দেশে এই প্রথম করোনায় আক্রান্ত এক রোগী মারা গেছেন বলে জানিয়েছে রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর)। এছাড়া নতুন করে আরো চারজন কভিড-১৯ এ আক্রান্ত রোগী পাওয়া গেছে। সবমিলিয়ে দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৪ জনে।

আজ বুধবার রাজধানীর মহাখালীতে স্বাস্থ্য অধিদফতরের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) পরিচালক অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা করোনাভাইরাস-সংক্রান্ত নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান।

আইইডিসিআরের পরিচালক বলেন, ‘আমাদের জন্য একটি দুঃসংবাদ আছে। বাংলাদেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে একজনের মৃত্যু হয়েছে।’

করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তিটি সত্তুরোর্ধ্ব জানিয়ে সেব্রিনা ফ্লোরা বলেন, ‘মারা যাওয়া ওই বৃদ্ধ ব্যক্তি ডায়েবেটিস ও কিডনি সমস্যাসহ নানা রকম শারীরিক সমস্যায় ভুগছিলেন। তাকে আইসিইউতে রাখা হয়েছিল। আজ বুধবার (১৮ মার্চ) তিনি মৃত্যুবরণ করেন।’

নতুন আক্রান্ত চারজন সম্পর্কে তিনি বলেন, নতুন করে আক্রান্তের মধ্যে একজন নারী ও ৩ জন পুরুষ। আক্রান্তদের একজন আগে যারা আক্রান্ত ছিলেন তাদের পরিবারের সদস্য। বাকি তিনজন বিদেশ থেকে এসেছেন। এদের দুজন ইতালি ও একজন কুয়েত থেকে এসেছেন।

তিনি জানান, এখন পর্যন্ত ১৬ জন আইসোলেশনে আছেন এবং আনুষ্ঠানিক কোয়ারান্টাইনে রয়েছেন ৪২ জন।

আগামী সপ্তাহ থেকে আইইডিসিআরের তত্ত্বাবধানে দেশের আরো কয়েক জায়গায় করোনাভাইরাসের পরীক্ষা করা হবে। এছাড়া সংস্থার সেবা সহজ করতে খুব শিগগিরই একটি অ্যাপ চালু করা হবে। একই সঙ্গে ফেসবুক পেজ ও ই-মেইল অ্যাড্রেসও চালু করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন আইইডিসিআরের পরিচালক।

করোনা মোকাবেলায় জনসমাবেশ বন্ধে কড়া নির্দেশনা দিয়েছেন তিনি।

এর আগে গতকাল মঙ্গলবার নতুন করে দুজন করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগী শনাক্তের কথা জানায় আইইডিসিআর। যা নিয়ে সর্বমোট করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ছিল ১০ জন।

বৈশ্বিক মহামারিতে রূপ নেয়া নভেল করোনাভাইরাস বাংলাদেশে শনাক্ত হয়েছে গত ৮ মার্চ। সেদিন তিনজন আক্রান্ত হওয়ার তথ্য জানায় আইইডিসিআর। পরে গতকাল পর্যন্ত মোট ১০ জনের করোনাআক্রান্তের খবর জানা যায়। এদের মধ্যে প্রথম শনাক্ত তিনজন সুস্থ হয়ে উঠেছেন, যাদের দুজন বাড়ি ফিরে গেছেন।

প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে এরই মধ্যে স্কুল-কলেজসহ সবধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করেছে সরকার। ইউরোপসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে ফ্লাইটও বন্ধ করা হয়েছে। এছাড়া নভেল করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে পরিস্থিতি বুঝে কিছু কিছু এলাকা লকডাউন করা হতে পারে বলে জানিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। এছাড়াও প্রয়োজন পড়লে আন্তঃজেলা বাস বাস চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হতে পারে বলেও জানিয়েছেন তিনি। যদিও কোনো এলাকা লকডাউন করার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়নি বলে সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন আইইডিসিআর পরিচালক অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা।