ফেনী জেলা কারাগারে পৃথক কনডেম সেল ও ফাঁসির মঞ্চ না থাকায় নুসরাত হত্যা মামলার মৃত্যুদন্ডাদেশপ্রাপ্ত ১২ আসামিকে ফেনী কারাগার থেকে আজ মঙ্গলবার কুমিল্লা কারাগারের কনডেম সেলে পাঠানো হয়েছে। অধ্যক্ষ সিরাজসহ বাকি চারজনকে আগামীকাল চট্টগ্রাম ও কুমিল্লা কারাগারে পাঠানো হবে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে ফেনী জেলা কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার মোহাম্মদ রফিকুল কাদের বলেন, আজ ১২ জনকে কুমিল্লায় পাঠানো হয়েছে। বাকি চারজনের মধ্যে কামরুন নাহার মনি ও উম্মে সুলতানা পপিকে চট্টগ্রাম কারাগার এবং অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলা ও রহুল আমীনকে বুধবার বিকেলে কুমিল্লা কারাগারে পাঠানো হবে। বিষয়টি অনুমোদন দিয়েছেন কারা মহাপরিদর্শক (আইজি প্রিজন) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল একেএম মোস্তফা কামাল পাশা।
সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলার ১৩ নভেম্বর আদালতে মামলার দিন ধার্য আছে। এজন্য আদালতের কার্যক্রম শেষে তাকে ওইদিনই কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হবে। এর আগে গত ২৯ অক্টোবর এ মামলার ২ হাজার ৩২৭ পাতার ডেথ রেফারেন্স ( মৃত্যুদণ্ডাদেশ) লাল কাপড়ে মুড়িয়ে উচ্চ আদালতে পাঠানো হয়েছে।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলা, নূর উদ্দিন, শাহাদাত হোসেন শামীম, সোনাগাজী পৌরসভার কাউন্সিলর মাকসুদ আলম, সাইফুর রহমান মোহাম্মদ জোবায়ের, জাবেদ হোসেন ওরফে সাখাওয়াত হোসেন জাবেদ, হাফেজ আব্দুল কাদের, আবছার উদ্দিন, কামরুন নাহার মনি, উম্মে সুলতানা ওরফে পপি, আব্দুর রহিম শরীফ, ইফতেখার উদ্দিন রানা, ইমরান হোসেন ওরফে মামুন, মোহাম্মদ শামীম, মাদরাসার গভর্নিং বডির সহ-সভাপতি রুহুল আমীন ও মহিউদ্দিন শাকিল।
২৪ অক্টোবর আলোচিত নুসরাত হত্যা মামলার ১৬ আসামির সবাইকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের নির্দেশ দেন ফেনীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. মামুনুর রশিদ। আসামিদের প্রত্যেককে এক লাখ টাকা করে জরিমানাও করা হয়।
চলতি বছরের ২৭ মার্চ সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদরাসার আলিম পরীক্ষার্থী নুসরাত জাহান রাফিকে যৌন নিপীড়নের দায়ে মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ৬ এপ্রিল ওই মাদ্রাসা কেন্দ্রের সাইক্লোন শেল্টারের ছাদে নিয়ে অধ্যক্ষের সহযোগীরা নুসরাতের শরীরে আগুন ধরিয়ে দেয়। ১০ এপ্রিল রাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে মারা যান নুসরাত।
ফেনী জেলা কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার মোহাম্মদ রফিকুল কাদের বলেন, যে সকল আসামির দীর্ঘমেয়াদি শাস্তি ও মৃত্যুদণ্ড হয়, সে সকল আসামিদের জেলা কারাগারে না রেখে নিরাপত্তাজনিত কারণে কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানোর জন্য কারাবিধিতে নির্দেশনা রয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের পাঠানো হচ্ছে।
এ ছাড়া কেন্দ্রীয় কারাগারগুলোতে জনবল ও কনডেম সেলের সংখ্যা বেশি। তাদের পরিচালনার জন্য যা যা প্রয়োজন সব সেখানে রয়েছে। ফেনী জেলা কারাগারে ফাঁসির কোনো মঞ্চ নেই, সেখানে সব রয়েছে, যোগ করেন রফিকুল কাদের।