ভারতের বিখ্যাত ফুটবলার প্রদীপ কুমার বন্দ্যোপাধ্যায় (পিকে বন্দোপাধ্যায়) আর নেই। নিউমোনিয়া, পারকিনসন-সহ একাধিক রোগ থাবা বসিয়েছিল শরীরে। গত এক মাসের বেশি সময় ধরে তিনি ভর্তি ছিলেন বাইপাসের ধারের একটি হাসপাতালে। সেই থেকেই তাঁর শারীরিক অবস্থার ওঠানামা চলেছে। আজ শুক্রবার তিনি পাড়ি জমালেন না ফেরার দেশে। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৩ বছর।
সোমবার বিকেলের পর থেকেই তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে থাকে। তাঁর শ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছিল। কোনো ওষুধই কাজ করছিল না। কিডনি সচল রাখার জন্য ডায়ালিসিস চললেও পিকে তা আর নিতে সক্ষম হচ্ছিলেন না। শুক্রবার দুপুর ২টা ৮ মিনিটে শেষ হয়ে গেল তাঁর লড়াই। তাঁর প্রয়াণে দেশটির ফুটবল অঙ্গনে নেমে এসেছে শোকের ছায়া।
পিকে বন্দোপাধ্যায়ের সঙ্গে বাংলাদেশের স্মৃতি জড়িত। ১৯৫৫ সালে ঢাকায় ১৯ বছর বয়সী পিকের ভারতীয় দলের জার্সিতে অভিষেক হয়েছিল। তখনকার পূর্ব পাকিস্তানের মাটিতে পাকিস্তানের বিপক্ষে ওই ম্যাচে ৫ গোল করে চমকে দিয়েছিলেন। ফুটবলার জীবনে বড় ক্লাবের হয়ে কোনোদিন খেলেননি পিকে। ইস্টার্ন রেলের হয়ে খেলেছেন। ১৯৫৮ সালে কলকাতা লিগ জিতেছিল ইস্টার্ন রেল। সেই চ্যাম্পিয়ন দলের সদস্য ছিলেন পিকে। ক্লাব পর্যায়ে যেমন সাফল্য পেয়েছিলেন তিনি, জাতীয় দলের জার্সিতেও তিনি দারুণ সফল।
১৯৫৬ সালের মেলবোর্ন অলিম্পিকে দেশের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করেন। চার বছর পরে রোম অলিম্পিকে খেলেন তিনি। কোচ হিসেবে দারুণ সফল পিকে বন্দোপাধ্যায়। লিগ, ডুরান্ড, শিল্ড-সহ একাধিক ট্রফি জিতেছেন। মাঠে নেমে চিরকাল লড়াই করেছেন তিনি। কোচ হিসেবে অনেককঠিন লড়াই জিতেছেন। জীবনের অন্তিম লড়াইটা আর জেতা হলো না তাঁর। তিনি চলে গেলেও রূপকথা হয়ে থেকে গেল তাঁর বর্ণময় জীবন। বাংলাদেশের মাঠেও রয়ে গেল তাঁর স্মৃতিচিহ্ন।