ক্যাসিনোকাণ্ডে বহুনাটকীয়তার পর গ্রেপ্তার যুবলীগের বহিষ্কৃত নেতা ‘ক্যাসিনো কিং’ ইসমাঈল চৌধুরী সম্রাটকে সম্পূর্ণ ‘নিষ্পাপ’ ও ‘নির্দোষ’ দাবি করেছেন তার ছোট বোন ফারহানা চৌধুরী শিরিন। ভাইয়ের মুক্তির জন্য প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করে তিনি বলেছেন, ‘আমার ভাইকে হত্যা করার জন্য চক্রান্ত হচ্ছে। আপনার (প্রধানমন্ত্রী) কাছে আকুল আবেদন করছি আমার ভাইকে মুক্ত করে দিন।’
গতকাল রোববার রাত সাড়ে ৯টার দিকে ফেনীর পরশুরামের পূর্ব সাহেবনগরে সম্রাটের গ্রামের বাড়িতে স্থানীয় সাংবাদিকদের মাধ্যমে ভাইয়ের মুক্তি কামনা করেন শিরিন।
সম্রাটের ছোট বোন বলেন, ‘সে দলের জন্য ত্যাগ স্বীকার করেছে। নিজের জীবনের জন্য আমার ভাই কিছু করেনি। সে সম্পূর্ণ নিষ্পাপ, নির্দোষ। আমার ভাইকে হত্যার জন্য চক্রান্ত করা হচ্ছে।’
উপস্থিত সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘আপনারা চাইলে আমার বাড়িতে ঘুরে দেখতে পারেন। আমাদের বাড়িতে কিছু নেই। ভাই সারা জীবন শুধু দলের জন্য, দেশের জন্য কাজ করেছে। নিজের জন্য, পরিবারের জন্য কোনো কিছু করেনি।’
এ সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ করে শিরিন আরও বলেন, ‘যেভাবে ১৯৭৫ সালে জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমানের পুরো পরিবারকে মেরে ফেলা হয়েছে, দেশে আবারও সে চক্রান্ত হচ্ছে।’ এ সময় নিজের ভাইয়ের মুক্তির জন্য প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন তিনি।
শিরিন বলেন, ‘আমার ভাইকে হত্যা করার জন্য চক্রান্ত হচ্ছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আপনার কাছে চাওয়া, আজ যদি শেখ রাসেল বেঁচে থাকতো, তাহলে আমার ভাইয়ের মতো এত বড় হতো, আপনি কি চুপচাপ বসে থাকতে পারতেন? সে (সম্রাট) অসুস্থ মানুষ। দুইবার ওপেন হার্ট সার্জারি হয়েছে। তার লাঞ্চে পানি জমে যায়। তারপরও দলের জন্য কষ্ট করে কাজ করে যাচ্ছেন। আমি, আমার পরিবার আপনার কাছে আকুল আবেদন করছি আমার ভাইকে মুক্ত করে দিন।’
ক্যাসিনো ও সম্রাটের জুয়ার নেশার ব্যাপারে তার দ্বিতীয় স্ত্রী শারমিন চৌধুরীরর দেওয়া বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়ে সম্রাটের ছোট বোন শিরিন বলেন, ‘সে মিথ্যাচার করছে। এটা সম্পূর্ণ বানোয়াট। ভাই কখনো জুয়া কিংবা ক্যাসিনোর সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিল না।’
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সভাপতি ইসমাঈল চৌধুরী সম্রাটের বাড়ি ফেনী জেলার পরশুরাম উপজেলার মির্জানগর ইউনিয়নের পূর্বসাহেব নগর গ্রামে। তার বাবা মৃত ফয়েজ আহামেদ। তারা দুই বোন তিন ভাই। বড় ভাই বাদল চৌধুরী, ছোট ভাই রাসেল চৌধুরীসহ ঢাকায় থাকেন। দুই বোন ফরহানা চৌধুরী শিরিন ও শিউলী চৌধুরীসহ সম্রাটের মা বসবাস করেন পূর্বসাহেব নগর গ্রামে।
গতকাল রোববার ভোরে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামের আলকরা ইউনিয়নের কুঞ্জশ্রীপুর গ্রাম থেকে থেকে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সভাপতি ইসমাঈল চৌধুরী সম্রাটকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। পরে তাকে নিয়ে কাকরাইলে তার কার্যালয়ে ও শান্তিনগর ও মহাখালী ডিওএইচএসের বাসায় একযোগে অভিযান পরিচালনা করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। পরে তাকে ছয় মাসের কারাদণ্ড দেয় র্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত। একই সঙ্গে যুবলীগ থেকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয় তাকে।