ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবার মন্দভাগের ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনা এবং সর্বশেষ বৃহস্পতিবার দুপুরের দিকে সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় ট্রেন দুর্ঘটনার রেশ না কাটতেই এবার কুমিল্লায় ভয়াবহ দুর্ঘটনার কবল থেকে রক্ষা পেয়েছে চট্টগ্রামগামী চট্টলা এক্সপ্রেস। স্থানীয় দুই কিশোরের সহায়তায় এবং রেলওয়ে গেটম্যানের উপস্থিত বুদ্ধিতে বড় ধরনের একটি দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পেয়েছে ট্রেনটি।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৫টার দিকে কুমিল্লা সদর উপজেলার মুড়াপাড়া লেভেল ক্রসিং গেটে রেলওয়ের ডাবল লাইন প্রজেক্টের একটি বালুভর্তি ডাম ট্রাক বিকল হয়ে পড়ে। এ ঘটনায় কুমিল্লার মুড়াপাড়া রেল ক্রসিংয়ের দুইপাশে আটকা পড়ে চট্টগ্রাম হতে ঢাকা অভিমুখী মহানগর গোধূলী এবং ঢাকা হতে চট্টগ্রাম অভিমুখী সুবর্ণ এক্সপ্রেস। প্রায় দেড় ঘণ্টা রেল যোগাযোগ বন্ধ থাকার পর বিকল ট্রাক সরিয়ে নেয়ার পর রাত ৭টার দিকে পুনরায় রেল চলাচল স্বাভাবিক হয়।
স্থানীয় ও রেলওয়ে সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে রেল সড়কের কুমিল্লা অংশে ডাবল লাইনের মাটি ভরাটের কাজ চলছে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৫টার দিকে মুড়াপাড়া লেভেল ক্রসিং গেটে ডাবল লাইনের প্রজেক্টের মাটিভর্তি ডাম ট্রাক বিকল হয়ে পড়ে।
স্থানীয় সিএনজিচালক সুমন ও অটোরিকশা চালক সুজন বলেন, সন্ধ্যা সাড়ে ৫টায় কুমিল্লার আদর্শ উপজেলার ২ নম্বর উত্তর দুর্গাপুর ইউনিয়নের মুড়াপাড়া রেল ক্রসিং পাড় হওয়ার সময় রেলের ডাবল লাইনের কাজে ব্যবহৃত বালুবাহী একটি ড্রাম ট্রাক রেল রাস্তার ওপর উল্টে যায়। আমরা বিষয়টি দেখে ক্রসিংয়ের গেটম্যান টিপুকে অবহিত করি। তাৎক্ষণিকভাবে গেটম্যান টিপু কুমিল্লা স্টেশনে খবর নিয়ে জানতে পারেন ইতোমধ্যে চট্টগ্রামগামী চট্টলা এক্সপ্রেস রসুলপুর স্টেশন থেকে ছেড়ে এসেছে। গেটম্যান টিপু, কিশোর সুমন ও সুজনকে সঙ্গে নিয়ে অটোরিকশাযোগে আধা কিলোমিটার উত্তরে গোমতী ব্রিজ এলাকায় গিয়ে লাল পতাকা উঠিয়ে চট্টলা এক্সপ্রেস ট্রেনকে থামানোর সংকেত দেন। সংকেত পেয়ে ট্রেনটি ইমার্জেন্সি ব্রেক চেপে দুর্ঘটনার ক্রসিংয়ের একশ গজ দূরে এসে থামে। এতে ট্রেনের যাত্রীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
গেটম্যান টিপু জানান, ঢাকা থেকে চট্টগ্রামগামী চট্টলা এক্সপ্রেস কুমিল্লা স্টেশনের অভিমুখে ছেড়ে আসছিল। ৫টা ৩৪ মিনিটে এ ঘটনা জানতে পেরে দৌড়ে গিয়ে স্থানীয়দের নিয়ে লাল পতাকা দিয়ে ট্রেন থামানোর সংকেত দিলে ইমার্জেন্সি ব্রেক করেন ট্রেনের চালক। দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পায় চট্টলা এক্সপ্রেসের সহস্রাধিক যাত্রী।
ট্রেনের যাত্রী মো. ইসমাইল, রমিজ উদ্দিন, সালেহ আকরাম বলেন, ইমার্জেন্সি ব্রেক করায় আমরা ট্রেনের যাত্রীরা ভয় পেয়ে যাই, কী ঘটেছে তা কেউই জানতাম না, তাই সবার মাঝে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। পড়ে ট্রেন থেকে নেমে স্থানীয়দের নিকট যা শুনলাম তাতে ওই গেইটম্যান ও চালক দায়িত্বশীল পদক্ষেপ না নিলে হয়তো বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারত।