ময়মনসিংহের ত্রিশালে দুর্ঘটনায় দুমড়েমুচড়ে যাওয়া বাস।

ট্রাককে ওভারটেক করতে গিয়ে একটি বাসের পেছনের অংশ ভেঙে ঘটনাস্থলেই পাঁচজনসহ সাতজন নিহত হয়েছে। নিহতদের মধ্যে দুই সন্তানকে বাঁচাতে গিয়ে সন্তান ও মা-বাবাসহ চারজন এবং রাকিব (৩৫) নামের আরেক ব্যক্তি ঘটনাস্থলেই মারা যান। পরে আহতদের মধ্যে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে আরো দুজনের মৃত্যু হয়। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আরো ৯ জন।

গতকাল শনিবার ময়মনসিংহের ত্রিশাল উপজেলার চেলেরঘাটে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে। এ ছাড়া কুমিল্লায় বাসচাপায় সিএনজিচালিত অটোরিকশার দুই যাত্রী নিহত হয়েছেন। ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় গত শুক্রবার মোটরসাইকেলের চাপায় এক বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে।

ত্রিশাল (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি জানান, ময়মনসিংহের ফুলপুর উপজেলার হাটপাগলা গ্রামের ফজলুল হক আজমুল (৩২) তাঁর স্ত্রী ফাতেমা (২৫), মেয়ে আজমিনা (৮) ও ছেলে আব্দুল্লাহকে (৬) নিয়ে গ্রামের বাড়ি যাচ্ছিলেন মা-বাবার সঙ্গে দেখা করতে। এ সময় ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের চেলেরঘাটে পেরোয়া শেরপুরগামী বাস দাঁড়িয়ে থাকা পাথরভর্তি একটি ট্রাককে ওভারটেক করতে গেলে এই দুর্ঘটনা ঘটে। দুর্ঘটনায় ফাতেমার কোলে থাকা আব্দুল্লাহ ছিটকে পড়ে গেলে তাকে বাঁচাতে গিয়ে নিজেও পড়ে যান মহাসড়কে। পাশের সিটে থাকা বাবা আজমুলও তাঁর কোলে থাকা আজমিনাকে নিয়ে পড়ে যান রাস্তায়। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় তাঁদের।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, দাঁড়িয়ে থাকা ট্রাকে ধাক্কা লাগার পরই বাসের পেছনের অংশ ভেঙে যায়। বাসচালক গাড়ি না থামানোর কারণে ওই সময় যাত্রীরা ছিটকে পড়ে ও মারা যায়। তবে গাড়ির ভেতরে থাকা যাত্রীরা তেমন আহত হয়নি।

ত্রিশাল থানার পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস সূত্রে জানা যায়, গতকাল দুপুরে শেরপুরগামী বাসটি ওভারটেক করার সময় দাঁড়িয়ে থাকা বালুবাহী ট্রাককে ধাক্কা দিলে ঘটনাস্থলে একই পরিবারের মা-বাবা ও দুই সন্তানসহ পাঁচজন নিহত হয়। এ সময় আহত হয় ১০ জন। আহতদের ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে আরো দুজন মারা যান। ওই পরিবার ছাড়া বাকি নিহত ব্যক্তিরা হলেন একই উপজেলার রাকিব (৩৫) ভালুকার নিশিন্দার হেলেনা (৪০) ও অজ্ঞাতপরিচয় (৫০)।

এদিকে কুমিল্লা সংবাদদাতা জানান, কোম্পানীগঞ্জগামী তিশা পরিবহনের একটি বাসের চাপায় সিএনজিচালিত অটোরিকশার যাত্রী স্বামী-স্ত্রী নিহত হয়েছেন। বুড়িচং উপজেলার ময়নামতীর কাটাজঙ্গল এলাকায় গতকাল রাতে এ ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন সদর উপজেলার রত্নবতী গ্রামের আছমত আলীর ছেলে আবু সাঈদ (৫০) ও তাঁর স্ত্রী রুমি আক্তার (৪৫)।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি জানান, গত শুক্রবার ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর এলাকার ডিসি বাংলো মোড়ে মোটরসাইকেলের চাপায় মো. আব্দুল খালেক (৭০) নামের এক বৃদ্ধ নিহত হয়েছেন। নিহত আব্দুল খালেক কলেজপাড়ার কেরামত আলীর ছেলে। ঘটনায় মোটরসাইকেল আরোহী রনি (১৭) ও ওমর (২১) আহত হন।

বিষয়টি নিশ্চিত করে সদর থানার ওসি মোহাম্মদ এমরানুল ইসলাম জানান, বাড়ি ফেরার পথে মোটরসাইকেলের চাপায় আহত হন খালেক। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। তবে অভিযোগ না থাকায় ময়নাতদন্ত না করে পরিবারের কাছে লাশ হস্তান্তর করা হয়েছে।