ইরানকে টপকে মুসলিম দেশগুলোর মধ্যে এখন সবচেয়ে বেশি করোনা রোগী তুরস্কে। এরই মধ্যে দেশটিতে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৯৫ হাজার ৫৯১ জন যা মুসলিম দেশগুলোর মধ্যে সর্বাধিক। মৃত্যু হয়েছে ২ হাজার ২৫৯ জনের। এদিকে করোনার এমন দুঃসময়ে মানবতার অনন্য নজির গড়ে দুস্থ-অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন দেশটির মুসল্লিরা। দানে দানে ভরে উঠেছে মসজিদগুলো।
ইস্তাম্বুলের বিখ্যাত ‘কাকির মসজিদ’ এর প্রবেশপথে রক্ষিত জুতার র্যাকগুলিতে দেখা গেছে সুপারমার্কেটের মতো তাকে তাকে পাস্তা প্যাকেট, তেলের বোতল, বিস্কুট সহ প্রয়োজনীয় সামগ্রীতে সাজানো। তবে সেগুলো বিক্রির জন্য নয়। এগুলো করোনভাইরাস মহামারির কারণে জীবিকা হারানো অভাবগ্রস্থ মানুষের জন্য। সামর্থবান মুসল্লিরা এগুলো মসজিদে এনে রেখেছেন, যাতে মানুষ প্রয়োজন মতো সেখান থেকে সামগ্রী নিতে পারে।
মসজিদের জানালাগুলো খুলে রাখা হয়েছে, যাতে মানুষ সেখান থেকে প্রয়োজনীয় সামগ্রী দান করতে পারে। মুসল্লিদের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে সাধ্যমতো সামগ্রী দান করার জন্য। বিপুল সংখ্যক মানুষ এই আহ্বানে সাঁড়া দিয়েছেন।
করোনার সংক্রমণ ঠেকাতে প্রেসিডেন্ট এরদোগান দেশটির সব মসজিদ বন্ধ করে দিয়েছেন। পরিবর্তে সেগুলো এখন ত্রাণ বিতরণের কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। প্রাদুর্ভাবের ঝুঁকি না কাটা পর্যন্ত মসজিদগুলোতে গণ-প্রার্থনা স্থগিত থাকবে।
কাকির মসজিদটির ইমাম এএফপিকে বলেন, জামাতে নামাজ স্থগিত করার পর আমরা আমাদের প্রয়োজনে মসজিদগুলোকে ব্যবহার করছি। লোকেরা খাবার ও প্রয়োজনীয় সামগ্রী মসজিদের ভেতরে রেখে যাচ্ছেন। আমরা সেগুলো জড়ো করে বাইরের তাকে রাখছি। অভাবগ্রস্থ মানুষ সেখান থেকে প্রয়োজন মত সামগ্রী নিয়ে যাচ্ছে।’
তরুণ ইমাম বলেন,’করোন ভাইরাস মহামারি হওয়ার পরে আমরা আমাদের ভাইবোনদের সাহায্য করার জন্য কী করতে পারি তা নিয়ে চিন্তাভাবনা করেছি। মসজিদে এই গণ-ত্রাণ বিতরণ কর্মসূচী দরিদ্র মানুষকে বেঁচে থাকতে সহায়তা করবে।’
তুরস্কে গত ১০ মার্চ প্রথম একজন করোনা রোগী শনাক্ত হন। এর প্রায় এক মাস পর অর্থাৎ ৮ এপ্রিল আক্রান্ত হন চার হাজার ১১৭ জন। ১১ এপ্রিল শনাক্ত হন ৫ হাজার ১৩৮ জন। এর পর আক্রান্তের সংখ্যা কিছুটা কমলেও প্রায় প্রতিদিনই অন্তত চার হাজার মানুষ নতুন করে আক্রান্ত হচ্ছেন।
করোনার সংক্রমণ ঠেকাতে প্রেসিডেন্ট এরদোগান দেশের ৩১টি প্রদেশের যাতায়াতের নিষোধাজ্ঞা আরো ১৫ দিন বাড়িয়েছেন। দেশটি এরই মধ্যে স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় ও মসজিদ বন্ধ করে দিয়েছে। এই ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব নিয়ন্ত্রণের জন্য অনেক দেশের সাথে বিমান চলাচল বন্ধ করা হয়েছে।
সূত্র- এএফপি।