মাত্র এক মাসের ব্যবধানে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আরেক খুনি রিসালদার মোসলেহ উদ্দিনকে পশ্চিমবঙ্গ থেকে আটকের পর বাংলাদেশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে বলে খবর দিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।

বুধবার ভারতের এই সংবাদমাধ্যম বলছে, শেখ মুজিবুর রহমানের আরেক ঘাতক মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি রিসালদার মোসলেহ উদ্দিনকে বাংলাদেশের কাছে হস্তান্তর করেছে ভারতীয় গোয়েন্দারা।

এর আগে, গত ফেব্রুয়ারিতে বঙ্গবন্ধুর আরেক খুনি মাজেদকে ঢাকার কাছে হস্তান্তর করা হয়। পরে ১২ এপ্রিল বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সাবেক ক্যাপ্টেন আব্দুল মাজেদের (৭৩) মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়।

স্থানীয় সূত্রের বরাত দিয়ে এনডিটিভি বলছে, সোমবার সন্ধ্যায় অজ্ঞাত একটি সীমান্ত সংযোগ দিয়ে রিসালদার মোসলেহ উদ্দিনকে বাংলাদেশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। পলাতক এই আসামি ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে গুলি চালিয়ে হত্যা করেন।

পলাতক এ দুই ঘাতক দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ প্রদেশে বসবাস করে আসছিলেন। গত ফেব্রুয়ারির শেষ দিকে দক্ষিণ কলকাতা থেকে আব্দুল মাজেদকে আটক করা হয়। মাজেদের বাসা থেকে মাত্র ৭০ কিলোমিটার দূরে বনগাঁও এলাকায় থাকতেন খুনি রিসালদার মোসলেহ উদ্দিন।

আব্দুল মাজেদ দক্ষিণ কলকাতায় শিক্ষক হিসাবে প্রাইভেট পড়াতেন। অন্যদিকে, খুনী রিসালদার সেখানে একটি ছোট হারবাল ওষুধের দোকান দিয়েছিলেন। মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের আগে পশ্চিমবঙ্গে খুনী রিসালদারের আত্মগোপনে থাকার তথ্য নিরাপত্তাবাহিনীকে দিয়েছিলেন আব্দুল মাজেদ।

জাতির পিতাকে হত্যার দায়ে ২০০৯ সালে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট এ দুই আসামিসহ আরও বেশ কয়েকজনের মৃত্যুণ্ডের সাজা ঘোষণা দেন। ২০১০ সালে অভিযুক্ত আসামিদের পাঁচজনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়। এখনও এই মামলার আরও চার আসামি পলাতক।

সূত্রের বরাত দিয়ে এনডিটিভি বলছে, রিসালদার মুসলেউদ্দিনকে অত্যন্ত গোপনীয়তার সঙ্গে অভিযান চালিয়ে আটক করে ভারতের শীর্ষ গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা। পশ্চিমবঙ্গে এই অভিযান চালানো হলেও রাজ্য পুলিশও তা জানতো না।

সন্দেহভাজন হিসাবে মুসলেউদ্দিনকে আটক অভিযানের ছবি ও ভিডিও প্রকাশ করে ভারতের গোয়েন্দারা। তখন ছবি এবং ভিডিও নিয়ে প্রচুর সংশয় দেখা দেয়। কারণ কিছু সূত্র সেই সময় জানায়, ছবির ব্যক্তি; যাকে মুসলেউদ্দিন বলে দাবি করা হচ্ছে, তিনি কয়েক বছর আগে মারা গেছেন।

পরে তাকে শনাক্ত করার জন্য উচ্চমাত্রার সফিসটিকেটেড ফেসিয়াল রিকগনিশন প্রযুুক্তি ব্যবহার করে বাংলাদেশ। পলাতক এই খুনীকে মুসলেউদ্দিন হিসাবে শনাক্ত করার পর বাংলাদেশের কাছে তাকে হস্তান্তর করা হয়। তবে বাংলাদেশ এবং ভারত এই খুনীকে আটক এবং হস্তান্তরের ব্যাপারে এখন পর্যন্ত আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো তথ্য জানায়নি।