বাইক পুঁড়িয়ে ফেলার ঘটনার প্রসঙ্গ টেনে বিকালে এক দলীয় সভায় বিএনপি মহাসচিব এরকম মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, “এরা(সরকার) অর্থনীতিকে ধবংস করে্ছে, এরা আজকে পুরোপুরিভাবে একটা লুটেরা অর্থনীতি তৈরি করেছে, এরা পুরোপুরিভাবে একটা লুটেরা সমাজ তৈরি করছে। কী অবস্থা দেখেন এই করোনার কারণে মানুষের অর্থনৈতিক অবস্থা এতো খারাপ হয়েছে.. যে, গতকাল(সোমবার) একজন যুবক তার মোটর সাইকেল পুঁড়িয়ে দিয়েছে। কেনো পুঁড়িয়েছে?”
”সে বলছে যে, আমি একটা সিরামিক্সের দোকান করতাম। সেটা করোনার কারণে বন্ধ হয়ে যাওয়ায় আমি আমার সঞ্চিত অর্থ দিয়ে একটা মোটর সাইকেল কিনে রাইক রাইড শেয়ারিং কাজ করার চেষ্টা করছি। সেখানে আমাকে প্রতি পদে পদে বাঁধা দেয়া হচ্ছে যে আমাকে আপনার অমুক সার্টিফিকেট লাগবে, অমুক সার্টিফিকেট লাগবে। তার চাইতে পুঁড়িয়ে ফেলি। এটা কখন হয়? যখন হতাশার চরম পর্যায় গিয়ে পৌঁছে মানুষের। আজকে সেই অবস্থায় গিয়ে আমরা পৌঁছেছি কিন্তু।”
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘‘এই অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসতে হলে আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে সেই যে, ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধে আমাদের লক্ষ্য ছিলো এখানে একটা বহুদলীয় গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা, মানুষের কথা বলার স্বাধীনতা এবং একই সঙ্গে এদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব অক্ষুন্ন রাখা যেটা আমাদের দলের প্রতিষ্ঠাতা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের মূল কথা ছিলো সেটা আমাদের প্রতিষ্ঠা করতে হবে।”
‘‘ এগুলোর জন্য আমাদেরকে সংগ্রাম করতে হবে, লড়াই করতে হবে এবং ভবিষ্যত প্রজন্মকে এই লড়াইয়ে সঙ্গে সম্পৃক্ত করতে হবে। আমাদের সূবর্ণ জয়ন্তী উদযাপনের লক্ষ্য এই হওয়া উচিত যাতে করে আমরা সেদিকে যেতে পারি।” আওয়ামী লীগ দে্শের স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃত করছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, ‘‘ আমাদেরকে সঠিক ইতিহাস নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে হবে।”
ফখরুল বলেন, ‘‘ আমাদের যে স্বপ্ন ছিলো গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা সেটাকে তারা ধবংস করে দিয়েছে। এখন বহুদলীয় গণতন্ত্র নেই, একটা মুখোশ আছে, একটা আবরণ আছে গণতন্ত্রের। সেই আবরণের মধ্যে পুরোপুরি একদলীয় ব্যবস্থা চলছে। এখানে একটা ভয়ভীতির সংস্কৃতি এমনভাবে তৈরি হয়েছে যে, এখন কথা বলতে যে কেউ ভয় পায়, লিখতে ভয় পায়, সাংবাদিকরা লিখতে ভয় পায়।”সরকারের দমননীতিতে বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে ৩৫ লাখের উপরে মামলা, গ্রেপ্তার, পুলিশি নির্যাতনে তারা এলাকায় থাকতে পারছে বলেও অভিযোগ করে তিনি বলেন, ‘‘ এই দেশকে কি একটা গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র বলা যাবে? যাবে না। একটা অস্বস্তিকর অবস্থা এরা তৈরি করে্ছে।” আজকে এদের হাতে যে দেশ নিরাপদ নয়, রাষ্ট্র নিরাপদ নয় এটা সকলকে জানাতে হবে।”গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে স্বাধীনতার সূবর্ণ জয়ন্তী উদযাপন জাতীয় কমিটি ও বিষয় ভিত্তিক কমিটির এই সভা হয়।
জাতীয় কমিটির আহবায়ক খন্দকার মোশাররফ হোসেনের সভাপতিত্বে সদস্য সচিব আবদুস সালামের সঞ্চালনায় সভায় নেতৃবৃন্দ স্বাধীনতা সূবর্ণ জয়ন্তীর বছর ব্যাপী কর্মসূচি পুনরায় শুরুর বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন।
এই সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, ভাইস চেয়ারম্যান শাহজাহান ওমর, বরকত উল্লাহ বুলু, আবদুল আউয়াল মিন্টু, অধ্যাপক এজেডএম জাহিদ হোসেন, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আমান উল্লাহ আামান, গাজী মাজহারুল আনোয়ার, ইসমাইল জবিহউল্লাহ, ফরহাদ হালিম ডোনার, বিজন কান্তি সরকার, অধ্যাপক আফম ইউসুফ হায়দার, আবদুল হাই শিকদার, কেন্দ্রীয় নেতা সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, শ্যামা ওবায়েদ, অধ্যাপক এবিএম ওবায়দুল ইসলাম, অবসরপ্রাপ্ত কর্ণেল জয়নাল আবেদীন, রিয়াজুল ইসলাম রিজু, আশরাফউদ্দিন উজ্জ্বল, আমিনুল হক, জহিরউদ্দিন স্বপন, মনীষ দেওয়ান, মার্শেল এম চিরমা, অধ্যাপক হারুন আল রশিদ, চেয়ারপারসনের কার্যালয়ের এবিএম আবদুর সাত্তার, রিয়াজউদ্দিন নসু ও প্রেস উইংয়ের সদস্য শায়রুল কবির খান উপস্থিত ছিলেন।