আগামী ১৫ মার্চ থেকে পেঁয়াজ রপ্তানি শুরু করছে ভারত সরকার কিন্তু সেই পেঁয়াজ বাংলাদেশে কী পরিমান আসবে তা এখনও নিশ্চিত নয়। ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানির জন্য সারাদেশ থেকে যে আমদানি সনদ (আইপি) আবেদন করা হয়েছে, তার মধ্যে সাড়ে ৬৮ হাজার টন পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি মিলেছে। নতুন কোন বিধিনিষেধ আরোপ না থাকলে এই পেঁয়াজ ১৫ মার্চ থেকে দেশে আসা শুরু হবে।

জানা গেছে, ভারত সরকার পেঁয়াজ রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেয় গত ২ মার্চ। এর আগে ফেব্রুয়ারিতে যারা ভারত থেকে পেঁয়াজ আনার জন্য আইপি আবেদন করেছেন, তারাই কেবল অনুমোদন পেয়েছেন। মার্চ মাসে যারা আবেদন করেছেন তারা অনুমোদন পাননি। 

পেঁয়াজ আমদানির জন্য প্রথমে আমদানি সনদ (আইপি) নিতে হয় কৃষি বিভাগের উদ্ভিদ সংগনিরোধ দপ্তর থেকে। সেই বিভাগ থেকে অনুমতির পর আমদানি সনদ দিয়ে একজন আমদানিকারক পেঁয়াজ আমদানির জন্য ব্যাংক থেকে ঋণপত্র খুলেন।
 
জানতে চাইলে ঢাকা উদ্ভিদ সংগনিরোধ উইং এর পরিচালক ড. আজহার আলী কালের কণ্ঠকে বলেন, ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি সনদ নিতে অনলাইনে বিপুল আবেদন জমা পড়েছে। তবে ফেব্রুয়ারিতে যারা আবেদন করেছেন কেবল তারাই অনুমোদন পেয়েছেন। এর পরিমান সাড়ে ৬৮ হাজার টন। মার্চ মাসে অনেকে আবেদন করলেও অনুমোদন পাননি। সরকারের নির্দেশনা না পাওয়ায় আমরা নতুন করে আইপি অনুমোদন দিইনি।
 
তিনি বলেন, গত সেপ্টেম্বরে ভারত রপ্তানি বন্ধ করার পর থেকে অনেকেই অন্যদেশ থেকে পেঁয়াজ আনার জন্য আমদানি সনদ নিয়েছেন। এখন ভারত থেকে আনতে হলে নতুন করে আবেদন করতে হবে। আগের আইপি দিয়ে দেশ বদল করে আমদানির সুযোগ নেই। 

আমদানি সনদ অনুমোদন পাওয়ার কথা স্বীকার করে হিলি স্থলবন্দরের পেঁয়াজ আমদানিকারক শহীদুল ইসলাম কালের কণ্ঠকে বলেন, আমি নিজে ১ হাজার ৫০০ টন আমদানির অনুমোদন পেয়েছি। আমি আবেদন করেছিলাম গত ২৬ ফেব্রুয়ারি। নতুন করে আবেদনের অনুমোদন দেওয়া হচ্ছে না। ১৫ মার্চ থেকে ওই পেঁয়াজ আসা দেশে আসা শুরু হবে। 
 
আইপি অনুমোদনের পরও সরকারের পক্ষ থেকে বাতিল করার শঙ্কা আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, এখনও শঙ্কায় আছি। সরকার যদি শেষপর্যন্ত বাতিলও করে তাহলে বাজার আবার অস্থির হয়ে উঠবে। আর সামনে রমজান। 

ব্যবসায়ীরা বলছেন, সত্যি সত্যি ভারতে থেকে পেঁয়াজ দেশে আসা শুরু হয়, তাহলে মায়ানমারসহ অন্য দেশ থেকে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ হয়ে যাবে। এসব দেশের পেঁয়াজ প্রতিযোগিতায় টিকতে না পেরে ভারতীয় পেঁয়াজ একচেটিয়া বাজার নিয়ন্ত্রন করবে আর উত্পাদনের মূল মৌসুমে দেশিয় কৃষকরা ন্যায্যদাম না পেয়ে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। 

উল্লেখ্য, গত ৫ মার্চ চট্টগ্রামে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার উদ্বোধন অনুষ্ঠান শেষে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেছিলেন, দেশিয় পেঁয়াজ চাষীদের স্বার্থ রক্ষা করেই ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি করা হবে। পেঁয়াজ উত্পাদনে কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্ত হবে বা ন্যায্যমূল্য পাবে না এমন কোন সিদ্ধান্ত সরকার নিবে না। কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্ত হলে প্রয়োজনে আমদানির সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসবে সরকার।