এন এ মুরাদ, মুরাদনগর
‘ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানীর’ আগমন ও বানিজ্য থেকে নামকরন হয় কোম্পানীগঞ্জ। যার ইতিহাস ঐতিহ্য প্রায় ৩’শ বছরের পুরানো। দীর্ঘদিন অদক্ষ নেতৃত্ব আর সুবিধাভোগী মহলের কবজায় জিম্মি থাকায় বাজার উন্নয়নে কোন কাজ হয়নি। সামান্য বৃষ্টি হলেই তলিয়ে যেতো দোকান-পাট। সৃষ্টি হতো জলাবদ্ধতা। বাজারের বিভিন্ন গলিতে চলত নৌকা।
বিষয়টি স্থানীয় সংবাদকর্মীদের নজরে আসলে বাজারের জনদূর্ভোগ নিয়ে “দৈনিক আমাদের কুমিল্লা’’ সহ বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় বেশ কিছু সংবাদ ছাপা হয়। খবরের শিরোনাম থেকে অবগত হয়ে স্থানীয় সাংসদ আলহাজ্জ ইউসুফ আব্দুল্লাহ হারুন (এফসিএ) বাজার উন্নয়নে পরিকল্পনা গ্রহণ করেন। তিনি এলজিইডি কতৃক বাজারের ড্রেইন ও সড়ক নির্মাণ করায় পাল্টে গেছে কোম্পানীগঞ্জ বাজারের দৃশ্যপট। উপকৃত হচ্ছে প্রায় ৫ লাখ মানুষ ।
মুরাদমুরাদনগর উপজেলা প্রকৌশলী মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর কবির জানান, ২০২১-২২ অর্থ বছরে কোম্পানীগঞ্জ বাজারের ভীতর সড়ক ও ড্রেইনের জন্য দেড় কোটি টাকা বরাদ্ধ দেওয়া হয়। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান নিরু এন্ড ব্রাদার্সের মাধ্যমে ৭৫ লাখ টাক ব্যায়ে ২০৮ মিটার সড়ক ও ৬৭ লাখ টাকা ব্যায়ে ৪শ ৩০ মিটার ড্রেইনের কাজ শেষ করা হয়েছে। আরো ৩৫ লাখ টাকা ব্যায়ে পেয়াজ পট্টির সড়ক নির্মাণ শুরু হবে৷ যার ফলে বিশাল এই বাজারের লাখ লাখ ক্রেতা ও পাইকার উপকৃত হচ্ছে।
কোম্পনীগঞ্জ বাজারের ব্যাবসায়ীরা জানান, বাজারের ড্রেইনগুলো বন্ধ থাকার কারণে আমরা দীর্ঘদিন কষ্ট করেছি। বৃষ্টি হলেই তলিয়ে যেত দোকান-পাট , নষ্ট হতো মালামাল। কোন ক্রেতা বাজারে আসতে পারতো না ।
এমপি মহোদয় উদ্যোগ নিয়ে ড্রেইন নির্মান ও সড়ক করে দেওয়ায় আমাদের ৫০ বছরের কষ্ট দূর হয়েছে। আগামী ১শ বছর আর বাজারের কোন কাজ করা লাগবে না।
ক্রেতারা বলেন, ঐতিহ্যবাহী বাজারটি নিয়ে অনেক দূর্ভোগ পোহাতে হয়েছে। এখন আর কোন সমস্যা নেই। সুবিশাল ড্রেইন ও সড়ক নির্মাণে আমরা আনন্দিত । এজন্য ধন্যবাদ জানাই মাননীয় এমপি আলহাজ্ব ইউসুফ আব্দুল্লাহ হারুন ও বাজার কমিটিকে।
বাজার কমিটির আহবায়ক চন্দন বনিক জানান, “ অতিপ্রাচীন এই বাজরের ঐতিহ্য রক্ষায় ২০২০ সালে এমপি মহোদয়কে স্বারক লিপির মাধ্যেমে অবগত করেছি । এমপি স্যার বিষয়টি গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করে কাজ শুরু করেন। এখন বাজারে জলাবদ্ধতা নেই। মেইন সড়ক পাকা হয়ে গেছে। এছাড়াও মাছ ও গোস্ত পট্রিতে ১২ কোটি টাকায় বহুতল ভবন নির্মাণের পরিকল্পনা চলছে ।
১৫নং নবীপুর পশ্চিম ইউপি চেয়ারম্যান জাকির হোসেন বলেন, “একসময় এই বাজার লুটতরাজদের কারণে কোন উন্নয়ন হয়নি। আমি চেয়ারম্যান হওয়ার পর সকল লুটপাট বন্ধ করে দেই। এখন বাজার উন্নয়নে প্রচুর কাজ হচ্ছে”। এখন থেকে সাপ্তাহিক বাজার প্রতি বৃহষ্পতি ও রবিবার নিয়মিত বসবে। যারা ভাস্যমান ছিল তাদের স্হায়ীভাবে বসানোর কাজ চলছে। সড়ক নির্মাণে বাজারের প্রতিটি গলি দিয়ে রিকশা ও গাড়ী চলবে।
মুরাদনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার আলাউদ্দিন ভূঞা জনী বলেন, “বর্তমান সরকারের উন্নয়ন ধারাবাহিকতায় কোম্পানীগঞ্জ বাজারের কাজ হচ্ছে। বাজারটি নিয়ে এমপি মহোদয় দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা গ্রহণ করেছেন। পর্যায়ক্রমে বাজার আরো আধুনিকায়ন করা হবে”। ###