আফগানিস্তানের কাছে হারের লজ্জা ভুলিয়ে দেওয়া জয় পেলো বাংলাদেশ। ত্রিদেশীয় টি-টোয়েন্টি সিরিজে নিজেদের তৃতীয় ম্যাচে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ৩৯ রানে জিতে ফাইনালে স্বাগতিকরা। জিম্বাবুয়ানদের টানা তিন হারে বাংলাদেশের সঙ্গে শিরোপার লড়াই নিশ্চিত করেছে আফগানিস্তানও। আগামী শনিবারের ম্যাচটি তাই দুই দলের জন্য ফাইনালের প্রস্তুতি।
টস হেরে ব্যাটিং নিয়ে শুরুতে হোঁচট খায় বাংলাদেশ। ৪৯ রানের উদ্বোধনী জুটি ভাঙার পর ৬৫ রানের মধ্যে তিন উইকেট হারায় তারা। এরপর মাহমুদউল্লাহ ও মুশফিকুর রহিমের দুর্দান্ত এক জুটিতে ৭ উইকেটে ১৭৫ রান করে স্বাগতিকরা। জবাব দিতে নেমে ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়া জিম্বাবুয়ে ২০ ওভারে ১৩৬ রানে অলআউট হয়।
নাজমুল হোসেন শান্ত (১১), লিটন দাস (৩৮) ও সাকিব আল হাসান (১০) ফিরে যাওয়ার পর ক্রিজে জুটি বাঁধেন মাহমুদউল্লাহ ও মুশফিক। চতুর্থ উইকেটে ৫৫ বলে ৭৮ রানের জুটি গড়েন তারা দুজন। মুশফিক ৩২ রানে ফিরে গেলেও মাহমুদউল্লাহ ঝড় থামাননি। শেষ ওভারের তৃতীয় বলে আউট হন এই ডানহাতি ব্যাটসম্যান। ৪১ বলে ১ চার ও ৫ ছয়ে ৬২ রান করেন মাহমুদউল্লাহ।
জিম্বাবুয়ের পক্ষে সর্বোচ্চ ৩ উইকেট নেন কাইল জার্ভিস। দুটি পান ক্রিস্টোফার এমপোফু।
বড় লক্ষ্যে নেমে প্রথম দুই ওভারে উইকেট হারায় জিম্বাবুয়ে। ইনিংসের পঞ্চম বলে মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনের শিকার হন ব্রেন্ডন টেলর। রানের খাতা না খুলে মিড অফে সাকিবের ক্যাচ হন এই্ উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান। পরের ওভারে সাকিব বল হাতে নিয়ে দেখা পান উইকেটের। তৃতীয় বলে শূন্য রানে রেগিস চাকাভাবে বোল্ড করেন স্বাগতিক অধিনায়ক।
৮ রানে তৃতীয় উইকেট হারায় জিম্বাবুয়ে। প্রায় দুই বছর পর টি-টোয়েন্টিতে বল হাতে নিয়েই উইকেট পান শফিউল ইসলাম। এই পেসার তার প্রথম বলে শন উইলিয়ামসকে (২) মিড উইকেটে আফিফ হোসেনের ক্যাচ বানান।
এই ধস কিছুক্ষণের জন্য থেমেছিল। কিন্তু হ্যামিল্টন মাসাকাদজা ও টিনোটেন্ডা মুতুম্বজির প্রতিরোধ ভাঙেন আমিনুল ইসলাম বিপ্লব। পাওয়ার প্লে শেষ হওয়ার পর সপ্তম ওভারে বল হাতে নেন তিনি। তৃতীয় বলে মুতুম্বজিকে ফেরান এই লেগ স্পিনার। মাসাকাদজার সঙ্গে ২৭ রানের জুটি গড়ে শান্তকে ক্যাচ দেন জিম্বাবুয়ান ব্যাটসম্যান। ৯ বলে ১১ রান করেন মুতুম্বজি।
পরের ওভারে রায়ান বার্লকে পঞ্চম শিকার বানায় বাংলাদেশ। শফিউলের দ্বিতীয় ওভারের দ্বিতীয় বলে বোল্ড হন তিনি ১ রান করে। আমিনুলও তার দ্বিতীয় ওভারে মাসাকাদজার গুরুত্বপূর্ণ উইকেট নেন। ২৫ বলে তিন চারে ২৫ রান করে এলবিডাব্লিউ হন জিম্বাবুয়ান অধিনায়ক। এই লেগ স্পিনারের শেষ ওভারে নেভিল মাদজিভা ৯ রান করে সাকিবের থ্রো থেকে মুশফিকের কাছে রান আউট হন।
৬৬ রানে ৭ উইকেট হারানো জিম্বাবুয় হারের ব্যবধান কমাতে থাকে রিচমন্ড মুতুম্বামির ব্যাটিং ঝড়ে। তার সঙ্গে জার্ভিসের জুটি ৩০ বলে পঞ্চাশ রান স্পর্শ করে। তিনটি করে চার ও ছয়ে ৩০ বলে প্রথম হাফসেঞ্চুরি করেন মুতুম্বামি। ১৯তম ওভারে তাকে থামান শফিউল। নিজের শেষ ওভারে জিম্বাবুয়ের ইনিংস সেরা পারফর্মারকে মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনের ক্যাচ বানান এই পেসার। ৩২ বলে চারটি চার ও তিনটি ছয়ে ৫৪ রান করেন মুতুম্বামি। জার্ভিসের সঙ্গে তার জুটি ছিল ৫৮ রানের।
ইনিংসের শেষ ওভারে মোস্তাফিজুর রহমান ২৭ রানে জার্ভিসকে ফেরান। বদলি ফিল্ডার সাব্বির রহমানের ক্যাচ হন জিম্বাবুয়ান ব্যাটসম্যান। তাতে টি-টোয়েন্টির ৫০তম উইকেট পান বাঁহাতি পেসার। শেষ ওভারে আইন্সলি এনলোভুকে বোল্ড করে জিম্বাবুয়েকে অলআউট করেন মোস্তাফিজ।
শফিউল তার ক্যারিয়ার সেরা বোলিং করেছেন, ৪ ওভারে ৩৬ রান দিয়ে নেন ৩ উইকেট। আর অভিষিক্ত লেগ স্পিনার আমিনুল ২ উইকেট পান ৪ ওভারে ১৮ রান দিয়ে। মোস্তাফিজ সমান দুটি উইকেট নিয়ে দ্বিতীয় সেরা বোলার।