সাংবাদিক রফিকুল ইসলাম

জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র তৌহিদুল ইসলাম হত্যাকান্ডের একমাত্র ঘাতক আশিকুজ্জামান আশিককে গ্রেফতার করা হয়েছে। সোমবার শহরের আকুয়া বোর্ডঘর এলাকা থেকে ময়মনসিংহ ডিবি পুলিশ গ্রেফতার করে। গ্রেফতারকৃত আশিক পুলিশী জিজ্ঞাসাবাদে ও আদালতে তার অপরাধের দায় স্বিকার করে জবানবন্দি দিয়েছে। হত্যাকান্ডের তিনদিনের মধ্যে পুলিশ একমাত্র ঘাতককে গ্রেফতার করে। পুলিশ সুপার আহমার উজ্জামান এক প্রেস কনফারেন্সে সোমবার এ তথ্য জানান।

কনফারেন্সে পুলিশ সুপার বলেন, ময়মনসিংহ শহরের তিনকোনা পুকুরপাড় এলাকার ভাড়াটিয়া বাসায় জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র তৌহিদুল ইসলাম ১ মে ভোর রাতে অজ্ঞাতনামার হাতে খুন হয়। এ ঘটনায় নিহতের পিতা সাইকুল ইসলাম কোতোয়ালী থানায় মামলা নং-০২ দায়ের করে।
পুলিশ সুপার আরো বলেন, খুনের ঘটনাটি বিভাগীয় শহরে এবং বিশ্ববিদ্যালয় শিার্থী হওয়ায় বিভিন্ন মহলে নানা আলোচনা, শহরবাসির মাঝে নিরাপত্তাবোধ নিয়ে শংকা দেখা দেয়ায় এই হত্যাকান্ডকে অধিক গুরুত্বের সাথে বিবেচনায় নিয়ে আমি (পুলিশ সুপার), অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সদর সার্কেল, কোতোয়ালী ও ডিবির ওসির নেতৃত্বে একটি চৌকুস টিম তদন্ত শুরু করে।
পুলিশ সুপার বলেন, প্রাথমিকভাবে এ হত্যাকান্ডকে চুরি সংক্রান্ত প্রতিয়মান হওয়ায় ডিবি ও থানা পুলিশ যৌথ অভিযানে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় মূল ঘাতক আশিকুজ্জামান আশিককে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারকৃত আশিকের বরাত দিয়ে পুলিশ সুপার আরো বলেন, সে একজন পেশাদার চোর ও মাদক সেবী। হত্যাকান্ডের ২ দিন আগে নিহত তৌহিদের সাথে তার ভাড়াটিয়া বাসার গলি রাস্তার মাথায় রমজান মাসে সিগারেট খাওয়া নিয়ে তর্কবিতর্ক হয়। এ সময় তৌহিদের হাতে থাকা দামি মোবাইল দেখে তার মোবাইলটি যে কোনভাবে লুটে নেয়ার লোভ হয়। তৌহিদ তার ভাড়া বাসায় গেলে আশিক কৌশলে পিছনে পিছনে বাসায় গিয়ে তার রুম দেখে আসে। ঘটনার দিন রাত প্রায় তিনটার দিকে বাসার ছাদ দিয়ে মোবাইল চুরি করতে গেলে তৌহিদ তাকে ধরে ফেলে। এ সময় উভয়ের মধ্যে ধস্তাধস্তি হয়। এক পর্যায়ে পাশে থাকা রড দিয়ে তৌহিদকে উপুর্যপুরি আঘাত করে রক্তাক্ত করে পালিয়ে যায়।
এর আগে ডিরি ওসি শাহ কামাল আকন্দ বলেন, ঘাতক আশিককে গ্রেফতারের পর তার দেখানো মতে হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত রড পার্শ্ববর্তী পুকুর থেকে উদ্ধার করা হয়। আশিককে সোমবার আদালতে পাঠানো হলে সে তার অপরাধের দায় স্বিকার করে জবানবন্দি দিয়েছে। মূলত চুরি করতে গেলে তার সাথে তৌহিদের দস্তাদস্তি শুরু হলে পাশেই থাকা রড দিয়ে আঘাত করে পালিয়ে যায় আশিক। হত্যাকান্ডের তিনদিনের মধ্যে একমাত্র ঘাতককে গ্রেফতার করায় আবারো ময়মনসিংহবাসির কাঝে পুলিশ আস্থা ও ভরসার স্থান করে নিয়েছে। মানুষ শংকাহীনভাবে ইধ সামনে পবিত্র রমজানে চলাচল করতে পারবে বলে শহরবাসি মনে করছেন।
প্রেস কনফারেন্সে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হুমায়ুন কবির, আল আমিন, মোঃ শাহজাহান ও ডিবির ওসি শাহ কামাল আকন্দ উপস্থিত ছিলেন।